বাঁকুড়া, 17 জুলাই : করোনার টিকা নিয়ে বাড়ল ঝক্কি ৷ বাড়ল দুশ্চিন্তা ৷ এক মহিলাকে মাত্র কিছুক্ষণের ব্যবধানে কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজ দেওয়ার অভিযোগ উঠল সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের পখন্না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৷ আর তারপর থেকেই আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন মন্দিরা পাল নামে ওই গৃহবধূর ৷ টিকার ওভারডোজে শরীরে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে না তো ? এই চিন্তায় ঘুম উড়েছে পাল পরিবারের বাকি সদস্যদেরও ৷
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরা পাল প্রান্তিক কৃষক পরিবারের বধূ ৷ বাড়ি বাঁকুড়ার রাজমাধপুর গ্রামে ৷ সম্প্রতি, এলাকার আশাকর্মীদের মারফত তিনি জানতে পারেন, 6 থেকে 12 বছর বয়সী শিশুদের মায়েদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়া হবে ৷ এই খবর পেয়েই টিকা নিতে পখন্না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হন মন্দিরা ৷ সেখানে আধারকার্ড দেখিয়ে টিকাকরণের জন্য নাম নথিভুক্ত করান তিনি ৷
আরও পড়ুন : এক ব্যক্তিকে দু’বার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ, চাঞ্চল্য শিলিগুড়িতে
মন্দিরা জানিয়েছেন, নাম নথিভুক্ত করার পর তাঁর বাঁ হাতে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ দেন এক স্বাস্থ্যকর্মী ৷ এরপর নিয়ম অনুযায়ী মন্দিরা পালকে কিছুক্ষণ বসতে বলেন ওই তিনি ৷ অভিযোগ, এর কিছুক্ষণ পরই ফিরে আসেন ওই স্বাস্থ্যকর্মী ৷ ফের একবার মন্দিরার বাঁ হাতে কোভিশিল্ডের ইনজেকশন দেন তিনি !
মন্দিরা এর কোনও প্রতিবাদ করেননি ৷ কারণ, টিকার লাইনে দাঁড়িয়ে অন্যদের মুখে তিনি শুনেছিলেন টিকার জন্য দু’টি ইনজেকশন নিতে হবে ৷ কিন্তু সেই দু’টি ডোজ নেওয়ার নিয়ম তাঁর জানা ছিল না ৷ কিন্তু পরে বাকিদের সঙ্গে কথা বলে মন্দিরা বুঝতে পারেন, তার সঙ্গে যেটা করা হয়েছে, সেটা সঠিক নিয়ম নয় ৷ এরপরই ওই স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে মন্দিরা জানতে চান, কেন তাঁকে দু’বার ইনজেকশন দেওয়া হল ?
এর জেরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ৷ প্রায় দেড়-দু’ঘণ্টা মন্দিরাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসিয়ে রাখা হয় ৷ তাঁর রক্তচাপ পরীক্ষা করে দেখা হয় ৷ তারপর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ মন্দিরার দাবি, টিকা নেওয়ার পর শারীরিক কোনও অসুবিধা তাঁর হচ্ছে না ৷ তবে গোটা ঘটনায় ভীত পাল পরিবার ৷
আরও পড়ুন : Covid Vaccination : দেবাঞ্জনের শিকার 735 জনকে আসল টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু
ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ মেনে নিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্য়ায় ৷ বিষয়টি জানার পর মন্দিরার স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি ৷ দিয়েছেন যেকোনও প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস ৷ বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, এই ধরনের গাফিলতি কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না ৷ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি ৷ চিন্তার বিষয় হল, গাফিলতির নজির এটাই প্রথম নয় ৷ এর আগে শিলিগুড়িতেও একই ঘটনা ঘটেছে ৷