কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর : বেহাল অবস্থা জলপাইগুড়ির বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন ছিল, এই অত্যাধুনিক পরিকাঠমোযুক্ত স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে আসবেন দেশের অসংখ্য প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ। যাঁরা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবেন। সেই স্বপ্নকে সামনে রেখেই রাজ্য সরকার প্রায় পাঁচ বছর আগে পঞ্চাশ কোটি টাকারও বেশি অর্থ খরচ করে গড়ে তুলেছিল আধুনিক পরিকাঠামো। তারপরই বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গন তুলে দেওয়া হয়েছিল স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই)-এর হাতে।
তারপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘদিন ৷ গঙ্গা দিয়ে প্রচুর জল বয়ে গিয়েছে। আধুনিক পরিকাঠামোযুক্ত বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গন এখন কার্যত জঙ্গলে পরিণত হয়েছে ৷ খেলাধুলো তো দূর, এখন সেটি গবাদি পশুর চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। অথচ এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। এই ঘটনার জন্য পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করছেন। তিনি সোমবার নিউ সেক্রেটারিয়েটে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, এক্ষেত্রেও বাংলার সঙ্গে কেন্দ্র বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে ৷ তাঁর বক্তব্য, "প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর উন্নত পরিকাঠামোযুক্ত বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনকে রাজ্য সরকার সাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল। জলপাইগুড়ি জেলার ২৭ একর জমির উপর উন্নতমানের ক্রীড়াকেন্দ্র গড়ে তুলতে রাজ্য সরকারের প্রায় ৫০ কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাজ্য সরকারের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও এই ক্রীড়া কমপ্লেক্সটি সাই কাজে লাগায়নি ৷"
আরও পড়ুন : 2021’র প্রথম খেতাব জয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার
তিনি আরও জানিয়েছেন, এই বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনকে কাজে লাগানোর জন্য ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্বতন ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোরের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই চিঠির কোনও উত্তর আসেনি। এরপর ২০২০ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজুর কাছে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে ফের চিঠি পাঠানো হয়েছিল। হস্তক্ষেপের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তারপরও কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়নি।
রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী এদিন জানান , গত ৯ সেপ্টেম্বর পুরো ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে বর্তমান কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে চিঠিতে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও সেই চিঠির উত্তর আসেনি। কেন্দ্রের এই উদাসীনতায় বিরক্ত বাংলার ক্রীড়ামন্ত্রক। তারা তিন মাস অপেক্ষা করবে। এর মধ্যে যদি কোনও সদূত্তর না-আসে এবং সাই যদি এই পরিকাঠামোর সুবিধা সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার না-করে, তা হলে সাইয়ের সঙ্গে যে মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা ভেঙে বেরিয়ে আসবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।