ETV Bharat / state

Diwali 2021: 108 নরমুণ্ড উৎসর্গ করে পুজো, দীপাবলির রাতে আজও জেগে ওঠে বিষ্ণুপুর শ্মশান - Priests

আদি গঙ্গার পাড়ে কয়েকশো বছরের প্রাচীন মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান । আজ থেকে শত শত বছর আগে দলে দলে এখানে ভিড় করতেন তান্ত্রিক এবং সাধকরা। চলত শাবসাধনাও । এমনকি নরমুণ্ড নিবেদন করে দেবীর উপাসনার কথাও শোনা যায় ।

Bishnupur Shmashana remains a mystic place still today after 110 years from the foundation of Kali temple
কালীপুজোয় আজও জেগে ওঠে বিষ্ণুপুর শ্মশান
author img

By

Published : Oct 28, 2021, 8:25 PM IST

Updated : Oct 31, 2021, 8:04 PM IST

বিষ্ণুপুর, 28 অক্টোবর: লালমাটির বাঁকে বাঁকে আজও জীবন্ত ইতিহাস । পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীনত্বের শিকড় । কিন্তু আদি গঙ্গার পাড়ে অদ্ভূত এক আলো-আবছায়ার মিশেল, যা দীপাবলির রাতে যা জাগিয়ে রাখে গোটা বিষ্ণুপুরকে । তন্ত্রসাধনা, শবসাধনা, সময়ের ঘষা লেগে সেসব কল্পকথা হয়ে গেলেও, এই একটি রাতই আজও সাবেকিয়ানার সঙ্গে বেঁধে রেখেছে এলাকার মানুষকে ।

আদি গঙ্গার পাড়ে কয়েকশো বছরের প্রাচীন মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান । আজ থেকে শত শত বছর আগে দলে দলে এখানে ভিড় করতেন তান্ত্রিক এবং সাধকরা। চলত শাবসাধনাও। এমনকি নরমুণ্ড নিবেদন করে দেবীর উপাসনার কথাও শোনা যায় । এখন সে সবের চল না থাকলেও, কালীপুজোর রাতে আজও বিষ্ণুপুর শ্মশানে ঢুকলে গা ছমছমে করে, অস্বস্তি বোধ করেন অনেকেই ।

আরও পড়ুন: KMC : কালীপুজো ও ছটের প্রস্তুতি শুরু কলকাতা পৌরনিগমে

আজ থেকে প্রায় 300 বছর আগে এই শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলে, টালির চালের মন্দির বানিয়ে কালীপুজো শুরু করেছিলেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী । কথিত রয়েছে, তন্ত্রসাধনায় দীক্ষিত হয়ে এই শ্মশানে সাধনা শুরু করেন ব্রাহ্মণ যুবক মণিলাল । স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীর পুজো আরাধনা শুরু করেন । তখন বছরে একবারই পুজো হতো । পরে স্বপ্নে দেবী নিত্যপুজোর ইচ্ছা প্রকাশ করলে, গড়ে তোলা হয় মন্দির । দেবীমূর্তির পিছনে বসানো হয় 108 নরমুণ্ড । সামনে রাখা হয় পঞ্চমুণ্ড আসন ।

দেবীর উদ্দেশে ওই 108টি নরমুণ্ড উৎসর্গ করে কালীর উপাসনা করতেন মণিলাল । সেই থেকে বিষ্ণুপুর শ্মশানে পূজিত হয়ে আসছেন করুণাময়ী কালী । শ্যামাকালী পুজোর দিন আজও হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করেন । তবে আজও তন্ত্রমতে দেবীর পুজো হলেও, বিষ্ণুপুর শ্মশানে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ বলি । বরং কালীপুজোর দিন মদ, কাঁচা মাংস এবং ছোলা নিবেদন করায় হয় ডাকিনী-যোগিনীর উদ্দেশে । থাকে শিয়াল ভোগও । তবে স্থানীয়দের বিশ্বাস, কালীপুজোর রাতে আজও শ্মশান জাগানোর খেলায় মেতে ওঠেন সেবায়েতরা ।

108 নরমুণ্ড উৎসর্গ করে পুজো, দীপাবলির রাতে আজও জেগে ওঠে বিষ্ণুপুর শ্মশান

মণিলাল মারা গিয়েছেন অনেক আগেই । তাঁর মৃত্যুর পর ভাই ফণীভূষণ চক্রবর্তী সেবায়েত নিযুক্ত হন । এখন মণিলালের ছেলে শ্যামল চক্রবর্তী মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্বে । সত্তরোর্ধ্ব শ্যামলবাবুই প্রধান সেবায়েত । তিনি বলেন, ‘‘বাবার মৃত্যুর পর কাকা ফণীভূষণ চক্রবর্তীর কাছে তন্ত্রের শিক্ষা নিতে থাকি । তাঁর হাত ধরেই গুপ্তবিদ্যা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু । পরে করুণীময়ী মন্দিরে নিত্য পুজ শুরু করি ।’’

আরও পড়ুন: Weather Forecast : বৃষ্টি পিছু ছাড়ছে না বঙ্গের, আগামী 24 ঘণ্টায় ভিজতে পারে উপকূলের জেলাগুলি

কালীপুজোর আগে এই মুহূর্তে তুমুল ব্যস্ততা তাঁদের । দালানে নতুন রংয়ের প্রলেপ পড়ে গিয়েছে । ঝাড়পোছ করে সাজানো হচ্ছে নরমুণ্ডগুলি । তার উপর করোনায় কাজের চাপ আরও বেড়ে গিয়েছে । স্বাস্থ্যবিধির দিকেও নজর দিতে হচ্ছে । এক সঙ্গে 5 জনের বেশি মানুষ মন্দিরে ঢুকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি, মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ।

বিষ্ণুপুর, 28 অক্টোবর: লালমাটির বাঁকে বাঁকে আজও জীবন্ত ইতিহাস । পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীনত্বের শিকড় । কিন্তু আদি গঙ্গার পাড়ে অদ্ভূত এক আলো-আবছায়ার মিশেল, যা দীপাবলির রাতে যা জাগিয়ে রাখে গোটা বিষ্ণুপুরকে । তন্ত্রসাধনা, শবসাধনা, সময়ের ঘষা লেগে সেসব কল্পকথা হয়ে গেলেও, এই একটি রাতই আজও সাবেকিয়ানার সঙ্গে বেঁধে রেখেছে এলাকার মানুষকে ।

আদি গঙ্গার পাড়ে কয়েকশো বছরের প্রাচীন মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান । আজ থেকে শত শত বছর আগে দলে দলে এখানে ভিড় করতেন তান্ত্রিক এবং সাধকরা। চলত শাবসাধনাও। এমনকি নরমুণ্ড নিবেদন করে দেবীর উপাসনার কথাও শোনা যায় । এখন সে সবের চল না থাকলেও, কালীপুজোর রাতে আজও বিষ্ণুপুর শ্মশানে ঢুকলে গা ছমছমে করে, অস্বস্তি বোধ করেন অনেকেই ।

আরও পড়ুন: KMC : কালীপুজো ও ছটের প্রস্তুতি শুরু কলকাতা পৌরনিগমে

আজ থেকে প্রায় 300 বছর আগে এই শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলে, টালির চালের মন্দির বানিয়ে কালীপুজো শুরু করেছিলেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী । কথিত রয়েছে, তন্ত্রসাধনায় দীক্ষিত হয়ে এই শ্মশানে সাধনা শুরু করেন ব্রাহ্মণ যুবক মণিলাল । স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীর পুজো আরাধনা শুরু করেন । তখন বছরে একবারই পুজো হতো । পরে স্বপ্নে দেবী নিত্যপুজোর ইচ্ছা প্রকাশ করলে, গড়ে তোলা হয় মন্দির । দেবীমূর্তির পিছনে বসানো হয় 108 নরমুণ্ড । সামনে রাখা হয় পঞ্চমুণ্ড আসন ।

দেবীর উদ্দেশে ওই 108টি নরমুণ্ড উৎসর্গ করে কালীর উপাসনা করতেন মণিলাল । সেই থেকে বিষ্ণুপুর শ্মশানে পূজিত হয়ে আসছেন করুণাময়ী কালী । শ্যামাকালী পুজোর দিন আজও হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করেন । তবে আজও তন্ত্রমতে দেবীর পুজো হলেও, বিষ্ণুপুর শ্মশানে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ বলি । বরং কালীপুজোর দিন মদ, কাঁচা মাংস এবং ছোলা নিবেদন করায় হয় ডাকিনী-যোগিনীর উদ্দেশে । থাকে শিয়াল ভোগও । তবে স্থানীয়দের বিশ্বাস, কালীপুজোর রাতে আজও শ্মশান জাগানোর খেলায় মেতে ওঠেন সেবায়েতরা ।

108 নরমুণ্ড উৎসর্গ করে পুজো, দীপাবলির রাতে আজও জেগে ওঠে বিষ্ণুপুর শ্মশান

মণিলাল মারা গিয়েছেন অনেক আগেই । তাঁর মৃত্যুর পর ভাই ফণীভূষণ চক্রবর্তী সেবায়েত নিযুক্ত হন । এখন মণিলালের ছেলে শ্যামল চক্রবর্তী মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্বে । সত্তরোর্ধ্ব শ্যামলবাবুই প্রধান সেবায়েত । তিনি বলেন, ‘‘বাবার মৃত্যুর পর কাকা ফণীভূষণ চক্রবর্তীর কাছে তন্ত্রের শিক্ষা নিতে থাকি । তাঁর হাত ধরেই গুপ্তবিদ্যা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু । পরে করুণীময়ী মন্দিরে নিত্য পুজ শুরু করি ।’’

আরও পড়ুন: Weather Forecast : বৃষ্টি পিছু ছাড়ছে না বঙ্গের, আগামী 24 ঘণ্টায় ভিজতে পারে উপকূলের জেলাগুলি

কালীপুজোর আগে এই মুহূর্তে তুমুল ব্যস্ততা তাঁদের । দালানে নতুন রংয়ের প্রলেপ পড়ে গিয়েছে । ঝাড়পোছ করে সাজানো হচ্ছে নরমুণ্ডগুলি । তার উপর করোনায় কাজের চাপ আরও বেড়ে গিয়েছে । স্বাস্থ্যবিধির দিকেও নজর দিতে হচ্ছে । এক সঙ্গে 5 জনের বেশি মানুষ মন্দিরে ঢুকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি, মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ।

Last Updated : Oct 31, 2021, 8:04 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.