মলপ্পুরম, 30 এপ্রিল : মণিপুরের বিরুদ্ধে দলের তিন নম্বর গোল যাঁর পা থেকে এসেছিল, সেই দিলীপ ওরাওঁয়ের বাড়িতে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই । নিতান্তই নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা দিলীপ ফুটবলকে আশ্রয় করে জীবনের আলো খুঁজছেন । অধিনায়ক মনতোষ চাকলাদারের সন্তোষ ট্রফিতে বাংলাকে নেতৃত্ব দেওয়ার গল্প তাঁর চুঁচুড়ার পাড়ার অনেকেরই অজানা । বাবা, মা দু'জনের অক্লান্ত পরিশ্রমে ওদের ফুটবলকে ঘিরে গড়ে ওঠা স্বপ্ন বেঁচে রয়েছে । বাংলার কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য দলের ছেলেদের প্রাত্যহিক জীবনের লড়াইয়ের আগুনটাই মাঠে বাস্তবায়ন করতে চাইছেন ।
সোমবার সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে বাংলার সামনে কেরালা (kerala vs bengal santosh trophy final) । শেষবার কেরলের মাটিতে চল্লিশ বছর আগে ফাইনাল খেলেছিল বাংলা । অধিনায়ক প্রিয়ন্ত সিং বলছেন, “চল্লিশ বছর পর ফের খেতাবের সামনে আমরা । খালি হাতে ফেরা চলবেই না । নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দিতে আমরা প্রস্তুত ।” শনিবার বিকেলে হোটেলের ছাদে রিকভারি সেশন করে দলকে ছুটি দিয়েছিলেন কোচ । ফাইনাল নিয়ে বাড়তি চিন্তা করার পরিবর্তে ম্যাচটি উপভোগ করার কথা বলেছেন । রবিবার শেষবারের মতো নিজেদের ঝালিয়ে নিয়ে মিশন ফাইনালে নামছে বাংলা । নিজেদের মাঠে খেলা বলে দর্শক সমর্থন থাকবে বিপক্ষের । তবে বিষয়টি চিন্তিত নন কোচ রঞ্জন । "আমরা গ্রুপ ম্যাচে 75 মিনিট পর্যন্ত সমানে লড়াই করে ব্যক্তিগত ভুলের খেসারত দিয়ে ম্যাচ হেরেছিলাম । দলগত পারফরম্যান্সে ওদের থেকে এগিয়ে । আমাদের লক্ষ্য হবে দ্রুতলয়ে আক্রমণ করে গোল তুলে নেওয়া । যেভাবে আমরা খেলছি তাতে সুযোগ নষ্ট না করলে সোমবার না জিতে মাঠ ছাড়ার কোনও কারণই নেই", আত্মবিশ্বাসী শোনায় বাংলার কোচের গলা ।
আরও পড়ুন : Klopp at Anfield till 2026 : স্ত্রী-র ইচ্ছেতেই আরও দু'বছর লিভারপুলে, চুক্তি বাড়িয়ে জানালেন ক্লপ
সন্তোষ ট্রফির প্রতি ম্যাচেই প্রচুর সমর্থক খেলা দেখতে আসছেন । সোমবারও প্রচুর কেরল সমর্থক ফাইনাল ম্যাচে তাদের রাজ্যের দলকে সমর্থন করতে আসবেন । সন্তোষ ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচেই 2-0 গোলে হারতে হয়েছিল প্রিয়ন্ত কুমার সিং-ফরদিন আলি মোল্লাদের । এবার ফাইনাল । অতীত ভুলে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর কথা বলছেন প্রাক্তনরা । বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি এনে দেওয়া কোচ মৃদুল বন্দোপাধ্যায় বলছেন, ''রঞ্জন ওর ছেলেদের কী বলেছে আমি জানি না । তবে আমি হলে বলতাম, ঘরের মাঠ বা বাইরের মাঠ, অতীতের ফলাফল এসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল ৷ এটা 90 মিনিটের লড়াই । নতুন একটা ম্যাচ । বাংলা যে আজও ফুটবলে শ্রেষ্ঠ এটা বোঝাতে হবে । তোমরা যে ভাল ফুটবলার সে বিষয় সন্দেহ নেই । তোমাদের ফাইনালে যাওয়া তোমাদের যোগ্যতার প্রমাণ । সুতরাং নিজেদের খেলাটা খেল ।''
বাংলা দলের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ছ'বার বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি জেতা প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকারও । তিনি বলেন, ''বাংলা সবসময়ই ফুটবলে এগিয়ে । ফের জিতলে সেটা আবারও প্রমাণিত হবে । এবারও বাংলা দল খুব ভাল খেলছে । মণিপুরকে হারিয়ে বাংলা সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে উঠেছে এটা খুব আনন্দের খবর ।'' কেরালার মাঠে খেলা হলেও তা নিয়ে বাংলা দলের চিন্তার কারণ নেই বলেই মনে করছেন গৌতম সরকার । তিনি বলেন, ''আমরা এর আগে পঞ্জাবের মাটিতে পঞ্জাবকে, গোয়ার মাটিতে গোয়াকে হারিয়ে এসেছি ৷ তাই সমস্যা হবে না ।''