মণিপুর, 22 মার্চ: জয় দিয়ে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করল ঈগর স্টিমাচের ভারত (India Wins Football Tournament)। প্রতিপক্ষ মায়ানমারকে 1-0 গোলে উড়িয়ে দিল 'মেন ইন ব্লু'। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে এক মাত্র গোলটি করেন অনিরুদ্ধ থাপা । ফিফা ক্রমপর্যায়ে পিছিয়ে থাকলে মেঠো দ্বৈরথে ভারতীয় দলের শক্ত গাঁট মায়ানমার। তাই মনিপুরের কুমারী লাম্পাক স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের (Tri-Nation International tournament) ম্যাচ দেখতে আগ্রহ ছিল তুঙ্গে ।
সদ্য আইএসএল জার্নি শেষ করা ফুটবলাররাই স্টিমাচের দলে রয়েছেন । সেদিক থেকে লিগ খেলার ক্লান্তি ছিল ভারতীয় দলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সুনীল ছেত্রীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলে আকাশ মিশ্র,মহম্মদ ইয়াসির,রাহুল ভেকে, অনিরুদ্ধ থাপারা ক্লান্তি সরিয়ে নিংড়ে দিলেন। কার্যত প্রতিপক্ষের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নিলেন। প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমনের ঝড় তোলেন ভারতীয় ফুটবলাররা। পাঁচ মিনিটে সুনীল ছেত্রীর উদ্দেশ্যে বক্সের মধ্যে অনিরুদ্ধ থাপার (Anirudh Thapa) বাড়ানো বল কোনওরকমে বিপদমুক্ত করেন মায়ানমার ডিফেন্ডার।
10 মিনিটে ফের অনিরুদ্ধ থাপার সেন্টারে সুনীল ছেত্রীর হেড অল্পের জন্য বাইরে যায়। 18 মিনিটে সুনীল ছেত্রীকে বক্সের মধ্যে ল্যাং মারলে পেনাল্টির দাবি করে ভারত। কিন্তু নাকচ করে দেন য়েফারি। আক্রমণের চাপে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া মায়ানমার প্রতিআক্রমণে খেলায় ফেরার চেষ্টা করে।
থাঙ পেইংয়ের শট ভারতীয় গোলরক্ষক অমরিন্দর সিংকে পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছিল। তবে প্রতিপক্ষ আক্রমণ হানলেও রাশ আলগা করেনি ভারত। তিরিশ এবং 32 মিনিটে পরপর দুটো সুযোগ নষ্ট করেন ভারত অধিনায়ক। 36 মিনিটে মায়ানমারের অনুগ থু-এর দূরপাল্লার শট অমরিন্দর বাঁচান। 42 মিনিটে সুনীল ছেত্রী হেড করে মায়ানমার আক্রমণ বিপদমুক্ত করতে গিয়ে আত্মঘাতী গোলের পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। এবারও রক্ষাকর্তা হন অমরিন্দর সিং। এই সময় আক্রমণ প্রতিআক্রমণে খেলা জমে উঠেছিল।
আরও পড়ুন: শিয়রে বিশ্বকাপ ! ঘরের মাঠে সিরিজ হেরে প্রশ্নের মুখে বিরাট-রোহিতরা
বিরতির আগে রাহুল ভেকের সেন্টার থেকে ভারতের একমাত্র গোলটি করেন অনিরুদ্ধ থাপা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে সমতায় ফেরার চেষ্টা শুরু করে মায়ানমার। 50 মিনিটে অধিনায়ক লুইনের চেষ্টা প্রতিহত করেন অমরিন্দর সিং। পালটা আক্রমণে ভারতও ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করে। ইয়াসিরের নেওয়া শট বাঁচান মায়ানমার গোলরক্ষক। ফের আক্রমণ হানতে থাকে মায়ানমার। এই সময় তুল্যমূল্য লড়াইয়ে ম্যাচ জমে ওঠে। তবে বুধবার সন্ধ্যা সুনীল ছেত্রীর জন্য ছিল না। 75 মিনিটে করমর্দনের দূরত্ব থেকে সুনীলের নেওয়া হেড মায়ানমার গোলরক্ষকের হাতে পৌঁছায়। বল বাঁচাতে বাড়তি চেষ্টা করতে হয়নি। পুরো ম্যাচে সুনীল সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হ্যাটট্রিক করে ফেলতে পারতেন।
87 মিনিটে সুনীলের বাড়ানো বল বক্সের মধ্যে অনিরুদ্ধ থাপাকে বাড়ালে তাঁকে ল্যাং মেরে ফেলে দেন মায়ানমার ডিফেন্ডার। ফের পেনাল্টির দাবি নাকচ করেন রেফারি। তবে পাহাড়ের উচ্চতায় খেলা হওয়ায় মায়ানমার ফুটবলাররা ম্যাচের শেষ দিকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। অন্যদিকে আইএসএল-এর ধকল যাতে দলের পারফরম্যান্সে না পড়ে তার জন্য একাদশে বেশ কিছু বদল করেছিলেন স্টিমাচ। ফলে সারা ম্যাচ জুড়েই ক্লান্তি গ্রাস করতে পারেনি ভারতকে। জয় দিয়ে শুরু। পরের ম্যাচে সুনীলদের প্রতিপক্ষ কিরঘিজস্তান। প্রথম জয়ে ট্রফির দৌড়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে মেন ইন ব্লু।