ETV Bharat / state

Tribal Village Girls: শান্তিনিকেতনের প্রত্যন্ত গ্রামে প্রথম মাধ্যমিক পাশ, নজির গড়ল চার আদিবাসী কন্যা

প্রদীপের নীচে অন্ধকার কাটিয়ে বিংশ শতাব্দীতে এসে শান্তিনিকেতনের প্রত্যন্ত আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম থেকে এই প্রথম চারজন মেয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ । উন্নয়নের আলো পৌঁছয়নি গ্রামে । মাঠে চাষের কাজ করার ফাঁকেই পড়াশোনা । অন্ধকার ঘুচিয়েছে সেই শিক্ষার আলোই ৷ গ্রামের মেয়েদের এই সাফল্যে আনন্দিত বাসিন্দারা ।

Tribal Village Girls success story
মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ প্রত্যন্ত গ্রামের চার আদিবাসী মেয়ে
author img

By

Published : May 26, 2023, 10:20 AM IST

শান্তিনিকেতনের প্রত্যন্ত গ্রামে প্রথম মাধ্যমিক পাশ

বোলপুর, 25 মে: তাদের জীবনযাত্রা আরও পাঁচটা মেয়েদের মত নয় ৷ রোজ বাবা-মায়ের সঙ্গে যেতে হয় মাঠে ৷ হাতে হাত মিলিয়ে করতে হয় চাষের কাজ ৷ ফলে সেখানে শিক্ষা কেবল বিলাসিতা মাত্র ৷ তবু পায়ে হেঁটে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাওয়াটাই সার ৷ প্রাইভেট টিউশন নেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই ৷ তবে পড়াশুনার ইচ্ছে প্রবল ৷ আর কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় ৷ সেই ইচ্ছের ডানায় ভর করেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এবারে মাধ্যমিকে বসেছিল আদিবাসী অধ্যুষিত শান্তিনিকেতনের প্রত্যন্ত গ্রামের চারটি মেয়ে ৷ পাশ করে নজির গড়েছে তারা ৷ চার ছাত্রীর উত্তীর্ণে খুশি গ্রামবাসীরা ৷

শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেবডাঙ্গা আদিবাসী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত একটি গ্রাম । উন্নয়নের আলো সেভাবে পৌঁছায়নি এই গ্রামে । পাশাপাশি শিক্ষার আলো থেকেও এতকাল বঞ্চিত ছিল গ্রাম ৷ অথচ, শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতির পীঠস্থান হিসাবে পরিচিত শান্তিনিকেতন । কিন্তু, প্রবাদবাক্য আছে 'প্রদীপের তলায় অন্ধকার' । যদিও, এই প্রবাদবাক্যকে উপেক্ষা করে এই প্রথম এই গ্রাম থেকে চারজন মেয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হল ।

বোলপুর পারুলডাঙ্গা শিক্ষানিকেতন আশ্রম বালিকা বিদ্যাপীঠের ছাত্রী বাসন্তি টুডু, লতিকা মুর্মু, মিরু হাঁসদা ৷ তাদের বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব পাঁচ কিলেমিটার ৷ গুসকড়ার পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক স্কুলের ছাত্রী সুমিত্রা টুডু ৷ তার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব 15 কিলেমিটার ৷ সেই পথ রোজ হেঁটে যাত্রা করেছেন তারা ৷ এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এই চারজনই । এর আগে এই গ্রাম থেকে কোনও মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেইনি, উত্তীর্ণ হওয়া তো দূরের কথা ৷ নারী শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে আন্দোলন চলছে বহু দিন ধরেই ৷ সেই আন্দোলনের নজির বলা যায় চার আদিবাসী কন্যার সাফল্যকে ৷

মাধ্যমিক উত্তীর্ণ চার দস্যি মেয়ে জানায়, এর আগে তাদের গ্রামের কোনও মেয়ে সেভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি ৷ কারণ সেখানে পরিকাঠামো নেই, বেহাল যোগাযোগ ব্যবস্থা, নেই পড়াশোনার পরিবেশ । সদ্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই গ্রামটিকে দত্তক নিয়েছে ৷ তাদের তত্ত্বাবধানেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে তারা ৷

সুমিতা টুডু, বাসন্তি টুডু, মেরু হাঁসদা বলে, "এই গ্রামে আগে কোন মেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেনি ৷ কারণ কোনওরকম সুযোগ সুবিধা ছিল না ৷ টিউশন পড়তে পারতাম না । আমাদের গ্রামের অবস্থাও ভালো নয় ৷ সবাই মাঠে কাজ করে ৷ আমরাও ধান পোতার কাজ করি ৷ আমরা পাশ করায় গ্রামের সবাই খুব খুশি । আগামীতে গ্রামের বাকি মেয়েদের বলব তারাও যেন পড়াশোনা করে আরও ভালো ফল করে ।" যে যুবকের উদ্যোগে তাদের এই সাফল্য সেই বুদ্ধিশ্বর মণ্ডল বলেন, "এই গ্রামের উন্নয়ন একেবারেই নেই ৷ প্রত্যন্ত একটি গ্রাম থেকে চারটি মেয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে । আমি ওদের সঙ্গে আছি বহু দিন ধরে ৷ তাদের সাফল্যে খুব খুশি হয়েছি ।"

আরও পড়ুন: পরীক্ষা-শেষে বাবার মুখাগ্নি, উচ্চমাধ্যমিকে 61 শতাংশ পেলেন বোলপুরের মৌসুমী

শান্তিনিকেতনের প্রত্যন্ত গ্রামে প্রথম মাধ্যমিক পাশ

বোলপুর, 25 মে: তাদের জীবনযাত্রা আরও পাঁচটা মেয়েদের মত নয় ৷ রোজ বাবা-মায়ের সঙ্গে যেতে হয় মাঠে ৷ হাতে হাত মিলিয়ে করতে হয় চাষের কাজ ৷ ফলে সেখানে শিক্ষা কেবল বিলাসিতা মাত্র ৷ তবু পায়ে হেঁটে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাওয়াটাই সার ৷ প্রাইভেট টিউশন নেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই ৷ তবে পড়াশুনার ইচ্ছে প্রবল ৷ আর কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় ৷ সেই ইচ্ছের ডানায় ভর করেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এবারে মাধ্যমিকে বসেছিল আদিবাসী অধ্যুষিত শান্তিনিকেতনের প্রত্যন্ত গ্রামের চারটি মেয়ে ৷ পাশ করে নজির গড়েছে তারা ৷ চার ছাত্রীর উত্তীর্ণে খুশি গ্রামবাসীরা ৷

শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেবডাঙ্গা আদিবাসী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত একটি গ্রাম । উন্নয়নের আলো সেভাবে পৌঁছায়নি এই গ্রামে । পাশাপাশি শিক্ষার আলো থেকেও এতকাল বঞ্চিত ছিল গ্রাম ৷ অথচ, শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতির পীঠস্থান হিসাবে পরিচিত শান্তিনিকেতন । কিন্তু, প্রবাদবাক্য আছে 'প্রদীপের তলায় অন্ধকার' । যদিও, এই প্রবাদবাক্যকে উপেক্ষা করে এই প্রথম এই গ্রাম থেকে চারজন মেয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হল ।

বোলপুর পারুলডাঙ্গা শিক্ষানিকেতন আশ্রম বালিকা বিদ্যাপীঠের ছাত্রী বাসন্তি টুডু, লতিকা মুর্মু, মিরু হাঁসদা ৷ তাদের বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব পাঁচ কিলেমিটার ৷ গুসকড়ার পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক স্কুলের ছাত্রী সুমিত্রা টুডু ৷ তার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব 15 কিলেমিটার ৷ সেই পথ রোজ হেঁটে যাত্রা করেছেন তারা ৷ এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এই চারজনই । এর আগে এই গ্রাম থেকে কোনও মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেইনি, উত্তীর্ণ হওয়া তো দূরের কথা ৷ নারী শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে আন্দোলন চলছে বহু দিন ধরেই ৷ সেই আন্দোলনের নজির বলা যায় চার আদিবাসী কন্যার সাফল্যকে ৷

মাধ্যমিক উত্তীর্ণ চার দস্যি মেয়ে জানায়, এর আগে তাদের গ্রামের কোনও মেয়ে সেভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি ৷ কারণ সেখানে পরিকাঠামো নেই, বেহাল যোগাযোগ ব্যবস্থা, নেই পড়াশোনার পরিবেশ । সদ্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই গ্রামটিকে দত্তক নিয়েছে ৷ তাদের তত্ত্বাবধানেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে তারা ৷

সুমিতা টুডু, বাসন্তি টুডু, মেরু হাঁসদা বলে, "এই গ্রামে আগে কোন মেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেনি ৷ কারণ কোনওরকম সুযোগ সুবিধা ছিল না ৷ টিউশন পড়তে পারতাম না । আমাদের গ্রামের অবস্থাও ভালো নয় ৷ সবাই মাঠে কাজ করে ৷ আমরাও ধান পোতার কাজ করি ৷ আমরা পাশ করায় গ্রামের সবাই খুব খুশি । আগামীতে গ্রামের বাকি মেয়েদের বলব তারাও যেন পড়াশোনা করে আরও ভালো ফল করে ।" যে যুবকের উদ্যোগে তাদের এই সাফল্য সেই বুদ্ধিশ্বর মণ্ডল বলেন, "এই গ্রামের উন্নয়ন একেবারেই নেই ৷ প্রত্যন্ত একটি গ্রাম থেকে চারটি মেয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে । আমি ওদের সঙ্গে আছি বহু দিন ধরে ৷ তাদের সাফল্যে খুব খুশি হয়েছি ।"

আরও পড়ুন: পরীক্ষা-শেষে বাবার মুখাগ্নি, উচ্চমাধ্যমিকে 61 শতাংশ পেলেন বোলপুরের মৌসুমী

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.