কলকাতা, 29 ডিসেম্বর: বর্ষশেষের আবহে চলে গেলেন অলিম্পিয়ান নিখিল নন্দী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল 91। স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্র রয়েছেন প্রয়াত অলিম্পিয়ানের।
56 সালের মেলবোর্ন অলিম্পিকের ভারতীয় ফুটবল দলের সহ-অধিনায়ক নিখিল নন্দী কলকাতা ময়দানের অজাতশত্রু ব্যক্তি। 1958 সালে ইস্টার্ন রেল কলকাতা লিগ জিতেছিল। বড় দলের বাইরে সেটাই ছিল কোনও ছোট দলের লিগ জয়ের কীর্তি। সেই দলে ছিলেন নিখিল নন্দী। চলতি বছরের শুরুতে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছিলেন। তিনিও কলকাতা লিগ জয়ী ইস্টার্ন রেল দলের সদস্য ছিলেন। পিকে ব্যানার্জীর পরে চুনী গোস্বামীর প্রয়াণ। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল নিখিল নন্দীর নাম।
সেপ্টেম্বরে কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। সেই সময় অসুস্থ অলিম্পিয়ানের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ক্রীড়া দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লাও পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই সময় 45 দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। তারপর বাড়ি ফিরলেও শারীরিক ভাবে সুস্থ ছিলেন না। নিখিল নন্দীর পুত্র সমীর বলেছেন, "কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর বাবা আর সেভাবে সুস্থ হননি। মাঝে আরও তিনবার অল্পদিনের জন্য হলেও হাসপাতালে রাখতে হয়েছিল। এদিন সকাল থেকে শরীর খারাপ হয়। দুপুর আড়াইটার সময় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বাবা।"
ইতিমধ্যে রাজ্য ক্রীড়াদপ্তর এবং আইএফএর তরফে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা হয়েছে। 56 সালে মেলবোর্ন অলিম্পিকে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব সামলানো ফুটবলারটি 52 সালে হেলিসিঙ্কি অলিম্পিকে স্ট্যান্ডবাই ফুটবলার হিসেবে ছিলেন। হেলিসিঙ্কিতে না যাওয়ার রাগে ইস্টার্ন রেল ছেড়ে মোহনবাগানের পক্ষে সই করেন। কিন্তু রেল কর্তারা তাঁকে দলে ফেরাতে নিখিল নন্দীর মায়ের দ্বারস্থ হন। তারপর মায়ের নির্দেশে ইস্টার্ন রেলের দলে ফিরে যান। তারপর আর কোনও দিন দলবদলের চিন্তা করেননি।
আরও পড়ুন: প্রয়াত ব্ল্যাক ক্যাপসদের টেস্ট নায়ক জন রেড
খেলা ছাড়ার পরে কোচিং করালেও তিনি নতুন প্রতিভার অন্বেষণে ব্যস্ত থেকেছেন। লকডাউনের আগে পর্যন্ত বিভিন্ন কোচিং ক্যাম্পে ব্যস্ত থাকতেন। সদাব্যস্ত নিখিল নন্দী এবার ফুটবললোকে। "একে একে সবাই চলে গেল। আমি বড় একা হয়ে যাচ্ছি," অসহায় শোনায় আর এক অলিম্পিয়ান এবং নিখিল নন্দীর সহযোদ্ধা বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়কে।