বাঁকুড়া, 22 ফেব্রুয়ারি: মারণভাইরাসে এমনিতেই প্রাণ ওষ্ঠাগত। এ বার নয়া চিন্তা বাড়াচ্ছে ক্যানাইন পারভোভাইরাস। এর মারাত্মক প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে বাংলায়। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে গত তিনদিনে মৃত্যু হয়েছে 250-রও বেশি কুকুরের। তাদের মধ্যে অধিকাংশই বাচ্চা।
জানা গিয়েছে, এই ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক। খুব দ্রুত এটি একটি কুকুরের থেকে অপর কুকুরের শরীরে ঢুকে পড়তে পারে। পশু বিশেষজ্ঞদের ধারণা পারভোভাইরাসের বাড়বাড়ন্তের পেছনেও রয়েছে কোরোনাভাইরাস। অতিমারির কারণে অনেকেই তার পোষ্যকে যথাসময়ে টিকা দেওয়া এড়িয়ে যাচ্ছেন। পশু চিকিত্সক ডা. সুভাষ সরকারের মতে, ''অতিমারির কারণে অনেক কুকুরের টিকাকরণ হচ্ছে না। এ বছর সময়মতো টিকাকরণ না-হওয়াতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও টিকাকরণের জন্য পশু চিকিত্সক ঠিকমতো পাওয়া না-যাওয়াটাও এই রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ।'' তবে এই রোগ কলকাতায় নতুন নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। রাস্তার কুকুরদের যেহেতু টিকা দেওয়া হয় না, তাই এই রোগ আরও বেড়ে চলেছে। একটি সিরাম রয়েছে যা পারভোভাইরাস সংক্রমণে কার্যকরী। তবে তা যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ।
অপর পশু সার্জেন গৌতম মুখোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, মরসুম বদলের সময় এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে। তিনি জানিয়েছেন, ''পারভোর টিকাকরণ হলে কুকুরদের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা কমে। যদি কোনও কুকুরের খেতে না-চাওয়া, অত্যধিক বমি, ডায়েরিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে স্যালাইন দিতে হবে। বমি বন্ধ হলে পারভো কেয়ার নামে ওষুধটি অ্য়ান্টিবায়োটিক সহযোগে খাওয়াতে হবে।'' মানবদেহে কলেরা হলে যে উপসর্গগুলি হয়, ঠিক সেগুলিই হয়ে থাকে পারভোভাইরাস সংক্রমণে। টিকাকরণের পর কুকুরদের দু সপ্তাহ বাড়িতেই রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: আস্থা ভোটে হার ! পুদুচেরিতে পড়ে গেল কংগ্রেস সরকার
পারভোভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পোষ্যদের রক্ষা করতে তত্পর কুকুরের মালিকেরাও। স্বপ্নিল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এমনই একজন বললেন, ''আমার পোষ্য মাফিনকে পারভোভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। লকডাউন সত্ত্বেও ওকে সঠিক সময়ে টিকা দেওয়া হয়েছে। আমরা সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছি।''
তবে এই ভাইরাস কোনওভাবেই মানব শরীরে সংক্রামিত হতে পারে না বলে আশ্বস্ত করেছেন চিকিত্সকরা।