বোলপুর, 2 মার্চ: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করল ভারতীয় ডাক বিভাগ (Documentary on Amartya Sen made by Indian Post) ৷ উপলক্ষ্য জগদ্বিখ্য়াত ভারত সন্তানের আধার কার্ড তৈরি (Aadhaar Card of Amartya Sen) ! হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন ৷ নোবেলজয়ী, ভারতরত্ন এই মানুষটির এতদিন কোনও আধার কার্ড ছিল না ! সেটি যাতে তৈরি করে দেওয়া হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নব্বই ছুঁয়ে ফেলা এই অর্থনীতিবিদ ৷ তাঁর এই আবেদনের কথা জানানো হয় ডাক বিভাগকে ৷ সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোগী হয় তারা ৷ আধার কার্ড তৈরির যাবতীয় প্রক্রিয়া সারা হয় ৷ প্রবীণ মানুষটিকে যাতে এর জন্য কোথাও দৌড়োদৌড়ি না-করতে হয়, তার জন্য তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়িতেই লটবহর নিয়ে পৌঁছে যান ডাক বিভাগের প্রতিনিধিরা ৷ ছবি তোলা থেকে, আঙুলের ছাপ নেওয়া, সবটাই সারা হয় 'প্রতীচী'র অন্দরে ৷ পুরো প্রক্রিয়াটি ক্য়ামেরাবন্দি করে রাখে ডাক বিভাগ ৷ এবার সেগুলিকে জুড়ে তৈরি করা হয়েছে একটি তথ্যচিত্র ৷ সেই তথ্যচিত্র পোস্ট করা হয়েছে ডাক বিভাগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ৷
সম্প্রতি, অমর্ত্য সেনকে নিয়ে একের পর এক খবর হয়েছে ৷ কিন্তু, সেইসব খবর প্রকাশ বা সম্প্রচারের নেপথ্যের কারণ একজন প্রথিতযশার পক্ষে যথেষ্ট অসম্মানজনক বলেই মনে করে ওয়াকিবহাল মহল ৷ অমর্ত্য ও তাঁর পরিবারকে কার্যত 'দখলদার' বলে দেগে দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ এমনকী, যে মানুষটির জন্য আপামর বাঙালি ও সকল ভারতীয় গর্ববোধ করেন, তাঁর নোবেলপ্রাপ্তি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ! পরবর্তীতে এ নিয়ে অমর্ত্যকে প্রশ্ন করা হলে, তাঁর মুখে দেখা গিয়েছে স্মিত হাসি ! কখনও বিরক্ত হননি তিনি ৷ এই বয়সেও সাংবাদিকদের হাজারো প্রশ্নের ধীরে, সুস্থে উত্তর দিয়েছেন ! অবিচল থেকেছেন কেন্দ্রের প্রধান শাসকদল বিজেপির একাধিক নেতার তীক্ষ্ণ আক্রমণের মুখেও ৷
আরও পড়ুন: অমর্ত্য সেনের নামেই সম্পূর্ণ জমি রেকর্ড করল রাজ্য, বিদেশে যাওয়ার আগে জানালেন নোবেলজয়ী
এহেন অমর্ত্যের আধার কার্ড তৈরি করতে পেরে তাঁরা গর্বিত বলে জানিয়েছেন বীরভূম জেলা ডাক বিভাগের সুপার সুব্রত দত্ত ৷ সংশ্লিষ্ট তথ্যচিত্রে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, "ভারতরত্ন, নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের আধার কার্ড তৈরি করে দিতে হবে ! এই আবেদন পেয়ে আমরা ভাবলাম, এ তো অত্যন্ত সম্মানের বিষয় ! আমাদের কাছে এটা গৌরবের ৷ বলাই বাহুল্য তিনি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ৷ আমরা ওঁর বাড়িতেই সমস্ত পরিকাঠামো নিয়ে গিয়েছিলাম ৷ ডাক বিভাগের স্থানীয় সমস্ত কর্মী ও আধিকারিকের সহযোগিতায় ওঁর আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছে ৷"
আধার কার্ড তৈরি উপলক্ষে গুণী মানুষটিকে দফতরের পক্ষ থেকে উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনাও দেওয়া হয় ৷ একটি পোস্ট কার্ডে নেওয়া হয় তাঁর স্বাক্ষর ৷ সেখানে বাংলায় নিজের নাম লেখেন অমর্ত্য ৷ একদিকে যখন অমর্ত্যকে বেনজির আক্রমণ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, অন্যদিকে, সেই কেন্দ্রেরই অধীনে থাকা ভারতীয় ডাক বিভাগ যেভাবে তাঁকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাল, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷