বাঁকুড়া, 23 জানুয়ারি: আট দশক আগে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বাঁকুড়ার জনসভায় একটি কাঠের চেয়ারে বসেছিলেন ৷ সেই চেয়ার আজও পূজিত হচ্ছে সেখানকার কর্মকার পরিবারে ৷
সালটা 1940 । ভারত তখনও পরাধীনতার শিকলে বন্দি । দেশকে অত্যাচারী ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছুটে বেড়াচ্ছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhash Chandra Bose Jayanti 2022)। বাদ পড়েনি লালমাটির বাঁকুড়াও । সে বছর এপ্রিল মাসে ফরওয়ার্ড ব্লকের সাংগঠনিক কাজে বাঁকুড়ায় গিয়েছিলেন নেতাজি । বেশ কয়েকদিন বাঁকুড়ায় থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি ।
28 এপ্রিল গঙ্গাজলঘাঁটি লোকে লোকারণ্য । কারণ বীর সুভাষ আসছেন গঙ্গাজলঘাঁটির জনসভায় (Netaji at Bankura)। মঞ্চে নেতাজির বসার জন্য খনি অঞ্চল থেকে আনা হয়েছিল একটি সোফা । আর সাধারণ নেতাদের জন্য আশপাশের বাড়ি ও দোকান থেকে আনা হয় কিছু কাঠের চেয়ার । মঞ্চে উঠলেন সুভাষ । তাঁর জন্য আনা সোফায় তিনি না-বসে সাধারণ নেতাদের পাশে টেনে নেন একটি কাঠের চেয়ার । সেই কাঠের চেয়ারটি আনা হয়েছিল গঙ্গাজলঘাঁটির দেসুরিয়া গ্রামের চিকিৎসক রামরূপ কর্মকারের দোকান থেকে । সভার শেষে রামরূপ কর্মকার চেয়ারটি মাথায় করে নিয়ে যান তাঁর বাড়িতে । সযত্নে সেই চেয়ারটির স্থান হয় কর্মকার পরিবারের ঠাকুরঘরে (Netaji's chair worshipped)।
আরও পড়ুন: Birth Anniversary of Netaji : ছুটি নয়, বেশি করে কাজ করুন; নেতাজির জন্মদিনে বার্তা সুকান্তের
নেতাজির বাঁকুড়াতে যাওয়ার পর আট দশক অতিক্রান্ত ৷ দেসুরিয়া গ্রামের কর্মকার পরিবার আজও ঈশ্বরের আসনে রেখে পুজো করে চলেছেন নেতাজির ছোঁয়া চেয়ারটিকে । এই কাঠের চেয়ারটিকে পুজো ও যে কোনও শুভ কাজে এর দর্শন কর্মকার পরিবারের একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে । চিকিৎসক রামরূপ কর্মকারের মৃত্যু হলেও তাঁর পরিবার এখনও মেনে চলেছেন সেই রীতি ৷
রামরূপ কর্মকারের ছেলে নিরঞ্জন কর্মকারের বিশ্বাস, "নেতাজি এখনও আছেন । তিনি আবারও আসবেন গঙ্গাজলঘাঁটিতে এবং এই চেয়ারে বসবেন । তাই বাবার নির্দেশ মতো আমরা প্রতিদিন এই চেয়ারটিকে পুজো করি । আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, নেতাজি আবারও আসবেন ।"
আরও পড়ুন: Modi Shah pay tribute to Netaji: নেতাজির 125তম জন্মদিনে পালিত পরাক্রম দিবস, শ্রদ্ধা মোদি-শাহের
কর্মকার পরিবারের পুত্রবধূ শিল্পা কর্মকার জানালেন, "আমি যে দিন প্রথম এই বাড়িতে পুত্রবধূ হিসেবে পা রেখেছিলাম, সে দিন আমার শাশুড়ি মা বাড়ির কূলদেবতার পাশাপাশি চেয়ারটিতে প্রণাম করতে বলেছিলেন । আমরা মনে করি নেতাজি আবারও আসবেন এবং আমাদের এই চেয়ারে বসবেন ।"