বাঁকুড়া, 18 সেপ্টেম্বর: ভোজনরসিক বাঙালির শেষ পাতে মিষ্টি চাইই চাই ৷ আর তা যদি হয় জিলিপি তাহলে তো সোনায় সোহাগা ৷ কিন্তু এক দুশো নয়, 3 কিলোর জিলিপি খেয়েছেন কখনও ? না খেলে রসনাতৃপ্তি মেটাতে একবার চেখে দেখতেই পারেন জাম্বো জিলিপি ৷ বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া গ্রামে গেলেই মিলবে এই জিলিপি, যা এখন সুপারহিট ৷ এই জাম্বো জিলিপি নজর কেড়েছে সারা পশ্চিমবঙ্গবাসীর । আর নজর কাড়বে নাই বা কেন ৷ এই জিলিপি যে আর পাঁচটার মতো নয়, আকৃতিতে বিশাল ৷ সর্বনিম্ন 700 থেকে 4 কিলো পর্যন্ত মেলে জাম্বো জিলিপি ৷
কেঞ্জাকুড়ার দোকানগুলিতে এখন সমস্ত মিষ্টান্ন কারিগরেরা এই জিলিপি তৈরি করতে ব্যস্ত । ভাদু পুজো এবং বিশ্বকর্মা পুজোকে কেন্দ্র করে বাংলার ভাদ্র মাসের 27 তারিখ থেকে শুরু করে আশ্বিন মাসের 5 তারিখ পর্যন্ত এই জাম্বো জিলিপি প্রস্তুত করা হয় । বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে এই জিলিপি কেনার জন্য বাঁকুড়া-সহ অন্যান্য জেলা থেকে আগত মানুষদের ঢল নেমে যায় দোকানগুলির সামনে । তবে এই জাম্বো জিলিপি কেবল পশ্চিমবাংলায় নয়, সুপারহিট বিদেশেও ৷ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সুদূর আমেরিকাতেও পাড়ি দিয়েছে জাম্বো জিলিপি । মিষ্টান্ন কারিগর ফটিক রায় বলেন, "এই জিলিপি পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন রাজ্যে তো যায়ই ৷ তবে আমেরিকাতেও যাচ্ছে আমাদের জিলিপি ।"
স্বাধীনতার সময় থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই জিলিপি তৈরি করছেন কেঞ্জাকুড়া গ্রামের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা । তবে এই বছর তাদের শিল্পে অনেকটাই ভাঁটা পড়েছে ৷ আগের মতোন জিলিপির চাহিদা বাজারে আর নেই । বাইরের বাজারে সেভাবে আর বরাত মেলে না । এর কারণ অর্থনৈতিক বাজারে মন্দা এবং কৃষিকাজ ঠিকঠাক না হওয়া । মিষ্টি ব্যবসায়ী নিতাই দত্ত বলেন, "ভাদু ও বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে এই জিলিপি তৈরি হয় ৷ 150 টাকা কিলো বিক্রি করি আমরা জাম্বো জিলিপি ৷ তিন কিলোর উপরে জিলিপি হয় ৷ তবে লোকাল বাজারের খারাপ অবস্থার জন্য জিলিপির চাহিদা কম ৷"
আরও পড়ুন: গণেশের থালায় থাকুক বাপ্পার প্রিয় লাড্ডু ! বাড়িতেই সহজে বানিয়ে নিন
কথিত আছে দশম শতকের শুরুতে 'কিতাব ঊল তারিখ' নামে একটি পারসিক বইয়ে উল্লেখ পাওয়া যায় একটি বিশেষ পদের নাম ৷ যেটি হল 'জুলবিয়া', তা পরবর্তীতে ভারতে এসে জিলিপি নাম নেয় ৷ যেটি বর্তমানে শুধু বাংলাবাসী নয়, সারা ভারতীয়দের মিষ্টান্নের ইতিহাসে অন্যতম প্রিয় সংযোজন হয়ে দাঁড়িয়েছে ।