কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর : টেবিল টেনিসে গড়াপেটার ছায়া । শুক্রবার সন্ধ্যায় খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই স্তম্ভিত প্যাডলাররা । টোকিয়ো অলিম্পিকসে সিঙ্গলসের ম্যাচ চলাকালীন জাতীয় দলের কোচ সৌম্যদীপ রায়ের সাহায্য নিতে অস্বীকার করেছিলেন মণিকা বাত্রা । তিনি পরামর্শদাতা হিসেবে ব্যক্তিগত কোচ সন্ময় পরাঞ্জপেকে চেয়েছিলেন । অনেক বিতর্কের পর পরাঞ্জপেকে তাঁর সঙ্গে টোকিয়ো যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও তিনি গেমস ভিলেজে থাকতে পারেননি । এদিকে, মণিকার ম্যাচ চলাকালীন কোচের চেয়ার ফাঁকা ছিল ৷ বদলে গ্যালারি থেকেই সন্ময় না কি মণিকাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছিলেন ।
টোকিয়োতে ছিলেন টিটিএফআইয়ের সচিব অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁকে এই বিষয়টি জানিয়েছিলেন সৌম্যদীপ । তখনই অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন তাঁরা দেশে ফিরে কারণ জানতে চাইবেন । সেই মতো মণিকা বাত্রাকে শোকজ করা হয়েছিল । প্রত্যুত্তরে তিনি যা বলেছেন তাতে আলোড়ন পড়েছে টেবিল টেনিস মহলে । দোহাতে অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জনের ম্যাচের আগে মণিকাকে ম্যাচ ছাড়ার কথা বলেছিলেন সৌম্যদীপ । মণিকার প্রতিপক্ষ ছিলেন সৌম্যদীপের অ্যাকাডেমির ছাত্রী সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় । টিটিএফআইয়ের সচিব অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, 21 মার্চের ঘটনা এতদিন পরে কেন মণিকা বলছেন তা বোঝা গেল না । পাশাপাশি তিনি মনে করেন ম্যাচ গড়াপেটা হয়েছে এই রকম কিছু খবর তাঁদের কাছে নেই । সৌম্যদীপের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছেন, তারপর পদক্ষেপ করবেন ।
আরও পড়ুন, Manika Batra : ম্যাচ ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কোচ সৌম্যদীপ, বিস্ফোরক মনিকা বাত্রা
ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হতেই সতর্ক সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় । এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি । তিনি যখন কথা বলছিলেন তখন পাশ থেকে কোনও এক মহিলা কণ্ঠ ফোন কেটে দেওয়া এবং ফোন বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন । অন্যদিকে, সৌম্যদীপ রায় ফোন বন্ধ করে রেখেছেন । আগামী 48 ঘণ্টার মধ্যে হয়ত এই বিস্ফোরক অভিযোগের উত্তর পাঠাবেন । একাধিক বার ফোন করলেও ধরেননি পৌলমী ঘটক । প্রসঙ্গত, সৌম্যদীপের স্ত্রী পৌলমী । এই দু'জন একজোট হয়ে টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমি চালান ।
জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মৌমা দাস বলেছেন, "বিষয়টি জানি না ৷ তাই কিছু বলব না । তিনবছর আমি সার্কিটের বাইরে । তবে এই ধরনের খবর টেবিল টেনিসের খারাপ বিজ্ঞাপন ।" অলিম্পিয়ান সৌম্যজিৎ ঘোষ বলেছেন, "আমি নিজেই ফিরে আসার লড়াই চালাচ্ছি । বিতর্কিত বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না । আমি নিজে দোহাতে ছিলাম না । টোকিয়োতেও নয় । তাই কী হয়েছিল জানি না । তবে এই ধরনের খবর খারাপ বিজ্ঞাপন ।"
সত্য-অসত্যের দোলাচল চলছে । বেঙ্গল স্টেট টেবিল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব শর্মি সেনগুপ্ত বলেছেন, "এই বিষয়ে কোনও কিছু আমাকে জানানো হয়নি । কোনও কিছু না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না ।"
খেলাধুলোর জগতে ম্যাচ গড়াপেটা নতুন নয় । ভারতীয় টেবিল টেনিসে বিষয়টি আকস্মিক । তাই মণিকা বাত্রা বনাম কোচ সৌম্যদীপের কোর্টের বাইরের লড়াইয়ের ফলাফল পৃথিবীর দ্রুততম খেলায় একটা দিক উন্মোচন করে দেবে ।