বাঁকুড়া, 27 নভেম্বর : এবার জঙ্গলমহলে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করলেন এক আদিবাসী যুবক (Bengal Dragon Fruit Cultivation) ৷ সেইসঙ্গে বিকল্প আয়ের পথও খুলে দিলেন জঙ্গলমহলবাসীর কাছে ৷ দিলীপ টুডু নামে ওই যুবক সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেছিলেন তিনি ৷ এখন তাঁর সেই প্রচেষ্টা সফল হয়েছে ৷
প্রথাগত চাষবাসের মধ্যে দিয়ে সেভাবে আয় করতে পারছিলেন না বাঁকুড়ার রাইপুরের সামারপচা গ্রামে দিলীপ টুডু ৷ তাই ব্রয়লার ফার্ম শুরু করেছিলেন ৷ কিন্তু, সেখানেও তেমন লাভের মুখ দেখেননি তিনি ৷ সেই সময় ড্রাগন ফলের চাষের বিষয়ে শুনেছিলেন ৷ জানতে পারেন এই ফলের চাষে লাভ অনেক বেশি ৷ ফলে ড্রাগন ফল চাষের সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷ কিন্তু, কীভাব চাষ করতে হয় ? তা জানতেন না দিলীপ ৷ তাই সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ড্রাগন ফলের চাষ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন ৷ এর জন্য একবিঘা জমিও কেনেন তিনি ৷
এর পর চারা কেনার জন্য কলকাতার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করেন দিলীপ টুডু ৷ সেখান থেকে চারাগাছ কিনে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন তিনি ৷ দিলীপ টুডু জানান, এক বিঘা জমিতে ড্রাগন গাছের চারা, সার, মজুরি এবং গাছের জন্য প্রয়োজনীয় খুঁটি নিয়ে প্রায় 3 লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে তাঁর ৷ চাষ শুরুর প্রায় দেড় বছর পর ফল উঠতে শুরু করে ৷ ড্রাগন ফল চাষের নিয়ম অনুযায়ী, বছরে 5 বার ফল তোলা যায় ৷ এই মুহূর্তে দিলীপ টুডু তাঁর জমি থেকে একবারই 1 কুইন্টাল ড্রাগন ফল তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন ৷ তিনি জানান, একবার ফল বিক্রি করে তাঁর হাতে 20 হাজার টাকার মতো এসেছে (Dragon Fruit Cultivation is Profitable) ৷
আরও পড়ুন : রয়েছে আর্থিক মুনাফা, ড্রাগন ফলে ঝুঁকছেন ভারতের কৃষকরা
তবে, জঙ্গলমহল এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে ড্রাগন ফলের চাহিদা কম থাকায় সেভাবে বাজার থেকে দাম পাচ্ছেন না বলে জানান দিলীপ ৷ তিনি বলেন, ‘‘চাহিদা না থাকায় ব্যবসায়ীরা 200 থেকে 220 টাকা প্রতি কেজির বেশি দাম দিতে চাইছেন না ৷’’ তবে, আগামী দিনে এই ফলের চাহিদা বাড়বে বলে মত তাঁর ৷ দিলীপ টুডু জানিয়েছেন, গাছ যত বড় হবে, তত ফলন বাড়বে ৷ ফলে ভবিষ্যতে ফলনের সঙ্গে তাঁর আয়ও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি ৷ এমনকি ড্রাগন ফলের জমির ফাঁকা অংশে তিনি অন্যান্য সবজি চাষও করতে পারবেন বলে জানান ৷ এতে বাড়তি আয়ের একটা রাস্তা তাঁর কাছে খুলে গিয়েছে (Dragon Fruit Cultivation Profitable for Bengal Farmers) ৷