কলকাতা, 11 অক্টোবর: 'রিমুভ এটিকে' আন্দোলন নিয়ে উত্তাল মোহনবাগান ক্লাব। সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন এবং বর্তমান কর্তারা একে অন্যকে দুষছেন । রিমুভ এটিকে আন্দোলন পৌঁছে গিয়েছে ক্লাব সচিব দেবাশিস দত্তের বাড়ি পর্যন্ত। সে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দু'পক্ষই। তাঁদের মতে এভাবে বিক্ষোভ দেখানো উচিত হয়নি সমর্থকদের । তবে এটিকে রাখা না-রাখা নিয়ে মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসে গেল । শুধু তাই নয়, একে অপরের ঘাড়ে দোষও চাপালেন প্রাক্তন ও বর্তমান সচিব (Remove ATK movement sparked blame game in Mohun Bagan)।
সমর্থকদের প্রতিবাদ ঘিরে সোমবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে মোহনবাগান ক্লাব । সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের লেখা সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'ক্লাবের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন কিছু সমর্থক । মার্জারের সময় দেবাশিস দত্ত সচিব ছিলেন না । তাই তাঁর এক্ষেত্রে বলার জায়গা ছিল না । আগের কমিটি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।''
পালটা দিয়েছেন প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বসুও । তিনি পালটা প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, 'ক্লাবের প্রেস রিলিজে সম্পূর্ন ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। মার্জারের সময় ক্লাবের কমিটিতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগ সদস্য এবারও কমিটিতে আছেন। ফলে অনেকেই জানেন, আসল সত্যটা কী। ক্লাবের কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে আমায় আর দেবাশিস দত্তকে দায়িত্ব দিয়েছিল পুরো ইস্যুটা নিয়ে এটিকের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য । ফলে সেই আলোচনায় সমান দায়িত্ব দেবাশিস দত্তরও ছিল। তাছাড়া চুক্তিপত্রে ফুটবল টিমের তৎকালীন কোম্পানি (মোহনবাগান ফুটবল ক্লাব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড)-এর তরফে আমি এবং দেবাশিস দত্ত দু'জনেই সই করেছিলাম ডিরেক্টর হিসেবে। ফলে চুক্তিপত্রে সময় কে সচিব আর কে অর্থ সচিব ছিলেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। ক্লাবের তরফে একটা ভুল তথ্য দিয়ে সবাইকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।''
আরও পড়ুন: প্রথম ম্যাচেই ডুবল পালতোলা নৌকো, প্রত্যাবর্তনের আইএসএলে মুখ পুড়ল যুবভারতীরও
এটিকে নাম তোলার ব্যাপারে দেবাশিস দত্ত ও সৃঞ্জয় বসু একসঙ্গেই সঞ্জীব গোয়েঙ্কাদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন বলে দাবি মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিবের। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি লেখেন, ''ক্লাব বোধহয় প্রেস রিলিজ দেওয়ার আগে তথ্যগত ব্যাপারে আরও একটু সতর্ক হতে পারত। পদত্যাগ করার আগে নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আমি ও দেবাশিস দত্ত একসঙ্গেই ইনভেস্টরদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম ।''
এনিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ক্লাবের সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষও। প্রথম থেকেই সমর্থকদের দাবি মেনে এটিকে নাম সরানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন কুণাল। তিনিও দেবাশিস দত্তদের পাশে থাকলেন না। বিবৃতি দিয়ে কুণাল জানিয়েছেন, ''১০ অক্টোবর প্রচারিত মোহনবাগান ক্লাবের প্রেস বিবৃতির বয়ানের সঙ্গে অনেকাংশেই একমত নই। এ বিষয়ে এক্সিকিউটিভ কমিটিতে কোনও আলোচনা হয়নি। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা ও পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে। ক্লাবের সদস্য, সমর্থকদের আবেগকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া তখনও প্রয়োজন ছিল, এখনও প্রয়োজন।''
অর্থাৎ সব মিলিয়ে রিমুভ এটিকে আন্দোলন নিয়ে জোর বিতর্ক মোহনবাগান ক্লাবে। একে অপরের দিকে আঙুল তুলছেন কর্তা এবং প্রাক্তন কর্তারা। তবুও সমাধান এখনও অধরা। এর মধ্যেই মরশুমের প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে হারতে হল এটিকে মোহনবাগানকে। চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে 2-1 গোলে হারল তারা। মাঠেও দেখা গেল না দর্শকদের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের সিজন টিকিট যেখানে শেষ সেখানে সবুজ-মেরুন নিয়ে উলটো ছবি বাগান শিবিরে ।