ETV Bharat / sports

Chandan Banerjee Demise: প্রয়াত চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে শেষ শ্রদ্ধা প্রাক্তন অধিনায়ককে - প্রয়াত চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়

ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন লাল-হলুদের প্রাক্তন অধিনায়ক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ক্লাবে প্রাক্তন অধিনায়কের মরদেহে বৃহস্পতিবার শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন ফুটবলার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, সমীর চৌধুরী, সুমিত বাগচী, বিকাশ পাঁজি, অলোক মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তনীরা ।

ETV Bharat
প্রয়াত ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়ক
author img

By

Published : Jun 29, 2023, 4:10 PM IST

ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়কের প্রয়াণে বর্তমান কর্তার বক্তব্য

কলকাতা, 29 জুন: চন্দনহারা ময়দান । বৃহস্পতিবার ভোর রাতে 88 বছর বয়সে বেহালায় প্রয়াত হলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়ক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় । দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি । হাসপাতালে ভর্তি করেও শেষরক্ষা হয়নি। এদিন হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী এবং পুত্র-সহ পরিবারকে । তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে ময়দানে । বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ শেষবারের জন্য ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে নিয়ে আসা হয় । অর্ধনমিত রাখা হয় লাল হলুদ পতাকা ।

ক্লাবে প্রাক্তন অধিনায়কের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন ফুটবলার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, সমীর চৌধুরী, সুমিত বাগচী, বিকাশ পাঁজি, অলোক মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তনরা । ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রয়াত প্রাক্তন অধিনায়ককে শ্রদ্ধা জানান শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার ।

1954 সালে মিলন সমিতির জার্সিতে ময়দানে আত্মপ্রকাশ চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের । পরের বছর 1955 সালে তিনি ভবানীপুর ক্লাবে সই করেন । এরপর জর্জ টেলিগ্রাফে চলে যান । সেখানে দুরন্ত ফুটবল খেলেন । বিশেষ করে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তাঁর অসাধারণ ফুটবল নজর কাড়ে তদানীন্তন লাল-হলুদ কর্তাদের । 1963 সালে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় সই করেন ইস্টবেঙ্গলে। 1966 সালে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক হন তিনি । তাঁর অধিনায়কত্বে ইস্টবেঙ্গল কলকাতা লিগ এবং আইএফএ শিল্ড জয়ের কৃতিত্ব লাভ করেছিল। বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরপর চোট আর আঘাত তাঁর ফুটবল জীবন দীর্ঘায়িত হতে দেয়নি । ইস্টবেঙ্গল অন্তপ্রাণ চন্দনকে 2015 সালে 'জীবনকৃতি' সম্মানে সম্মানিত করা হয় । কর্মজীবন কাস্টমসে । তাই কাস্টমস ক্লাব ঘুরে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে আসে এদিন।

শোকস্তব্ধ প্রাক্তনরা ৷ শ্যাম থাপার কথায়, "1966 সালে আমি প্রথম ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে খেলার জন্য সই করি । তখন দলের অধিনায়ক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় । শুরুতে দলে খুব একটা সুযোগ পাচ্ছিলাম না । রাজস্থান ম্যাচে সুযোগ পেয়ে হ্যাটট্রিক করলাম ।‌ ম্যাচ শেষে আমাকে কোলে তুলে সারা মাঠ ঘুরেছিলেন অধিনায়ক চন্দন দা । ওনাকে ভোলা সম্ভব নয় ।"

আরও পড়ুন : ইডেনে মোহনবাগানের পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও হেনস্থার শিকার, সোশালে ভাইরাল ভিডিয়ো

অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, "কলকাতা ময়দানে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানুষ সত্যিই বিরল ।‌ ফুটবলার হিসেবে যেমন বড় মাপের ছিলেন, ঠিক তেমনই মানুষ হিসেবেও খুব বড় মনের ছিলেন । বহু ফুটবলারের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । 1989 সালে আমি সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা দলের অধিনায়ক । আর সেবার ম্যানেজার ছিলেন চন্দন দা । সমস্যায় পড়লে চন্দন দা'র কাছে ছুটে যেতাম । আজ মানুষটি প্রয়াত হয়েছেন । এখন সমস্যায় পড়লে ভাবছি কার কাছে ছুটে যাব ।"

ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের কথায়, "ইস্টবেঙ্গল ক্লাব অন্তপ্রাণ ছিলেন চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্লাব ছাড়া অন্য কিছু তাঁর ভাবনায় ছিল না । কিছুদিন আগে যখন চন্দন দা'কে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম ৷ তখনও তাঁর মুখে ইস্টবেঙ্গলের কথা। আমাকে বলেন, নিতু ক্লাবটাকে একটু ভালো জায়গায় নিয়ে যা । মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করলেও, তিনি তাঁর পরিবারের আগে ক্লাবের কীভাবে ভালো হয়, সেটাই চেয়েছেন। এমনকী সদস্য, সমর্থকদের প্রতি কেউ খারাপ ব্যবহার করলে চন্দন দা প্রতিবাদ করেছেন। এরকম মানুষ কলকাতা ময়দানে বিরল।"

ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়কের প্রয়াণে বর্তমান কর্তার বক্তব্য

কলকাতা, 29 জুন: চন্দনহারা ময়দান । বৃহস্পতিবার ভোর রাতে 88 বছর বয়সে বেহালায় প্রয়াত হলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়ক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় । দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি । হাসপাতালে ভর্তি করেও শেষরক্ষা হয়নি। এদিন হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী এবং পুত্র-সহ পরিবারকে । তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে ময়দানে । বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ শেষবারের জন্য ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে নিয়ে আসা হয় । অর্ধনমিত রাখা হয় লাল হলুদ পতাকা ।

ক্লাবে প্রাক্তন অধিনায়কের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন ফুটবলার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, সমীর চৌধুরী, সুমিত বাগচী, বিকাশ পাঁজি, অলোক মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তনরা । ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রয়াত প্রাক্তন অধিনায়ককে শ্রদ্ধা জানান শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার ।

1954 সালে মিলন সমিতির জার্সিতে ময়দানে আত্মপ্রকাশ চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের । পরের বছর 1955 সালে তিনি ভবানীপুর ক্লাবে সই করেন । এরপর জর্জ টেলিগ্রাফে চলে যান । সেখানে দুরন্ত ফুটবল খেলেন । বিশেষ করে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তাঁর অসাধারণ ফুটবল নজর কাড়ে তদানীন্তন লাল-হলুদ কর্তাদের । 1963 সালে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় সই করেন ইস্টবেঙ্গলে। 1966 সালে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক হন তিনি । তাঁর অধিনায়কত্বে ইস্টবেঙ্গল কলকাতা লিগ এবং আইএফএ শিল্ড জয়ের কৃতিত্ব লাভ করেছিল। বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরপর চোট আর আঘাত তাঁর ফুটবল জীবন দীর্ঘায়িত হতে দেয়নি । ইস্টবেঙ্গল অন্তপ্রাণ চন্দনকে 2015 সালে 'জীবনকৃতি' সম্মানে সম্মানিত করা হয় । কর্মজীবন কাস্টমসে । তাই কাস্টমস ক্লাব ঘুরে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে আসে এদিন।

শোকস্তব্ধ প্রাক্তনরা ৷ শ্যাম থাপার কথায়, "1966 সালে আমি প্রথম ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে খেলার জন্য সই করি । তখন দলের অধিনায়ক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় । শুরুতে দলে খুব একটা সুযোগ পাচ্ছিলাম না । রাজস্থান ম্যাচে সুযোগ পেয়ে হ্যাটট্রিক করলাম ।‌ ম্যাচ শেষে আমাকে কোলে তুলে সারা মাঠ ঘুরেছিলেন অধিনায়ক চন্দন দা । ওনাকে ভোলা সম্ভব নয় ।"

আরও পড়ুন : ইডেনে মোহনবাগানের পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও হেনস্থার শিকার, সোশালে ভাইরাল ভিডিয়ো

অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, "কলকাতা ময়দানে চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানুষ সত্যিই বিরল ।‌ ফুটবলার হিসেবে যেমন বড় মাপের ছিলেন, ঠিক তেমনই মানুষ হিসেবেও খুব বড় মনের ছিলেন । বহু ফুটবলারের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । 1989 সালে আমি সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা দলের অধিনায়ক । আর সেবার ম্যানেজার ছিলেন চন্দন দা । সমস্যায় পড়লে চন্দন দা'র কাছে ছুটে যেতাম । আজ মানুষটি প্রয়াত হয়েছেন । এখন সমস্যায় পড়লে ভাবছি কার কাছে ছুটে যাব ।"

ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের কথায়, "ইস্টবেঙ্গল ক্লাব অন্তপ্রাণ ছিলেন চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্লাব ছাড়া অন্য কিছু তাঁর ভাবনায় ছিল না । কিছুদিন আগে যখন চন্দন দা'কে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম ৷ তখনও তাঁর মুখে ইস্টবেঙ্গলের কথা। আমাকে বলেন, নিতু ক্লাবটাকে একটু ভালো জায়গায় নিয়ে যা । মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করলেও, তিনি তাঁর পরিবারের আগে ক্লাবের কীভাবে ভালো হয়, সেটাই চেয়েছেন। এমনকী সদস্য, সমর্থকদের প্রতি কেউ খারাপ ব্যবহার করলে চন্দন দা প্রতিবাদ করেছেন। এরকম মানুষ কলকাতা ময়দানে বিরল।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.