বাঁকুড়া, 30 মার্চ : বাঁকুড়ার বড়জোড়া এলাকায় তৈরি হওয়া কোয়ারান্টাইন কেন্দ্র সম্পর্কে সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে । এর ফলে কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রগুলির ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে মানুষের মনে। কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গোটা দেশজুড়ে চলছে সম্পূর্ণ লকডাউন। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া, নাগরিকরা মেনে চলার চেষ্টা করছেন এই লকডাউন।
প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে। শুধুমাত্র বিদেশ নয়, দেশের ভিন্ন রাজ্য থেকে আসলেও তাঁকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। জেলায় জেলায় সরকারি ভাবে কোয়ারান্টাইন কেন্দ্র তৈরি রাখা হয়েছে। বাঁকুড়া বড়জোড়ায় এমন একটি কোয়ারানটাইন কেন্দ্র খোলা হয়েছে স্থানীয় একটি ITI কলেজে। সোশাল মিডিয়ায় ওই কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রের ছবি দিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে যেভাবে একটি ঘরের ভেতর পরপর 1 মিটার দূরত্বে সন্দেহভাজনদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে তা কতটা বিজ্ঞানসম্মত ?
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে শুরু করে চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞদের মতে 3 ফুট দূরত্বে প্রতি ব্যক্তিকে কোয়ারান্টাইনে রাখা যেতে পারে। জেলার বাকি কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রগুলিতে প্রায়ই এভাবে গড়ে তোলা হয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO-এর তরফে কোয়ারান্টাইনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে প্রতি ব্যক্তিকে একেবারে অন্যদের থেকে আলাদা রাখতে হবে। তাঁদের ব্যবহারের শৌচাগার অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। তাহলে বাস্তব ক্ষেত্রে যা ব্যবস্থা করা হয়েছে তা কতটা বিজ্ঞানসম্মত মানুষের মনে এই বিষয়ে প্রশ্ন জাগছে।
যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি, সাধারণত যাঁরা ভিন রাজ্য বা বিদেশ থেকে এদেশে এসেছেন ৷ তাঁদেরকে রাখা হচ্ছে এইসব কেন্দ্রগুলোতে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এই পর্যবেক্ষণ চলাকালীন যদি কারও মধ্যে কোনওরকম শারীরিক অসুস্থতা লক্ষ্য করা যায় তাহলে তৎক্ষণাৎ আইসোলেশনে পাঠিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হচ্ছে। অর্থাৎ যে সমস্ত মানুষকে কেন্দ্রগুলোতে রাখা হচ্ছে কোনওরকম লক্ষণ ছাড়াই রাখা হচ্ছে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা ধরে পর্যবেক্ষণের জন্য।
এক্ষেত্রেও প্রশ্ন আসছে, COVID-19 এ কেউ আক্রান্ত হলে কোনও লক্ষণ সঙ্গে সঙ্গে না মিলতেও পারে। এই অবস্থায় তিনি যদি কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রে থেকে একই শৌচাগার ব্যবহার করেন এবং 2 মিটার অথবা 1 মিটার দূরত্বে অন্যদের থেকে থাকেন তাহলে কি এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত বলা যায় ?
বাঁকুড়া জেলার 2টি স্বাস্থ্য জেলা বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে মোট 22টি কোয়ারান্টাইন কেন্দ্র রয়েছে যেখানে প্রায় 800 জনকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।