আলিপুরদুয়ার, 29 জুলাই: আলিপুরদুয়ারে ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাত পরিচয় যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় 17 জনকে গ্রেপ্তার করে ফালাকাটা থানার পুলিশ ৷ অভিযুক্তদের আজ আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হয় ৷ এদের মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে মূল 3 জন অভিযুক্তের 7 দিনের পুলিশ রিমান্ড চাওয়া হয়েছে ৷ তাদের নাম বন্ধন ওরাওঁ, সেলিম মুণ্ডা ও বুধু মুণ্ডা ৷
আরও পড়ুন : ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি, আলিপুরদুয়ারে খুন যুবক
গতরাত ন'টা নাগাদ তাসাটি চা বাগান সংলগ্ন এলাকার একটি ফুটবল মাঠে ঘুরছিলেন ওই যুবক ৷ সেইসময় তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় জটেশ্বর ফাঁড়ির পুলিশ ৷ আক্রান্তকে উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাদেরকেও মারধর শুরু করে ৷ কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচেন আট পুলিশকর্মী । এদিকে, সেসময় ওই যুবককে বেধড়ক মারধর শুরু করেন স্থানীয়রা ৷ খবর পেয়ে ফলাকাটা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালাতেও বাধ্য হয় ৷ এরপর তারা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বীরপাড়া স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে ভরতি করে ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ পুলিশ ওই যুবকের নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করছে ।
জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, গণপিটুনিতে এক যুবককে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত থাকার অভিযোগে 17 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । প্রত্যেকের বিরুদ্ধে 302 ধারায় মামলা রুজু হয়েছে । পুলিশ সুপার জানিয়েছেন জেলার বাগানগুলিতে পুলিশ সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে ৷ তাও চা বাগান এবং বনবস্তি এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা এখনও অব্যাহত । ইতিমধ্যে জেলা পুলিশের তরফে গণপিটুনির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মোট 39 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷
আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রথম গণপিটুনির ঘটনা ঘটে জুন মাসের 16 তারিখ, কালচিনির পাতকাপারা চা বাগানে । এরপর গত দেড় মাসে জেলাজুড়ে মোট 9 বার ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে ৷
নগেন্দ্রনাথবাবু আরও জানান, মূল 3 জন অভিযুক্তের 7 দিনের পুলিশ রিমান্ড চাওয়া হয়েছে ৷ অভিযুক্তদের থেকে জানার চেষ্টা হবে এই ঘটনায় আরও কে কে জড়িত রয়েছে । তবে মৃত যুবকের পরিচয় এখনও জানা যায়নি । পরিচয় জানার জন্য সমস্ত থানায় যোগাযোগ করা হচ্ছে ।