ETV Bharat / sports

সচিন-সৌরভদের ফিটনেস মন্ত্র দেওয়া মানুষটার খোঁজ রাখে না কেউ

ভারতীয় ক্রিকেটের 'A' দল, সিনিয়র ক্রিকেট দল, জাতীয় ফুটবল টিমে দীর্ঘদিন ফিজিওর দায়িত্বে ছিলেন দীপ্তিকুমার ঘোষ । ইংল্যান্ড, মরিশাস, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, সহ একাধিক দেশে টিমের সঙ্গে ছিলেন । কপিল দেব, সচিন , সৌরভ, দ্রাবিড়, লক্ষণ থেকে শুরু করে বাইচুং, বিজয়নদের দিয়েছিলেন ফিটনেসের মন্ত্র ।

দীপ্তিকুমার ঘোষ
দীপ্তিকুমার ঘোষ
author img

By

Published : Aug 22, 2020, 7:53 AM IST

রসুলপুর,(বর্ধমান), 19 আগস্ট : পূর্ব বর্ধমান জেলার রসুলপুরের উলারা গ্রাম ৷ এখানেই বসবাস করেন দীপ্তিকুমার ঘোষ ৷ একসময় ভারতীয় ক্রিকেটে ফিজিওর কাজ করা দীপ্তিবাবু আজ অশীতিপর বৃদ্ধ ৷ কিন্তু এখনও সাইকেল নিয়ে এলাকা চষে বেড়ান তিনি ৷ তবে শুধুমাত্র ভারতীয় ক্রিকেট দল না, ফুটবল দলেও ফিজিওর কাজ করেছেন দীপ্তিবাবু ৷ কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি সচিন, সৌরভ, দ্রাবিড়, কপিলদেব সঙ্গে ৷ ফুটবলে আই এম বিজয়ন, বাইচুং ভুটিয়ার সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি ৷ কিন্তু বর্তমানে এই ফিজিওর খোঁজ নেয় না কেউ ৷

ভারতীয় ক্রিকেটের 'A' দল, সিনিয়র ক্রিকেট দল, জাতীয় ফুটবল টিমে দীর্ঘদিন ফিজিওর দায়িত্ব ছিল দীপ্তিকুমার ঘোষ । ইংল্যান্ড, মরিশাস, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, সহ একাধিক দেশে টিমের সঙ্গে ছিলেন । কপিল দেব, সচিন , সৌরভ, দ্রাবিড়, লক্ষণ থেকে শুরু করে বাইচুং, বিজয়নদের দিয়েছিলেন ফিটনেসের মন্ত্র । দিনরাত এক করে তাদের সুস্থ রাখার জন্য ছুটে বেড়াতেন তিনি । কোনও খেলোয়াড় চোট পেলে কীভাবে তাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলা যায় । তাদের সারাদিনের রুটিন তৈরি করে নজরদারি সবই সামলাতেন একার হাতে । এককথায় সচিন, সৌরভ, বাইচুংদের কাছে তিনি দাদা হয়ে উঠেছিলেন ।

দীপ্তিকুমার ঘোষ
স্মৃতি সরণীতে দীপ্তিকুমার ঘোষ

ভারতীয় ফুটবল দলে কনস্টানটাইন, মিলোভান, জোসেফ গেলি, আক্রমাভদের মতো বিদেশি কোচদের সঙ্গে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন । ফিজিও হিসেবে প্রশংসা পেয়েছেন অমল দত্ত, পি কে ব্যানার্জি , নইমুদ্দিনদেরও । প্রথম বাঙালি হিসেবে রাশিয়ার কিয়েভ স্টেট ইনস্টিটিউট থেকে অ্যাথলেটিক্স ও ফুটবলের ফিজিও হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন । ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সফর, ভারতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে এশিয়ান কাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ , ঢাকা সাফ গেমস, বাংলাদেশে প্রি ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল, কলকাতা সাফ গেমস, এশিয়ান গেমস, নেহরু গোল্ড কাপ, অনূর্ধ্ব 17 ফুটবল দল নিয়ে পশ্চিম জার্মানি সহ একাধিক দেশে গেছেন তিনি । ফিজিও হিসেবে মিলেছে বিদেশি সম্মানও । স্পোর্টস মেডিসিন নিয়ে কাজ করেছেন CAB-তে । 1971 সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্পোর্টস অফিসার নিযুক্ত হন দীপ্তিবাবু ।

দীপ্তিকুমার ঘোষ
ভারতীয় দলের সঙ্গে দীপ্তিকুমার ঘোষ

অবসর নেওয়ার পরে বর্ধমানের রসুলপুরের উলারা গ্রামের বাড়িতেই বাগানে গাছের পরিচর্যার পাশাপাশি লেখালেখি করে সময় কাটে 82 বছরের প্রাক্তন ফিজিওর । স্মৃতি বলতে এখন শুধু পুরোনো দিনের ছবি ও মেডেল । দীপ্তিবাবু বলেন, ‘‘ খেলোয়াড়দের শরীর স্বাস্থ্য কীভাবে সুস্থ রাখা যায় তা নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করেছি । সচিন, সৌরভ, কপিল দেব সবাইকে পরামর্শ দিয়েছি কীভাবে ফিটনেস বাড়ানো যায় । ইন্ডিয়া A টিমের সঙ্গে ইংল্যান্ড সফর করেছিলাম ৷ সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ, ম্যানেজার ছিলেন কিরমানি । সেই সময় আমার কাজ ছিল কোনও খেলোয়াড় চোট পেলে কত তাড়াতাড়ি তাকে সুস্থ করে তোলা যায় সেই চেষ্টা করা ৷ ফলে তাদের কাছে আমি দাদা হয়ে উঠেছিলাম ।’’

ফিজিও দীপ্তিকুমার ঘোষের বর্তমানে খোঁজ নেয় না কেউ

স্মৃতিতে ভেসে তিনি ভারতীয় ফুটবল দলের দায়িত্ব পালনের গল্পও বলেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘ বাইচুং একবার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল । দ্রুততার সঙ্গে সেই চোট সারিয়ে তুলি । বাইচুং খুব খুশি হয়েছিল । অন্যদিকে এশিয়ান গেমসে আমার সঙ্গে কোচের কিছুটা মনোমালিন্য হয় । আসলে কোচ প্রতিদিন অনেক রাত পর্যন্ত খেলোয়াড়দের নিয়ে মিটিং করতেন, যেটা আমার অপছন্দ ছিল । কারণ দিনে প্র্যাক্টিস করার পরে রাত জেগে মিটিং শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর । যাইহোক সেই সময় ম্যানেজার ছিলেন চুনী গোস্বামী । তিনি সমস্যা মিটিয়ে দেন । তবে সাফল্যের সঙ্গেই সারাজীবন কাজ করে গেছি ।’’

দীপ্তিকুমার ঘোষ
আজও চালান সাইকেল, 82 বছরেও যুবক দীপ্তিকুমার ঘোষ

তবে এই অশীতিপর ফিজিওর ক্ষোভও জমেছে অনেক ৷ সাফল্যের সঙ্গে 20-25 বছর কাজ করেছেন ৷ সচিন, সৌরভ, দ্রাবিড়দের ফিট থাকার মন্ত্র দিয়েছিলেন ৷ শিখিয়েছিলেন স্পিড স্টামিনা কীভাবে ধরে রাখতে হয় ৷ বর্তমানে সেই মানুষটার এখন আর কেউ খোঁজ নেয় না । যোগাযোগ রাখে না কেউ । আগে রাহুল দ্রাবিড় নিয়মিত চিঠি লিখতেন ৷ তবে সৌরভ, বাইচুং ও বিজয়ন মাঝে মাঝে ফোন করে তাঁর খোঁজ নেয় ।

রসুলপুর,(বর্ধমান), 19 আগস্ট : পূর্ব বর্ধমান জেলার রসুলপুরের উলারা গ্রাম ৷ এখানেই বসবাস করেন দীপ্তিকুমার ঘোষ ৷ একসময় ভারতীয় ক্রিকেটে ফিজিওর কাজ করা দীপ্তিবাবু আজ অশীতিপর বৃদ্ধ ৷ কিন্তু এখনও সাইকেল নিয়ে এলাকা চষে বেড়ান তিনি ৷ তবে শুধুমাত্র ভারতীয় ক্রিকেট দল না, ফুটবল দলেও ফিজিওর কাজ করেছেন দীপ্তিবাবু ৷ কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি সচিন, সৌরভ, দ্রাবিড়, কপিলদেব সঙ্গে ৷ ফুটবলে আই এম বিজয়ন, বাইচুং ভুটিয়ার সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি ৷ কিন্তু বর্তমানে এই ফিজিওর খোঁজ নেয় না কেউ ৷

ভারতীয় ক্রিকেটের 'A' দল, সিনিয়র ক্রিকেট দল, জাতীয় ফুটবল টিমে দীর্ঘদিন ফিজিওর দায়িত্ব ছিল দীপ্তিকুমার ঘোষ । ইংল্যান্ড, মরিশাস, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, সহ একাধিক দেশে টিমের সঙ্গে ছিলেন । কপিল দেব, সচিন , সৌরভ, দ্রাবিড়, লক্ষণ থেকে শুরু করে বাইচুং, বিজয়নদের দিয়েছিলেন ফিটনেসের মন্ত্র । দিনরাত এক করে তাদের সুস্থ রাখার জন্য ছুটে বেড়াতেন তিনি । কোনও খেলোয়াড় চোট পেলে কীভাবে তাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলা যায় । তাদের সারাদিনের রুটিন তৈরি করে নজরদারি সবই সামলাতেন একার হাতে । এককথায় সচিন, সৌরভ, বাইচুংদের কাছে তিনি দাদা হয়ে উঠেছিলেন ।

দীপ্তিকুমার ঘোষ
স্মৃতি সরণীতে দীপ্তিকুমার ঘোষ

ভারতীয় ফুটবল দলে কনস্টানটাইন, মিলোভান, জোসেফ গেলি, আক্রমাভদের মতো বিদেশি কোচদের সঙ্গে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন । ফিজিও হিসেবে প্রশংসা পেয়েছেন অমল দত্ত, পি কে ব্যানার্জি , নইমুদ্দিনদেরও । প্রথম বাঙালি হিসেবে রাশিয়ার কিয়েভ স্টেট ইনস্টিটিউট থেকে অ্যাথলেটিক্স ও ফুটবলের ফিজিও হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন । ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সফর, ভারতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে এশিয়ান কাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ , ঢাকা সাফ গেমস, বাংলাদেশে প্রি ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল, কলকাতা সাফ গেমস, এশিয়ান গেমস, নেহরু গোল্ড কাপ, অনূর্ধ্ব 17 ফুটবল দল নিয়ে পশ্চিম জার্মানি সহ একাধিক দেশে গেছেন তিনি । ফিজিও হিসেবে মিলেছে বিদেশি সম্মানও । স্পোর্টস মেডিসিন নিয়ে কাজ করেছেন CAB-তে । 1971 সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্পোর্টস অফিসার নিযুক্ত হন দীপ্তিবাবু ।

দীপ্তিকুমার ঘোষ
ভারতীয় দলের সঙ্গে দীপ্তিকুমার ঘোষ

অবসর নেওয়ার পরে বর্ধমানের রসুলপুরের উলারা গ্রামের বাড়িতেই বাগানে গাছের পরিচর্যার পাশাপাশি লেখালেখি করে সময় কাটে 82 বছরের প্রাক্তন ফিজিওর । স্মৃতি বলতে এখন শুধু পুরোনো দিনের ছবি ও মেডেল । দীপ্তিবাবু বলেন, ‘‘ খেলোয়াড়দের শরীর স্বাস্থ্য কীভাবে সুস্থ রাখা যায় তা নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করেছি । সচিন, সৌরভ, কপিল দেব সবাইকে পরামর্শ দিয়েছি কীভাবে ফিটনেস বাড়ানো যায় । ইন্ডিয়া A টিমের সঙ্গে ইংল্যান্ড সফর করেছিলাম ৷ সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ, ম্যানেজার ছিলেন কিরমানি । সেই সময় আমার কাজ ছিল কোনও খেলোয়াড় চোট পেলে কত তাড়াতাড়ি তাকে সুস্থ করে তোলা যায় সেই চেষ্টা করা ৷ ফলে তাদের কাছে আমি দাদা হয়ে উঠেছিলাম ।’’

ফিজিও দীপ্তিকুমার ঘোষের বর্তমানে খোঁজ নেয় না কেউ

স্মৃতিতে ভেসে তিনি ভারতীয় ফুটবল দলের দায়িত্ব পালনের গল্পও বলেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘ বাইচুং একবার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল । দ্রুততার সঙ্গে সেই চোট সারিয়ে তুলি । বাইচুং খুব খুশি হয়েছিল । অন্যদিকে এশিয়ান গেমসে আমার সঙ্গে কোচের কিছুটা মনোমালিন্য হয় । আসলে কোচ প্রতিদিন অনেক রাত পর্যন্ত খেলোয়াড়দের নিয়ে মিটিং করতেন, যেটা আমার অপছন্দ ছিল । কারণ দিনে প্র্যাক্টিস করার পরে রাত জেগে মিটিং শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর । যাইহোক সেই সময় ম্যানেজার ছিলেন চুনী গোস্বামী । তিনি সমস্যা মিটিয়ে দেন । তবে সাফল্যের সঙ্গেই সারাজীবন কাজ করে গেছি ।’’

দীপ্তিকুমার ঘোষ
আজও চালান সাইকেল, 82 বছরেও যুবক দীপ্তিকুমার ঘোষ

তবে এই অশীতিপর ফিজিওর ক্ষোভও জমেছে অনেক ৷ সাফল্যের সঙ্গে 20-25 বছর কাজ করেছেন ৷ সচিন, সৌরভ, দ্রাবিড়দের ফিট থাকার মন্ত্র দিয়েছিলেন ৷ শিখিয়েছিলেন স্পিড স্টামিনা কীভাবে ধরে রাখতে হয় ৷ বর্তমানে সেই মানুষটার এখন আর কেউ খোঁজ নেয় না । যোগাযোগ রাখে না কেউ । আগে রাহুল দ্রাবিড় নিয়মিত চিঠি লিখতেন ৷ তবে সৌরভ, বাইচুং ও বিজয়ন মাঝে মাঝে ফোন করে তাঁর খোঁজ নেয় ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.