ETV Bharat / state

মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার 4 সন্তান ! নিখোঁজ 3, সক্রিয় পাচারচক্র ?

কেউ কেউ এই ঘটনা দেখে জলপাইগুড়ি শিশুপাচারকাণ্ডের কথা স্মরণ করছেন ৷ 2015 সাল থেকে 2016 সালের মধ্যে বিমলা শিশুগৃহ থেকে বেআইনিভাবে 17টি শিশুকে দত্তক দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে৷ গ্রেপ্তার করা হয় ওই হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তীকে ৷ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে CID-র আধিকারিকরা জানতে পারেন, গর্ভবতী কুমারীদের নিয়ে ব্যবসা চলত হোমে ৷ তাদের সেখানে রেখেই বাচ্চা প্রসব করানো হত ৷ তারপর সেই বাচ্চা বেআইনিভাবে দত্তক দেওয়া হত ৷ সরলার ক্ষেত্রেও এরকমই কিছু হয়েছে কি না সেই প্রশ্নও তুলেছে কেউ কেউ ৷

mental health
mental health
author img

By

Published : Feb 7, 2020, 7:35 AM IST

আলিপুরদুয়ার, 6 ফেব্রুয়ারি : মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ৷ একবার নয় ৷ বারবার ৷ ঘটনা আলিপুরদুয়ার জেলার আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের এক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের শিকার হয়ে একাধিকবার অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েন বছর চল্লিশের সরলা (নাম পরিবর্তিত) ৷ গত কয়েকবছরে তিনি চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ৷ সেই চারজনের মধ্যে প্রথম তিনজন কোথায়, কেউ জানে না ৷ আলিপুরদুয়ার থানার তরফে জানা গেছে, সরলাদেবীর তরফে এখনও পর্যন্ত ধর্ষণ বা শিশু চুরির কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ সরলার আত্মীয়রা জানিয়েছে, সরলার চতুর্থ সন্তানকে উৎপল দাস নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে ভরতি করেন ৷ হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, শিশুটিকে সরকারি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে ৷ কিন্তু, সরলাকে কে বা কারা ধর্ষণ করেছে ? সরলার প্রথম তিন সন্তান কোথায় গেল ? তিনজনই কি চুরি গেছে ? চুরি করলে কারা করেছে ? কেউ কি দত্তক নিয়েছে ? দত্তক নিলে তা কি আইন মেনে হয়েছে? যদি কেউ দত্তক না নিয়ে থাকে তাহলে সরলার সন্তানরা কোথায় গেল? তারা শিশুপাচার চক্রের খপ্পড়ে পড়েনি তো? এরকম একাধিক প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়রা ৷ তবে কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারেনি স্থানীয় পঞ্চায়েত ও আলিপুরদুয়ার জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (CWC) ৷ তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি ৷ স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ৷

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে, বছর 15-16 আগে সরলার এক লটারি বিক্রেতার সাথে বিয়ে হয় ৷ বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে সে ৷ এরপর বাপের বাড়িতে ফিরে আসে । কিছুদিন পরই সরলার মা মারা যান ৷ ফলে সরলা একা হয়ে যান ৷ তাকে দেখার কেউ ছিল না ৷ মানসিক ভারসাম্যহীন সরলা বাড়িতে থাকত না ৷ এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াত ৷

সরলার দিদি জানিয়েছেন, তাঁদের মা মারা যাওয়ার পর থেকেই বিপত্তি ৷ সরলা শ্বশুরবাড়ি ফিরে যায়নি ৷ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত ৷ তারই সুযোগ নিয়েছে দুষ্কৃতীরা ৷ চারবার অন্ত:সত্ত্বা হয় তাঁর বোন ৷ কারা তাঁর বোনের অসহায়তার সুযোগ নিয়েছে তা তিনি জানেন না ৷ "সরলার সন্তানরা কোথায় রয়েছে ?" প্রশ্নের উত্তরে সরলার দিদি জানান, "প্রথম সন্তান আলিপুরদুয়ার জংশনের কালীবাড়ি এলাকায় রয়েছে । আর একজন এক নম্বর ব্লকের ঘাগড়া এলাকায় রয়েছে ৷ তৃতীয় সন্তানের হদিশ জানি না ।" স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সরলার সন্তানদের দত্তক নিয়েছে কেউ ৷ তবে সরলার দিদি বা প্রতিবেশী কেউই দত্তক নেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি ৷

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, মাস ছয়েক আগে চতুর্থ সন্তানের জন্ম দেয় সরলা ৷ এক পরিত্যক্ত জায়গায় শিশুটি জন্ম হয়৷ কিন্তু কেউ সরলার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি ৷ সদ্যোজাত ক্রমশ অসুস্থ হতে শুরু করে ৷ সেখানে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করেন উৎপল দাস নামে এক ব্যবসায়ী ৷ তিনি বলেন, "খবর পেয়ে ওখানে গিয়ে বাচ্চাটিকে খুব খারাপ অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখানেই ছিল ও ৷ আমরা বাচ্চাটিকে দত্তক নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করি ৷ হাসপাতাল থেকে আমাদের আইনি প্রক্রিয়ার কথা জানানো হয় ৷"

সরলার চতুর্থ সন্তানের হদিশ পাওয়া গেলও প্রথম তিন শিশু কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরলার এই অবস্থার কথা স্থানীয় পঞ্চায়েত জানে ৷ কিন্তু, তাদের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ পঞ্চায়েত সরলার জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা করলে এই অবস্থা হতো না ৷ তিন তিন জন বাচ্চার উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও পঞ্চায়েতের জানা ৷ অথচ তারা কোনও পদক্ষেপ করেনি ৷ এনিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা শিউলি রায় জানান, সরলার চতুর্থ সন্তানের বিষয়টি তাঁর জানা ৷ প্রথম তিনজনের কথা তিনি জানেন না ৷ কারণ, সেসময় বিয়ে হয়ে এই এলাকায় আসেননি ৷ সরলার চতুর্থ সন্তানকে দত্তক নেওয়ার জন্য কয়েকজনকে তিনি জানিয়েছেন । সরলাকে কে বা কারা ধর্ষণ করেছে তাও তিনি জানেন না ৷ তবে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ৷

এবিষয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির প্রধান ডোরা ভট্টাচার্য বলেন, "এলাকার পঞ্চায়েতের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে । এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি । কয়েকজনের কাছ থেকে ফোন পেয়ে বিষয়টি জানতে পারি ৷ আমরা তদন্ত শুরু করেছি । জানি না কেউ দত্তক নিয়েছে কি না ৷ নিলে তা আইন মেনে নেওয়া উচিত ৷ না হলে তা বেআইনি ৷ আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করছি ।"

কেউ কেউ এই ঘটনা দেখে জলপাইগুড়ি শিশুপাচারকাণ্ডের কথা স্মরণ করছেন ৷ 2015 সাল থেকে 2016 সালের মধ্যে বিমলা শিশুগৃহ থেকে বেআইনিভাবে 17টি শিশুকে দত্তক দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে৷ গ্রেপ্তার করা হয় ওই হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তীকে ৷ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে CID-র আধিকারিকরা জানতে পারেন, গর্ভবতী কুমারীদের নিয়ে ব্যবসা চলত হোমে ৷ তাদের সেখানে রেখেই বাচ্চা প্রসব করানো হত ৷ তারপর সেই বাচ্চা বেআইনিভাবে দত্তক দেওয়া হত ৷ সরলার ক্ষেত্রেও এরকমই কিছু হয়েছে কি না সেই প্রশ্নও তুলেছে কেউ কেউ ৷

আলিপুরদুয়ার, 6 ফেব্রুয়ারি : মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ৷ একবার নয় ৷ বারবার ৷ ঘটনা আলিপুরদুয়ার জেলার আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের এক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের শিকার হয়ে একাধিকবার অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েন বছর চল্লিশের সরলা (নাম পরিবর্তিত) ৷ গত কয়েকবছরে তিনি চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ৷ সেই চারজনের মধ্যে প্রথম তিনজন কোথায়, কেউ জানে না ৷ আলিপুরদুয়ার থানার তরফে জানা গেছে, সরলাদেবীর তরফে এখনও পর্যন্ত ধর্ষণ বা শিশু চুরির কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ সরলার আত্মীয়রা জানিয়েছে, সরলার চতুর্থ সন্তানকে উৎপল দাস নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে ভরতি করেন ৷ হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, শিশুটিকে সরকারি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে ৷ কিন্তু, সরলাকে কে বা কারা ধর্ষণ করেছে ? সরলার প্রথম তিন সন্তান কোথায় গেল ? তিনজনই কি চুরি গেছে ? চুরি করলে কারা করেছে ? কেউ কি দত্তক নিয়েছে ? দত্তক নিলে তা কি আইন মেনে হয়েছে? যদি কেউ দত্তক না নিয়ে থাকে তাহলে সরলার সন্তানরা কোথায় গেল? তারা শিশুপাচার চক্রের খপ্পড়ে পড়েনি তো? এরকম একাধিক প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়রা ৷ তবে কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারেনি স্থানীয় পঞ্চায়েত ও আলিপুরদুয়ার জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (CWC) ৷ তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি ৷ স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ৷

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে, বছর 15-16 আগে সরলার এক লটারি বিক্রেতার সাথে বিয়ে হয় ৷ বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে সে ৷ এরপর বাপের বাড়িতে ফিরে আসে । কিছুদিন পরই সরলার মা মারা যান ৷ ফলে সরলা একা হয়ে যান ৷ তাকে দেখার কেউ ছিল না ৷ মানসিক ভারসাম্যহীন সরলা বাড়িতে থাকত না ৷ এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াত ৷

সরলার দিদি জানিয়েছেন, তাঁদের মা মারা যাওয়ার পর থেকেই বিপত্তি ৷ সরলা শ্বশুরবাড়ি ফিরে যায়নি ৷ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত ৷ তারই সুযোগ নিয়েছে দুষ্কৃতীরা ৷ চারবার অন্ত:সত্ত্বা হয় তাঁর বোন ৷ কারা তাঁর বোনের অসহায়তার সুযোগ নিয়েছে তা তিনি জানেন না ৷ "সরলার সন্তানরা কোথায় রয়েছে ?" প্রশ্নের উত্তরে সরলার দিদি জানান, "প্রথম সন্তান আলিপুরদুয়ার জংশনের কালীবাড়ি এলাকায় রয়েছে । আর একজন এক নম্বর ব্লকের ঘাগড়া এলাকায় রয়েছে ৷ তৃতীয় সন্তানের হদিশ জানি না ।" স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সরলার সন্তানদের দত্তক নিয়েছে কেউ ৷ তবে সরলার দিদি বা প্রতিবেশী কেউই দত্তক নেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি ৷

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, মাস ছয়েক আগে চতুর্থ সন্তানের জন্ম দেয় সরলা ৷ এক পরিত্যক্ত জায়গায় শিশুটি জন্ম হয়৷ কিন্তু কেউ সরলার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি ৷ সদ্যোজাত ক্রমশ অসুস্থ হতে শুরু করে ৷ সেখানে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করেন উৎপল দাস নামে এক ব্যবসায়ী ৷ তিনি বলেন, "খবর পেয়ে ওখানে গিয়ে বাচ্চাটিকে খুব খারাপ অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখানেই ছিল ও ৷ আমরা বাচ্চাটিকে দত্তক নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করি ৷ হাসপাতাল থেকে আমাদের আইনি প্রক্রিয়ার কথা জানানো হয় ৷"

সরলার চতুর্থ সন্তানের হদিশ পাওয়া গেলও প্রথম তিন শিশু কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরলার এই অবস্থার কথা স্থানীয় পঞ্চায়েত জানে ৷ কিন্তু, তাদের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ পঞ্চায়েত সরলার জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা করলে এই অবস্থা হতো না ৷ তিন তিন জন বাচ্চার উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও পঞ্চায়েতের জানা ৷ অথচ তারা কোনও পদক্ষেপ করেনি ৷ এনিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা শিউলি রায় জানান, সরলার চতুর্থ সন্তানের বিষয়টি তাঁর জানা ৷ প্রথম তিনজনের কথা তিনি জানেন না ৷ কারণ, সেসময় বিয়ে হয়ে এই এলাকায় আসেননি ৷ সরলার চতুর্থ সন্তানকে দত্তক নেওয়ার জন্য কয়েকজনকে তিনি জানিয়েছেন । সরলাকে কে বা কারা ধর্ষণ করেছে তাও তিনি জানেন না ৷ তবে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে ৷

এবিষয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির প্রধান ডোরা ভট্টাচার্য বলেন, "এলাকার পঞ্চায়েতের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে । এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি । কয়েকজনের কাছ থেকে ফোন পেয়ে বিষয়টি জানতে পারি ৷ আমরা তদন্ত শুরু করেছি । জানি না কেউ দত্তক নিয়েছে কি না ৷ নিলে তা আইন মেনে নেওয়া উচিত ৷ না হলে তা বেআইনি ৷ আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করছি ।"

কেউ কেউ এই ঘটনা দেখে জলপাইগুড়ি শিশুপাচারকাণ্ডের কথা স্মরণ করছেন ৷ 2015 সাল থেকে 2016 সালের মধ্যে বিমলা শিশুগৃহ থেকে বেআইনিভাবে 17টি শিশুকে দত্তক দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে৷ গ্রেপ্তার করা হয় ওই হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তীকে ৷ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে CID-র আধিকারিকরা জানতে পারেন, গর্ভবতী কুমারীদের নিয়ে ব্যবসা চলত হোমে ৷ তাদের সেখানে রেখেই বাচ্চা প্রসব করানো হত ৷ তারপর সেই বাচ্চা বেআইনিভাবে দত্তক দেওয়া হত ৷ সরলার ক্ষেত্রেও এরকমই কিছু হয়েছে কি না সেই প্রশ্নও তুলেছে কেউ কেউ ৷

Intro:আলিপুরদুয়ার:-এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে মহিলাকে বছরের পর বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণ।ধর্ষণের জেরে পরপর চারবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ভবঘুরে ওই মহিলা।এর পর চার বছরে মাঠে ঘাটে চারটি সন্তান প্রসব করে ওই মহিলা।তবে আশ্চর্যজনক ভাবে ভবঘুরের প্রথম তিন সন্তান উধাও।তার কোন খোঁজখবর নেই তার পরিবার কিংবা স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে। নিখোঁজ হয়ে যাওয়া তিন সন্তানের বিষয়ে কোন তথ্য হাতে নেই জেলা চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির হাতেও ।


Body:তবে ভবঘুরে ওই মহিলার দিদি স্বপ্না ঘোষ জানিয়েছেন এক সন্তান রয়েছে আলিপুরদুয়ার জংশন কালীবাড়ি এলাকায় ।আরেক সন্তান রয়েছে এক নম্বর ব্লকের ঘাগড়া এলাকার জনৈক এক ব্যক্তির কাছে।তৃতীয় সন্তানের কোন হদিস নেই ।চতুর্থ শেষ পুত্র সন্তানটি এক সন্তানহীন দম্পতির সৌজন্যে প্রথমে ছিলো আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ।মাস খানেক আগে আলিপুরদুয়ার হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে ।আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের বনচুকামারী গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বাইরিগুড়ি গ্রামের বাসিন্দা শম্পা ঘোষ(৪০)।বছর ১৫-১৬ আগে আলিপুরদুয়ার পুরান বাজার দুর্গাবাড়ি এলাকায় এক লটারি বিক্রেতার সাথে বিয়ে হয় সম্পা ঘোষের।বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় সম্পা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাপের বাড়িতে ফিরে আসে।বাপের বাড়িতে ফিরে আসার পর সে তার মায়ের কাছেই থাকতে শুরু করে ।তবে মাস খানেকের ভেতর তার মার মৃত্যু হয়।এর পর সম্পা পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ভবঘুরে হয়ে ঘুরতে থাকে ।এর পর থেকেই তার উপর শুরু হয় পৈশাচিক শারীরিক নির্যাতন ।চলতে থাকে বছরের পর বছর ধরে ধর্ষণ ।ধর্ষণের জেরে পরপর চারবার গর্ভবতী হয়ে পড়ে ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা ।পরপর চার বার চারটি সন্তানের জন্মদেয় ওই মহিলা ।তবে কোন রকম আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই ওই মহিলার তিন নবজাতক সন্তানকে কেউ বা কাহারা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ । ছয়-সাত মাস আগে ওই মহিলা গ্রামের এক মাঠের ধারে তার শেষ পুত্র সন্তানটি প্রসব করে ।ঘটনাস্থলে সে সময় এলাকার স্থানীয় পঞ্চায়েত শিউলি রায় সহ অন্যান্যরা উপস্থিত থাকলেও সন্তানটিকে কেউ উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠায়নি বলে জানা গেছে । তবে এক নিসন্তান দম্পতির নজরে আসে ঘটনাটি ।তারাই ওই নবজাতককে উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য ।পরে তারা সেই সন্তানের দত্তক নিয়ে হাসপাতালে আবেদন করে ।যদিও সেই দম্পতির ভাগ্য জোটেনি সেই সন্তান । প্রশ্ন উঠছে ভবঘুরে ওই মহিলার তিন সন্তান কোথায় গেল ? কি ভাবেই বা ওই শিশু গুলোর জন্ম প্রমাণপত্র পেল ওই পরিবার গুলো ?শিশু পাচার চক্রের হাতে পড়েনি তো ওই নবজাতক শিশু গুলো ? বর্তমানে এই প্রশ্ন গুলো ভাবাচ্ছে আলিপুরদুয়ার জেলা চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির কর্তাদের । আলিপুরদুয়ার জেলা চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির চেয়ার পার্সন ডোরা ভট্টাচার্য জানান এলাকার পঞ্চায়েতের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। কয়েকজন ব্যক্তির থেকে ফোনের মাধ্যমে আমরা ঘটনার বিবরণ পেয়েছি। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সিডাব্লিউসি পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করছি। এভাবে কোন বাচ্চাকে কেউ দত্তক নিতে পারে না। দত্তক নিতে গেলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দত্তক নিতে হয়। আমরা ঘটনার তদন্ত আজ থেকেই শুরু করছি। প্রশ্ন উঠছে লাগাতার চার বছর ধরে ধর্ষিত হওয়ার পর গর্ভধারণ করার পরেও এই ভবঘুরে মহিলার সম্পর্কে কোনো খোঁজখবর কি ছিল না সংশ্লিষ্ট এলাকায় কর্মরত আশা কর্মীদের কাছে? নির্যাতিতা শম্পা ঘোষ এর দিদি স্বপ্না ঘোষ জানিয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে আলিপুরদুয়ারের এক লটারি বিক্রেতা বাবলি সরকারের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় শম্পা বাড়ি ফিরে আসে। বিবাহিত জীবনের শম্পার এক পুত্রসন্তান রয়েছে। তার মস্তিষ্কের বিকৃতির জন্যই সে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে আসে। তার স্বামী তাকে বেশ কয়েকবার ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছিল। তবে সে স্বামীর সাথে শ্বশুরবাড়ি ফেরত যায়নি। সে আমার মার কাছে থাকতে শুরু করে। কিন্তু সে ফেরত আসার মাসখানেকের মধ্যেই আমার মৃত্যু ঘটে। এরপর সে একাই থাকতে শুরু করে। এর পরেই তার ওপর এরকম নোংরামো শুরু হয়। এর জেরে বোন শম্পা চারবার গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এবং চার সন্তানের জন্ম দেয়। শুধুমাত্র শেষের পুত্রসন্তানকে আলিপুরদুয়ার হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাকি তিনজনের কোন খোঁজ নেই। স্থানীয় বাসিন্দা সরলা বর্মন জানান একটা বাচ্চাকে আমরা নিয়ে আসি। বাকি বাচ্চাগুলোর খোঁজ জানিনা। রাতের বেলায় শম্পাকে একা পেয়ে কেউ বা কাহারা এই নোংরামো করে যায়। শেষ পুত্রসন্তানের সময় ঘটনাস্থলে স্থানীয় পঞ্চায়েত শিউলি রায় উপস্থিত ছিলেন। তবে সবার ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলেও সরকারি তরফে কেউ এখানে আসেনি। গোটা ঘটনা পঞ্চায়েত জানে। স্থানীয় পঞ্চায়েত শিউলি রায় জানান এক জায়গা থেকে ফেরার সময় পথে দেখি শম্পা সন্তান প্রসব করেছে। দেখতে পাই বাচ্চাটি মাটিতে পড়ে আছে। ওদের বাড়ির লোক বাচ্চাটিকে মাটি থেকে তুলতে দিচ্ছিল না। আগের ঘটনাগুলো সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। তখন আমার বিয়ে হয়নি। আমি নতুন বিয়ে হয়ে এখানে এসেছি। শম্পার সন্তানকে দত্তক নেওয়ার জন্য আরও বেশ কিছু লোককে জানিয়েছিলাম। রাতের বেলায় কারা এসে শম্পার সাথে এ রকম দুষ্কর্ম করে যায় তার খোঁজ কে রাখবে। ওর ঘরের দরজা ভাঙ্গা। সম্পদ চতুর্থ পুত্র সন্তানকে মৃতপ্রায় জলে ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে একটি জায়গা থেকে পিঁপড়ে খুবলে খাওয়া অবস্থায় উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান উৎপল দাস নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। নিঃসন্তান এই দম্পতির হাসপাতাল এর কাছে সন্তানটিকে দত্তক নেওয়ার আবেদন করা হয়। তবে হাসপাতালের তরফ থেকে এ দম্পতিকে জানিয়ে দেওয়া হয় এভাবে দত্তক নেওয়া সম্ভব নয়।


Conclusion:উৎপল দাস জানান সেদিন বাইরিগুড়িতে একটি বিয়ের নাম অন্তর থেকে ফেরার পথে রাস্তায় ভিড় দেখে গাড়ি থামাই। তারপর মৃতপ্রায় অবস্থায় শিশুটিকে দেখতে পাই। সাথে সাথেই আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার আবেদন জানাই। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের দত্তক নেওয়ার আইনি প্রক্রিয়া জানান।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.