রায়গঞ্জ, 25 আগস্ট : জেলাস্তরের বিভিন্ন ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় একের পর এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাস্ত করে মেডেল-সার্টিফিকেট জিতেছেন । ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক বেল্ট অর্জন করেছেন । ক্যারাটেকার হিসেবে ভবিষ্যৎ ছিল উজ্জ্বল । কিন্তু, কোরোনা আর লকডাউনে জীবনটাই ওলট-পালট হয়ে গেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বাসিন্দা স্মৃতিকণা কুণ্ডুর । পরিবারের হাল ধরতে সবেমাত্র 18-র গণ্ডি পার করা মেয়েটি বেছে নিয়েছেন কুরিয়ার গার্লের কাজ ৷ কোনও এক সময় বিচারক হিসেবে ক্যারাটে প্রতিভা যাচাই করা স্মৃতিকণার ভবিষ্যৎ কি তা তিনি নিজেই জানেন না ।
2018 সালে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর পর রায়গঞ্জের পলিটেকনিক কলেজে ভরতি হন স্মৃতিকণা ৷ এরপর পাকাপাকিভাবে রায়গঞ্জে বসবাস করতে শুরু করে কুণ্ডু পরিবার । দিল্লি থেকে ফিরে এসে অনলাইনে শাড়ির ব্যবসা শুরু করেন স্মৃতিকণার মা । আয় ভালোই হচ্ছিল । কিন্তু বাধ সাধল লকডাউন । আচমকা বন্ধ হয়ে গেল শাড়ির ব্যবসা । ঘরে তখন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা । বড় মেয়ে হিসেবে পরিবারের হাল ধরতে তাই পথে নামতে হয় স্মৃতিকণাকে ৷ একটি ক্যুরিয়ার সংস্থায় কাজ নেন ৷ শুরু হয় পুরানো সাইকেলে করে বাড়ি বাড়ি ক্যুরিয়ার ডেলিভারির কাজ ৷ যে কম্পানিতে তিনি কাজ করেন সেখানে 70 জন মোট ডেলিভারি বয় রয়েছেন । তাঁদের মধ্যে একমাত্র মেয়ে হিসেবে এই কাজ করছেন স্মৃতিকণা ।
সেই থেকে আজ পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে জীবন যুদ্ধে লকডাউনকে পরাস্ত করতে লড়ে যাচ্ছেন মেয়েটি । পড়াশোনা একেবারেই বন্ধ ৷ আর জীবনের প্রথম প্রেম ক্যারাটেও স্মৃতিকণার জীবন থেকে এখন অনেক দূরে ৷ সারাদিনের খাটাখাটনির পর ক্যারাটে নিয়ে এগোনোর কথা ভাবাটা এখন বিলাসিতা বলে মনে হয় ৷ তবে ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে ক্যারাটে নিয়ে ফের ভাবা শুরু করবেন, জানিয়েছেন স্মৃতিকণা ।