কলকাতা, 3 সেপ্টেম্বর: ডার্বিতে হারের সঙ্গে সঙ্গে মরশুমের প্রথম টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে আগেই ৷ তাই শনিবাসরীয় কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচকে কেবল সমর্থকরাই নন, নেহাতই নিয়মরক্ষার ম্যাচ হিসেবে দেখছিলেন কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনও (Stephen Constantine) ৷ কিন্তু যে সকল সদস্য-সমর্থকরা এদিনের ম্যাচে চোখ রাখতে পারলেন না, তারা হয়তো মিস করে গেলেন অনেককিছু ৷ ডেস বাকিংহ্যামের দলকে চার গোল দিয়ে মরশুমের প্রথম জয় তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল ৷ ডুরান্ড কাপের শেষ ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি'কে 4-3 গোলে হারাল লাল-হলুদ (East Bengal beats Mumbai City FC 4-3) ৷ জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক ক্লেইটন সিলভা (Cleiton Silva) এবং সুমিত পাসি (Sumit Passi) ৷ ম্যাচের সেরা ব্রাজিলিয়ান ক্লেইটনই।
ডুরান্ড কাপের ম্যাচগুলোকে মরশুমের প্রস্তুতি পর্ব হিসেবে দেখার কথা বলেছিলেন কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন। প্রথম দু'ম্যাচে গোলশূন্য ড্রয়ে পয়েন্ট এসেছিল। ডার্বিতে হারতে হয়েছিল আত্মঘাতী গোলে। এমতাবস্থায় অবস্থায় জয় তুলে নেওয়া কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল লাল-হলুদের সামনে। কিন্তু চ্যালেঞ্জ নিয়ে সফল হলেন ক্লেইটন, অমরজিৎ, সুমিতরা। মরশুমের প্রথম জয় তুলে নেওয়াই কেবল নয়, 2018 পর প্রথমবার মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে পুরো পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল ইমামি ইস্টবেঙ্গল।
গুরুত্বহীন ম্যাচে নামার আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন লাল-হলুদ হেডস্যার। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণে বাজিমাতই ছিল পাখির চোখ। কৌশল সফলের প্রথম ইঙ্গিত 17 মিনিটে। জেরির সেন্টারে অরক্ষিত সুমিত পাসি হেড করে মুম্বইয়ের জালে বল ঢোকান। চার মিনিট পরে ফের গোল। এবার মুম্বই সিটি এফসি বক্সের বাইরে থেকে অসাধারন ফ্রিকিকে গোল ক্লেইটন সিলভার। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার নতুন মরশুমে দলের ভরসা হতেই পারেন। 82 মিনিটে দলের জয়সূচক গোলও এল তাঁরই পা থেকে। অমরজিৎ সিং'য়ের বাড়ানো সেন্টার সুযোগসন্ধানী ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের ৷
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে গুরুত্বহীন ম্যাচে পরীক্ষা চলবে স্টিফেনের
জোড়া গোল করে ডার্বিতে আত্মঘাতী গোলের লজ্জা স্খালন করলেন রাউন্ড গ্লাস থেকে আসা ফুটবলার। প্রথম গোলের পরে 34 মিনিটে দলের তিন নম্বর গোলও এল তাঁর পা থেকে। যদিও দু'গোলে পিছিয়ে পড়ে প্রত্যাঘাত শানায় মুম্বই। 27 মিনিটে বিপিন সিং'য়ের বাড়ানো বল দিয়াজ পেরেরা চেস্ট ট্র্যাপে নামালে তা থেকে ব্যবধান কমান গ্রেগ স্টুয়ার্ট। আট মিনিট পরে ফের গোল মুম্বইয়ের। বিরতির আগে ছাংতের জোড়া গোলে সমতা ফিরিয়ে ম্যাচে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে মুম্বই ৷
বিরতির পর গোলের সংখ্যা বৃদ্ধির জোরালো ইঙ্গিত থাকলেও তা হয়নি। বিরতির আগের ভুল শুধরে নেওয়া লাল-হলুদ রক্ষণ মুম্বই আর ভাঙতে পারেনি। পালটা আক্রমণে জয়সূচক গোলে মরশুমের প্রথম জয় পায় ইস্টবেঙ্গল ৷ ক্লেইটন সিলভা এবং অমরজিৎ কিয়ামের যুগলবন্দি এই গোল। পাঁচ পয়েন্টে ডুরান্ড কাপের পরের পর্বে যাওয়ার ছাড়পত্র না মিললেও লড়াইয়ের স্ফুলিঙ্গ জোগালো নিশ্চিতভাবে ৷ যা মরশুমের বাকি সময় লাল-হলুদ জনতাকে স্বপ্ন দেখাবে বৈকি।