কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: গরুপাচার কাণ্ডে (Cattle Smuggling Scam) এবার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে পারবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate) ৷ সোমবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট (Delhi Rouse Avenue Court) থেকে এই অনুমতি পেয়েছে ইডি ৷ গত শনিবার এই নিয়ে শুনানি হয়েছিল আদালতে ৷ শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত ৷ সোমবার ইডিকে (ED) অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গরুপাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ৷ গত 11 অগস্ট তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই (CBI) ৷ তার পর তিনি বেশ কয়েকদিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন ৷ এখন তিনি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন ৷ আপাতত তাঁর ঠিকানা আসানসোল সংশোধনাগার ৷
সম্প্রতি বঙ্গ রাজনীতির এই কুশীলবকে জেরা করার অনুমতি ইডিকে দিয়েছিল আদালত ৷ জেরার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে ইডির তরফে জানানো হয় ৷ তাই তাঁর প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের জন্য দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তকারী এই সংস্থা ৷ কিন্তু এর বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi High Court) দ্বারস্থ হন অনুব্রত মণ্ডল ৷ সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্ট মামলার শুনানি রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টেই ফিরিয়ে দেয় ৷
এর পর গত শনিবার ওই আদালতে এই মামলার শুনানি হয় ৷ সেখানে বঙ্গ রাজনীতিতে কেষ্ট নামে সমধিক পরিচিত এই নেতার হয়ে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা রাজনীতিবিদ কপিল সিব্বল ৷ গরুপাচার কাণ্ড নিয়ে বাংলায় তদন্ত হলেও কেন অনুব্রতকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷ অনুব্রতর আইনজীবী সেই সওয়াল করেন বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছিল ৷ পালটা যুক্তি দিয়েছিল ইডিও ৷
সেদিন শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল ৷ সোমবার আদালতের তরফে ইডিকে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট মঞ্জুর করা হয় ৷ আইনজ্ঞদের বক্তব্য, এই নির্দেশের ফলে অনুব্রতকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে আদালতে পেশ করতে আর বাধা আর রইল না ইডির ৷
ইডি সূত্রে খবর, সিবিআই গরুপাচার কাণ্ডের তদন্ত কলকাতা থেকে পরিচালনা করলেও তারা সব মামলা দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে ৷ সেই কারণে ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর এনামুল হক ও অনুব্রতর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকেও দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় ৷ আপাতত তারা দিল্লির তিহাড় জেলে (Tihar Jail) বন্দি ৷
ইডির ওই সূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে গরুপাচার কাণ্ডে কত টাকার লেনদেন হয়েছে ? সেই লেনদেনে প্রভাবশালী কেউ জড়িত আছে কি না, এই নিয়ে তথ্য চান তদন্তকারীরা ৷ দিল্লি নিয়ে গিয়ে অনুব্রতর কাছ থেকে সেই সবই জানা হবে ৷ তাছাড়া এনামুল ও সায়গলের সঙ্গে মুখোমুখি জেরাও করা হতে পারে ৷
তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বীরভূমের রাজনীতিতে বাংলার শাসক দলকে বেকাদায় ফেলে দিল ৷ কারণ, ওই জেলায় এখনও তৃণমূলের ‘শেষ কথা’ অনুব্রত মণ্ডল ৷ দলের অন্যদের বক্তব্যে তা বারবার প্রকাশ পেয়েছে ৷ আসানসোল আদালতে হাজিরা দেওয়ার ফাঁকে অনুগামীদের রাজনৈতিক নির্দেশও অনুব্রত দিয়েছেন বলে খবর ৷ দিল্লি থেকে যা দেওয়া কার্যত অসম্ভব ৷