নয়াদিল্লি, 30 জুলাই : চাওয়ালা থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নজির ইতিমধ্য়েই ভারতবাসী দেখে ফেলেছে ৷ এবার শিরোনামে আরও এক চাওয়ালা ৷ বার্মিংহামে চলা কমনওয়েলথ গেমসে (Commonwealth Games 2022) রুপো জিতে শনিবার শিরোনামে এসেছেন তিনি ৷ প্রতিটি সাফল্যের পিছনেই লুকিয়ে থাকে কঠোর পরিশ্রম, সংগ্রামের কাহিনি ৷ 21 বছরের সংকেত সরগরও (Sanket Saragar) ব্যতিক্রম নন ৷
মহারাষ্ট্রের একটা ছোট্ট শহর সংলির বাসিন্দা সংকেত ৷ সেখানেই সাতসকালে উঠে তাঁকে যেতে হত বাবার চায়ের দোকানে (স্থানীয় ভাষায় পান টাপরি) ৷ ক্রেতাদের চা দেওয়ার কাজও করতে হত তাঁকে ৷ সেই কাজের ফাঁকেই সময় বের করে পড়াশোনা ও ভারোত্তলনের প্রশিক্ষণ চালিয়ে গিয়েছেন সংকেত ৷
সংকেত তাঁর এই লড়াইয়ে পাশে পেয়েছেন ময়ূর সিনহাসানেকে ৷ তিনিও সংকেতের শৈশবের কোচ ৷ আজ সংকেতের সাফল্যে স্বাভাবিকভাবে তিনিও খুশি ৷ তিনি জানিয়েছেন, শৈশবের আনন্দকে ত্যাগ করে সাফল্যের লক্ষ্যে লড়াই চালিয়েছে সংকেত ৷ ভোর সাড়ে পাঁচটায় রোজ চায়ের দোকানে পৌঁছে যেতেন তিনি ৷ তার পর বিকেলে আবার জিমেও যেত৷ শনিবার তাঁর স্বপ্ন সফল হল ৷
সিনহাসানে জানিয়েছেন, সংকেত সোনা জিততেই পারতেন ৷ কিন্তু চোটের জন্য তা সম্ভব হয়নি ৷ তবে রুপো জিতে সাফল্য এল তাঁর জীবনে, তার জন্য তাঁর বাবা মহাদেবের কৃতিত্বও অনেক ৷ আর্থিক সমস্যা থাকলেও তিনি বরাবর ছেলেকে খেলা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছেন ৷
সংকেত তিনবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ৷ গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে এনআইএস পাটিয়ালার জাতীয় ক্যাম্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৷ তখন থেকে তিনি ভারতের প্রধান কোচ বিজয় শর্মার প্রশিক্ষণে ছিলেন ৷ এর আগে তিনি 2013-2015 নানা সিনহাসানের অধীনে প্রশিক্ষণ নেন৷ নানা সিনহাসানে ময়ূরের বাবা ৷ 2017 থেকে 2021 পর্যন্ত ময়ূরের তত্ত্ববাধনে অনুশীলন করেছেন সংকেত ৷ তবে পরিবারে সংকেত একা নন ৷ তাঁর বোন কাজও ভারোত্তলক ৷ তিনি এবার খেলা ইন্ডিয়ার (Khelo India) 40 কেজি বিভাগে সোনা জিতেছেন ৷
ছেলের এই সাফল্যে চোখে জল সংকেতের বাবার ৷ তাঁর লড়াই সফল হওয়ায় তিনি খুশি ৷ তবে এবার তাঁর লক্ষ্য ছেলেকে প্যারিস অলিম্পিক্সের জন্য প্রস্তুত করা ৷
আরও পড়ুন : CWG 2022: কমনওয়েলথে ভারতের ঘরে প্রথম পদক, ভারোত্তোলনে রুপো এনে দিলেন সঙ্কেত