বাঁকুড়া, 16 সেপ্টেম্বর: স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে টাকার অনুমোদন না আসায়, নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আশংকাজনক রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে না দেওয়ার অভিযোগ ৷ যার জেরে আজ সকালে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে ৷ বাঁকুড়ার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠল একটি নার্সিংহোম ৷ মৃত রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে ৷ ঘটনায় পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷ যদিও, রোগীর পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷
বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের পুনিশোলের বাসিন্দা বছর 62’র বৃদ্ধা পার্শ্বলা মণ্ডল ৷ গত 10 সেপ্টেম্বর তাঁকে হাড়ের অস্ত্রোপচারের জন্য ভরতি করানো হয়েছিল ৷ সেই অস্ত্রোপচারের পর বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে ৷ সেই সময় তাঁকে আইসিসিইউ-তে দেওয়া হয় ৷ অভিযোগ স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে চিকিৎসা চললেও, নার্সিংহোমের তরফে পরিবারের কাছে নগদ টাকা চাওয়া হয় ৷ এই পরিস্থিতি বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয় ৷
পরিবারে অভিযোগ তাঁরা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন, পার্শ্বলা মণ্ডলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৷ যাতে অন্যত্র চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে পারে ৷ মৃতের ছেলে উসমান আলি মণ্ডলের অভিযোগ স্বাস্থ্য সাথীর টাকার অনুমোদন না আসায়, তাঁদের মাকে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ছাড়তে চায়নি ৷ আর তার পরেই আজ সকালে বৃদ্ধা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ৷ এই ঘটনায় নার্সিংহোমে রোগীর আত্মীয়রা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে ৷
আরও পড়ুন: এসএসকেএম হাসপাতালে বিরল অস্ত্রোপচার, প্রাণ বাঁচল একরত্তির
যদিও, নার্সিংহোমের ম্যানেজার উদ্দালক লাহিড়ীর দাবি, তাঁরা কখনই টাকার জন্য মুমূর্ষু রোগীকে আটকে রাখেননি ৷ এমনকি চিকিৎসকের পারমর্শে রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া সারা হয়ে গিয়েছিল ৷ আজ সকালে রোগীকে ছেড়ে দিতেন তাঁরা ৷ তাহলে কি স্বাস্থ্য সাথীর টাকার অনুমোদন না আসায়, রোগীকে আটকে রাখার অভিযোগ মিথ্যে ? ম্যানেজারের দাবি, কর্তৃপক্ষ রোগীকে আটকে রাখেনি ৷ তারা কেবল স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড হস্তান্তর করতে চাননি ৷ কিন্তু, রোগীর পরিবার স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড ছাড়া রোগীকে অন্যত্র চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে নারাজ ছিল ৷
কিন্তু, কেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড আটকে রাখছিল ? এই নিয়ে কোনও জবাব তিনি দেননি ৷ অন্যদিকে, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে ভরতি হওয়া রোগীর চিকিৎসায় নগদ টাকা চাওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন ম্যানেজার ৷ তাঁর বক্তব্য, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারের থেকে নগদ টাকা চায়নি ৷ তাহলে কী কোনও কর্মী একাজ করেছেন ? যার জবাবে উদ্দালক লাহিড়ী জানান, তিনি বিষয়টি খতিয়ে না দেখে বলতে পারবেন না ৷ এই ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে নার্সিংহোম যেতে হয় ৷