বাঁকুড়া, 21 অগস্ট: একদিকে পেটের টান আর অন্যদিকে জীবিকা নির্বাহের স্থান । নিরুপায় হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় যাতায়াতের পথ হিসেবে বেছে নিতে হয়েছে গ্রামবাসীদের । বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়েরের বাঁশের এই ব্রিজের একদিকে রয়েছে বাঁকুড়া জেলা এবং অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা । দক্ষিণবঙ্গের এই দুই জেলার মধ্যভাগ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর নদ ৷ এই জেলা দুটির যোগাযোগের শর্টকাট মাধ্যম বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের ব্লকের শিল্যাঘাটই একমাত্র অবলম্বন বেশ কয়েকটি গ্রামের গ্রামবাসীদের ।
এই দামোদর নদীর উপরে দুই জেলার সংযোগ স্থাপন করার জন্য রয়েছে একটি জরাজীর্ণ ভগ্নপ্রায় বাঁশের সাঁকো ৷ এই সাঁকো দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন দুটি জেলার কয়েক হাজার মানুষ পারাপার করে । একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনও সমাধান হয়নি ৷ বিকল্প পথ রয়েছে তবে তাতে প্রায় 40-50 কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয় । বর্ষাকালে দামোদর নদ ফুলে ফেঁপে ওঠে তখন নদী পারাপার করা সম্ভব হয় না ৷ বাধ্য হয়েই তখন 3-4 কিলোমিটার রাস্তা ঘুরপথে 40-50 কিলোমিটার যেতে হয় ৷ এই বিষয়টি বারংবার একাধিক প্রশাসনিক স্তরে জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি ৷
তাই স্থানীয়দের দাবি, সরকার যাতে কংক্রিটের সেতু তৈরি করে তাদের এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করে ৷ বর্ষাকালে নদী ফুলে ফেঁপে উঠলে যাতায়াতে খুব অসুবিধা হয় ৷ শিল্যাঘাটে একটি কংক্রিটের সেতু হলে এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে ।
আরও পড়ুন : বেহাল নদীবাঁধ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে আতঙ্কের প্রহর গুনছে গ্রামবাসী
এদিকে জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকো নিয়ে শাসক বিরোধী তরজা চলে আসছে । বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় বিশ্বাস তৃণমূল কংগ্রেসকে এই নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করে জানান, এই সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত জানেন ৷ অথচ এই সমস্যা সমাধানের কোনওরকম উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না সরকারের তরফে ।
অন্যদিকে, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ব্রিজ তৈরি হয়েছে ৷ এটাও আগামী দিনে খুব দ্রুত তৈরি হবে । তবে বিজেপি সাংসদ কী করছে ? সাংসদ তহবিলের টাকা কোথায় যাচ্ছে ? তিনি মানুষের ভোট নিয়ে জয়লাভ করছে আর মানুষ সমস্যায় পড়ে রয়েছে ।"
পাত্রসায়ের ব্লকের বিডিও নিবিড় মণ্ডল জানান,শিল্যাঘাটে একটি ফেরিঘাট রয়েছে । সেখান দিয়ে মানুষ পারাপার করে । তবে ওই এলাকার মানুষ এখনও পর্যন্ত ব্লক অফিসে লিখিত অভিযোগ জানায়নি ৷ তারা লিখিতভাবে জানালে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে ।
আরও পড়ুন : ভাঙনের জেরে তলিয়ে যেতে পারে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র! আতঙ্কে প্রহর গুনছেন ফলতাবাসী