বৈদ্যবাটি, 9 নভেম্বর: 'ঝুন্ড' (Jhund)) ছবিতে বিজয় বারসে স্যরের কথা মনে আছে? বৈদ্যবাটির চৌমাথা স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে গেলে আপনার মুহূর্তের মধ্যে মনে পড়ে যাবে সেই বিজয় বারসে স্যরকে ৷ বস্তির গরীব ছেলেদের ঘষে মেজে সেখানে ভবিষ্যতের বাইচুং ভুটিয়া, সুনীল ছেত্রী কিংবা জো পল আনচেরি বানানোর চেষ্টা করছেন একাত্তরের পঙ্কজ ঘোষ ৷
আর্থিকভাবে স্বচ্ছল বলা যাবে না ৷ স্বভাবতই চার বছর অন্তর বিভিন্ন দেশ ঘুরে বিশ্বকাপ দেখার মতো সহায়-সম্বল নেই ৷ কিন্তু ওই যে বলে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয় ৷ পঙ্কজ ঘোষের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই ৷ তাঁর মনের জোরের কাছে হার মেনেছে বয়সের বাধা আর ব্যাংকের লোনে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা ৷ এই সবকিছুকে ড্রিবল করে কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে যাচ্ছেন তিনি (Pankaj Ghosh takes loan to go Qatar for Football WC) ৷
এর আগে গ্যালারিতে বসে সাক্ষী হয়েছেন ছয়-ছ'টি বিশ্বকাপের ৷ অর্থাৎ, কাতারে সপ্তম বিশ্বকাপের শরিক হতে যাচ্ছেন পঙ্কজবাবু (Pankaj Ghosh to attend football WC for seventh time) ৷ ফুটবল বিশ্বকাপের পাশাপাশি তিনি সাক্ষী থেকেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং উইম্বলডনেরও ৷ লোন শোধের বিষয়টিকে বিশেষ আমল দিতে নারাজ তিনি ৷ সবই উপরওয়ালার হাতে ছাড়ছেন সত্তরোর্ধ্ব তরুণ ৷ তবে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে তো আর চলে না, তাই এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে এলাকার খুদেদের মধ্যে ফুটবলের নেশা সঞ্চারিত করছেন এই বয়সে এসেও ৷
পঙ্কজ ঘোষের কথায়, "1998 সালে আমার প্রথম বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়া। তখন মাইনে মাত্র 2600 টাকা। তখনই আশি হাজার টাকা ধার করে ফেলেছিলেম। কোনও ব্যাঙ্ক লোন দিতে চায়নি আমাকে। বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে অথবা ব্যক্তিগত লোন নিয়েছিলাম আমি। পরে এসে ধার শোধ করেছি।" আর কীভাবে দেশ-বিদেশ ঘুরে লোন মিটিয়ে এখনও সম্ভব হচ্ছে ফুটবল-ক্রিকেট দেখা?
আরও পড়ুন: 'মৃত্যুঞ্জয়ী' এরিকসেনকে স্কোয়াডে রেখে কাতার যাচ্ছে ডেনমার্ক
উত্তরে বাস্তবের বিজয় বারসে স্যর বলছেন, "ইচ্ছে থাকলেই সব হয় ৷ উপরওয়ালাও দেখে, সব শোধ হয়ে যায় ৷ তার জন্য পরিশ্রম যদিও করতে হয় ৷ টাকা তো আর এমনি এমনি আসে না ৷" সবমিলিয়ে একাত্তর নেহাত সংখ্যা মাত্র পঙ্কজবাবুর কাছে ৷ কাতারের যাওয়ার প্রস্তুতির ফাঁকেই হয়তো তিরিশে মেক্সিকো যাওয়ারও পরিকল্পনা ছকে রাখছেন ফুটপ্রেমীদের অনুপ্রেরণা পঙ্কজ ঘোষ ৷