লন্ডন, 7 ফেব্রুয়ারি: ইংলিশ প্রিমিয়র লিগ বনাম ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ৷ ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আইনি লড়াই শুরু হয়েছে ৷ ফুটবলের সবচেয়ে ধনী এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় লিগের আয়োজকরা সোমবার তাদের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে (Manchester City Came to Face English Premier League Charges) ৷ সেখানে 100টিরও বেশি আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ক্লাব অফিসিয়ালদের বিরুদ্ধে ৷ পাশাপাশি, গত 4 বছর ধরে চলা একটি তদন্তে লাগাতার অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৷
2009 সাল থেকে ইংলিশ প্রিমিয়র লিগের আর্থিক পর্যবেক্ষণের নিয়ম লঙ্ঘন করার কয়েক ডজন অভিযোগ জমা পড়েছে ম্যান সিটি ক্লাবের বিরুদ্ধে ৷ যে সময় ম্যাঞ্চেস্টার সিটি আবু ধাবির শাসক পরিবারের মালিকানাধীন ছিল ৷ উল্লেখ্য, 2018 সালে ক্লাবের অভ্যন্তরীণ বেশকিছু কথোপকথন ফাঁস হয়ে যায় ৷ খুব সম্ভবত ক্লাবের ইন্টারনাল ডাটা হ্যাক করে তা প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয় ৷ এর পরেই গত 5 বছর ধরে প্রায় 30টির বেশি অভিযোগের তদন্তে ইংলিশ প্রিমিয়র লিগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে ৷
ফাঁস হওয়া তথ্যগুলি ইউয়েফার তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখেন ৷ জানা যায়, সেই সব তথ্যগুলি ইউরোপিয়ান ফুটবল সংস্থার তৈরি করা আর্থিক নিয়ম লঙ্ঘন সংক্রান্ত ছিল ৷ এর পরে তদন্তের ভিত্তিতে ইউয়েফা নিযুক্ত বিচারকদের কমিটি ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র উপরে 2 বছরের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অংশ নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ৷ 2020 সালের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ম্যান সিটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে যায় ৷ সেখানে আদালত সেই নির্দেশকে খারিজও করে দেয় ৷ মূলত, ফুটবল খেলার স্বার্থকে বাঁচাতে ৷
কী ছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি'র লিক হওয়া ওই তথ্যে ?
2018 সালের নভেম্বরে, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি আবু ধাবির শাসক পরিবারের মালিকানায় থাকার সময় ইংলিশ প্রিমিয়র লিগ-সহ তিনটি খেতাব জেতে ৷ ম্যানেজার পেপ ওয়ার্দিওলার কোচিংয়ে এই খেতাব জিতেছিল ম্যান সিটি ৷ কিন্তু, তার পরেই ক্লাবের বাণিজ্যিক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায় ৷ জার্মান ম্যাগাজিন ‘ডের স্পিগেল’ তখন ক্লাবের অভ্যন্তরীণ নথি এবং কথোপকথনের উপর ভিত্তি করে ‘ফুটবল লিকস সিরিজ’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ৷
সেই প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, ক্লাব অফিসিয়ালরা এফএফপি অর্থাৎ, ‘ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়ম ভেঙে (Manchester City Brakes UEFA FFP Rules) ৷ উয়েফার এই নিয়ম অনুযায়ী, ক্লাবগুলি তাঁদের বার্ষিক মোট আয়ের থেকে বেশি খরচ করতে পারবে না ৷ কিন্তু, আবু ধাবির শাসক পরিবারের মালিকানাধীন থাকার সময় সেই নিয়ম ভাঙা হয়েছে ৷ প্রতিবেদনে প্রকাশিত নথির ছবি ছিল, 2009-2013 সাল পর্যন্ত ক্লাবের ফুটবল ম্যানেজার রোবের্তো মানচিনির চুক্তিপত্র ৷
আরও পড়ুন: তুরস্কের ভূমিকম্পের পর নিখোঁজ প্রাক্তন চেলসি ফরওয়ার্ড ক্রিশ্চিয়ান আতসু
অভিযোগ রোবের্তো মানচিনি নিজের চুক্তির বাইরে বার্ষিক বেতন ডবল করিয়েছিলেন আবু ধাবির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে ৷ আর তাও নিয়ম ভেঙে ৷ সেই নথি প্রকাশ করা হয় ৷ ম্যাঞ্চেস্টার সিটি সেই নথিগুলিকে অস্বীকার করেনি ৷ কিন্তু, পালটা দাবি করা হয়েছে, সেই নথিগুলি পর্তুগিজ নাগরিক রুই পিন্টো অনৈতিকভাবে হাতিয়েছেন ৷ পরে লিসবনের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলে ৷ সেই মামলার রায় এপ্রিল মাসে বেরবে ৷