আলিপুরদুয়ার, 14 জানুয়ারি : নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত নয়। তবে ফালাকাটা বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে ঘর গোছাতে শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস । সোমবার বিকেলে স্থানীয় কমিউনিটি হলে দলীয় কর্মীসভায় হাজির ছিলেন আলিপুরদুয়ারের দলীয় পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক, সহ পর্যবেক্ষক পূর্ণেন্দু বসু ও আলিপুরদুয়ার বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই রাজনৈতিক কর্মশালায় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন তিন মন্ত্রী । মলয় ঘটক ও পূর্ণেন্দু বসু দলের রীতিনীতি আলোচনা করেন । আর কর্মীদের ভুলভ্রান্তি ও খামতি তুলে ধরেন রাজীব বন্দোপাধ্যায় । কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "পার্টি অফিসের চার দেওয়ালে বসে ভোট অঙ্কের কাটাকুটি চালালেই নির্বাচনে জেতা যায় না ।" মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানোর কাজ করতে নির্দেশ দেন ।
যারা দলকে সামনে রেখে রোজগারের পথে নেমেছে তাদের সতর্ক করেন রাজীব । বলেন, "দয়া করে তাঁরা অন্তরালে চলে যান। পারলে নিজেদের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নিন।" নেতার ওই আক্রমণাত্মক বক্তব্য শুনে সভায় উপস্থিত সাধারণ দলীয় সমর্থকদের মধ্য থেকে হাততালির ঝড় ওঠে।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ঘরে বসে রাজনীতির দিন আর নেই। আগামী সাত দিনের মধ্যেই বিধানসভার সব ক'টি বুথের কমপক্ষে দশজন সাধারণ সক্রিয় কর্মীর নামের তালিকা ছবি ও ফোন নম্বর সহকারে ব্লক সভাপতির কাছে বাধ্যতামূলক ভাবে জমা করতে হবে । মনে রাখবেন ওই তালিকায় যাতে নিজের পছন্দের মানুষের নাম না থাকে । আমরা প্রকৃত দলীয় কর্মীদের কাছে চাই । সুযোগ সন্ধানীদের কোনও জায়গা যেন না থাকে। আমাদের দলীয় নেটওয়ার্ক ওই তালিকাগুলি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে নেবে। ফাঁকিবাজি বরদাস্ত করা হবে না।"
পূর্ণেন্দু বসু বলেন, "লোকসভা আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ভরাডুবির পর দলীয় জেলা সভাপতি বদল করে মৃদুল গোস্বামীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । তাই ফালাকাটা আসন জিতে মৃদুলকেই তাঁর দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে । কোনওরকম অজুহাতের কথা আমরা শুনতে চাই না । না হলে পদ ছেড়ে দিতে হবে।"
2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফালাকাটায় অনিল অধিকারী 17 হাজার ভোটের ব্যবধানে CPI(M) প্রার্থীকে হারিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হন । অথচ 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের ভোটের নিরিখে আলিপুরদুয়ার লোকসভার ফালাকাটা বিধানসভা কেন্দ্রে গেরুয়া শিবিরের কাছে 27 হাজার ভোটের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে । বামেরা চলে যায় তৃতীয় স্থানে । গতবছরের 31 অক্টোবর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারী। তাঁর মৃত্যুর পরই ফের ফালাকাটার উপনির্বাচন নিয়ে জেলার রাজনৈতিক আসর সরগরম ।