বাঁকুড়া, 12 মার্চ : আগামী মরশুমে মালদাকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত বাঁকুড়া । জেলার প্রায় 2500 হেক্টর জমিতে আমগাছের মুকুলের পরিচর্যায় নেমেছেন চাষিরা ৷
বাঁকুড়ার মাটি মূলত রুক্ষসূক্ষ্ম এবং কাঁকুরে । এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে বছরে একবার শুধুমাত্র বর্ষার জলে চাষবাস কিছুটা হয়ে থাকে । তবে গত কয়েক বছর ধরে কার্যত আম চাষের মাধ্যমে "সবুজ বিপ্লব" ঘটেছে বাঁকুড়ার এই রুক্ষ মাটিতে। জেলার প্রায় 2500 হেক্টর জমিতে আম বাগান তৈরি হয়েছে গত কয়েক বছর ধরে । ফলনও বেশ ভালোই হচ্ছে এই সমস্ত বাগানে । ব্যাপকভাবে মুকুল এসেছে বাঁকুড়ার আম বাগানগুলিতে । যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তার যদি 3 শতাংশও রক্ষা করা সম্ভব হয় তাহলে আগামী মরশুমে 20 হাজার মেট্রিকটন আম উৎপাদন হতে চলেছে এই জেলায়, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা । তবে পচন রোগও দেখা দিয়েছে ইতিমধ্যেই ।
এই পরিস্থিতিতে জৈবিক পদ্ধতি অবলম্বন করে পচন রোগ সামাল দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে বিভিন্ন বাগানে । গতবছর বাঁকুড়া জেলায় 18 হাজার মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়েছিল । মোট উৎপাদিত আমের প্রায় 70 শতাংশ আম্রপালি প্রজাতির । এই আম ভীষণভাবে সুস্বাদু এবং এর ছাল খুবই পাতলা হওয়ায় এর বাজারে চাহিদাও বেশ ভালো । এছাড়াও কিছু পরিমাণ মল্লিকা প্রজাতির এবং ল্যাংড়া প্রজাতির আমও উৎপাদন হয়ে থাকে এই জেলায় । বিন্দু সেচের মাধ্যমে এখানে বিঘা প্রতি 5 মেট্রিকটন পর্যন্ত আম উৎপাদন করা হয়ে থাকে । শুধু তাই নয়, এই জেলা থেকে গত কয়েক বছর ধরে আম রপ্তানি পর্যন্ত করা হয় প্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে । 200 গ্রাম থেকে 220 গ্রাম ওজনের আম রপ্তানি করা হয় বিদেশে । গতবছর প্রায় 18 মেট্রিকটন আম শুধুমাত্র পাঠানো হয়েছে সৌদি আরবে । আম বাগানগুলিতে গোটা বছর রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচর্যার জন্য বেশকিছু কর্মসংস্থানও হয়েছে । জুলাই মাসে আরও কয়েক জায়গায় অনুর্বর জমিতে এভাবে আম চাষ করতে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে উদ্যান পালন দপ্তরের মাধ্যমে ।