শান্তিনিকেতন, 12 নভেম্বর : বন্ধ হয়ে গেল কৃষিবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি প্রক্রিয়া ৷ অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণের (Internal Quota) দাবিতে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন পড়ুয়ারা ৷ বিশ্বভারতীর অন্তর্গত কৃষিবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় (Institute of Agricultural Science) পল্লী শিক্ষা ভবন (Palli Siksha Bhavana) ৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্বভারতীর সব বিভাগে অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণের সুবিধে থাকলেও এই বিভাগে স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে তা নেই ৷ তাই অবিলম্বে কাউন্সেলিং বন্ধ করে অভ্যন্তরীণ পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভে প্রদর্শন করছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা । কিন্তু তার ফলে ভর্তি বন্ধ করল বিশ্বভারতী ৷
এদিন বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রছাত্রীরা ৷ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী এক ছাত্রী জানালেন, রাজ্যে কৃষিবিজ্ঞান পড়ানো হয় 3টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ এর মধ্যে একটি বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University), যা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত (Central University) ৷ বিশ্বভারতীর পল্লী শিক্ষা ভবন (Pally Siksha Bhavan, PSB), উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (Uttar Banga Krishi Viswavidyalaya, UBKB) এবং বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (Bidhan Chandra Krishi Viswavidyalaya, BCKB) কৃষিবিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা পড়তে পারেন ৷
আরও পড়ুন : Visva-Bharati University : ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বভারতীর অফলাইন ক্লাস
তাঁর কথায়, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে ইউবিকেবি নিজেদের ছাত্রছাত্রীদের 10% ছাড় দিচ্ছে ৷ অন্যদিকে বিসিকেবি কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নিজেদের ছাত্রছাত্রীদের জন্য 80% কোটা রেখেছে ৷ এর ফলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির প্রতিযোগিতায় বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা পিছিয়ে পড়ছেন ৷’’
তাই পড়ুয়াদের আবেদন, অল ইন্ডিয়া ব়্যাঙ্কিংয়ের (Indian Council of Agricultural Research, ICAR) ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কাউন্সেলিংটা একটু পিছিয়ে দেওয়া হোক ৷ আইসিএআর-এর কাউন্সেলিং ডিসেম্বর, জানুয়ারিতে হতে পারে ৷ এতে কে কোথায় পড়ার সুযোগ পাবে, তা জানতে পারবে পড়ুয়ারা ৷ আরেক ছাত্রী জানান, গতকাল অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা কাউন্সেলিংয়ের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও আজ কাউন্সেলিং চলছে ৷ এর ফলে নিজেদের কেরিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হতে হচ্ছে স্নাতকে 85%, 82%, 87% নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের ৷ তাই বিক্ষোভের পথ বেছে নিতে হয়েছে তাঁদের ৷
কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের আরেক পড়ুয়া জানালেন, সংরক্ষণ চালু না হলে কমপক্ষে 50 জন পড়ুয়া স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে পারবেন না ৷ তিনি বলেন, "বিশ্বভারতীর সব বিভাগে ইন্টারনাল কোটা আছে ৷ কিন্তু আমাদের বিভাগে নেই ৷" কাউন্সেলিং চললে পুরো বিষয়টা পড়ুয়াদের আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে ৷ তাই তাঁর দাবি, "ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বসে এটা নিশ্চিত করা হোক যে, কী ভাবে কৃষিবিজ্ঞান বিভাগে এই ইন্টারনাল কোটা প্রয়োগ করা হবে ৷ তারপর শান্তিপূর্ণ ভাবে কাউন্সেলিং শুরু করুন কর্তৃপক্ষ ৷ কাউন্সেলিং বন্ধ করে আমাদের কোটা চালু করতে হবে, এটাই আমাদের দাবি ।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের কেউ পছন্দের বিষয় পাচ্ছে না ৷ কেউ স্নাতকে একটি বিষয় নিয়ে পড়লে, স্নাতকোত্তর স্তরে অন্য বিষয়ে পড়া তার জন্য অসুবিধাজনক ৷"