বাঁকুড়া, 18 জুন : চরম অমানবিকতার সাক্ষী বাঁকুড়ার খাতড়া শহর। দীর্ঘ দু'বছর ধরে বাড়িতে দু'পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছে খাতড়ার ধারগ্রাম গ্রামের বাসিন্দার বছর ত্রিরিশের মিঠুন দুলে। আর্থিক অনটনের কারণে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই পরিবারের ৷ এ কথা জানতে পেরে প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সাহায্যের (Mithun Dule is living his life in Captivity) ৷
বছর দশেক আগেও মিঠুনের জীবনটা এমন ছিল না। এলাকায় যথেষ্ট 'ভাল ও পরোপকারী' হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। অভাবের সংসারে বেশি দূর পড়াশুনা করতে পারেনি। ফলে জীবন-জীবিকার স্বার্থে পাড়ি দিতে হয়েছিল দিল্লিতে। সেখানে এক ঠিকাদারী সংস্থায় কাজও জুটিয়েছিল। কিন্তু দিল্লিতে থাকাকালীন জ্বরের প্রকোপে জীবনটা এলোমেলো হয়ে যায় তাঁর।
বৃদ্ধ বাবা, মা ধারদেনা করে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন ছেলেকে। প্রথম দিকে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা হলেও অর্থাভাবে এখন তাও বন্ধ। এখন 'অসুস্থ' এই ছেলেকে বাড়িতে লোহার চেন পরিয়ে কাজে যান বৃদ্ধ বাব-মা। মিঠুন দুলের বাবা হলেন জানকী দুলে ৷ মা ভারতী দুলে ৷ এ নিয়ে মা বলেন, "আমাদের নিজস্ব জমি-জায়গা নেই। অন্যের সামান্য জমি ভাগে চাষ করে সংসার চালাই। নিজেরা দু'জন আর অসুস্থ ছেলের দু'বেলা খাবার জোটাতেই যেখানে হিমসিম খেতে হয় ৷" এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসার কথা বিলাসিতা বলেই জানান তাঁরা।
আরও পড়ুন : প্লাস্টিকের দাপটে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প
গ্রামবাসী অজিত কুমার দুলে বলেন, "ওই পরিবারটি অত্যন্ত গরীব। বাবা, মায়েরও যথেষ্ট বয়স হয়েছে। চাইলেও ছেলের চিকিৎসা করাতে পারেন না। এই অবস্থায় মিঠুনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা করা হলে খুব ভাল হয়।" এ বিষয়ে খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনন্দমোহন মাহাতো জানান, বিষয়টি কানে এসেছে। প্রশাসনের তরফে দ্রুত উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে ৷