কলকাতা, 5 অগস্ট : ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি বিতর্কে আর নিজেকে জড়াতে রাজি নন ক্লাবের প্রাক্তন সচিব তথা আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্ত । ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি সমস্যায় তিনি নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন ৷ ক্ষোভের সুরে বললেন, "শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপেও সমস্যার সমাধান হতে পারে ৷ তবে আগে আমার প্রয়োজনীয়তা ওদের মনে হয়নি ৷ এখন হাড়ি কাঠে গলা দেওয়ার পর যতটুকু বাঁচানো গিয়েছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত ক্লাব কর্তাদের ৷"
লগ্নিকারীর সঙ্গে চুক্তি বিতর্ক এখন অদ্ভুত র্পযায়ে গিয়ে পৌঁছেছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই বিতর্কে ইতি টানতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তাদের 'একটু ছেড়ে খেলার' নির্দেশ দিয়েছিলেন । ক্লাব কর্তারা লগ্নিকারীর পাঠানো চূড়ান্ত চুক্তিতে সাতটি পরিবর্তন বা শিথিলতার দাবি করেছিলেন । মধ্যস্থতায় ক্লাবের প্রাক্তন সচিব তথা আইনজীবী পার্থসারথী সেনগুপ্তের শরণাপন্ন হয়েছিল । লগ্নিকারীর সঙ্গে কথা বলে ক্লাবের দাবির সিংহভাগ আদায়ে সফল হয়েছেন প্রাক্তন সচিব । কিন্তু পরবর্তী সময়ে ক্লাব আরও দুটো বদলের আর্জি নিয়ে পার্থবাবুর কাছে অনুরোধ করে । কিন্তু এবার ক্লাবের অনুরোধ রক্ষায় আর ভূমিকা গ্রহণ করতে রাজি নন তিনি । এবং নিজের অবস্থান ক্লাব কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন ।
এই বিষয়ে ইটিভি ভারতকে পার্থবাবু বলেছেন, "এই বিতর্ক কিভাবে মিটবে তা আমি বলতে পারব না । তবে আমি আর উদ্যোগ নেব না বা উদ্যোগী হব না, এটা বলতে পারি । যে সাতটি অনুরোধ ক্লাব করেছিল তা লগ্নিকারীর সঙ্গে কথা বলে করেছি । ক্লাব এবার আরও দুটো পরিবর্তনের কথা বলছে । আমি খারিজ করেছি । এখন এই সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে হবে কিনা সেটা সময় বলবে । প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেও হতে পারে । তবে আমি আর নেই ৷"
ক্লাব কেন এতদিন পরে তাঁর মত অভিজ্ঞ আইনজীবীর দ্বারস্থ হল তার উত্তর নেই । প্রায় একবছর আগে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের সময় আইনজীবী তথা প্রাক্তন সচিবের সাহায্য নেওয়া হয়নি । এই বিষয়ে পার্থসারথি সেনগুপ্ত বলেছেন, "দেখুন এর উত্তর ওরাই দিতে পারবেন ৷ আমাদের প্রয়োজনীয়তা সেইসময় মনে হয়নি । এখন মউ চুক্তি করে এসে হাড়িকাঠে গলা দিয়ে ফেলেছে । এই অবস্থায় যতটা বাঁচানো গিয়েছে তাতেই তুষ্ট থাকা উচিত । আমি শুধু পরিস্থিতি বলতে পারি । সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই ৷"
আরও পড়ুন : east bengal : চুক্তি জট খুলতে প্রাক্তন সচিবের শরণাপন্ন ইস্টবেঙ্গল
লগ্নিকারীর সংস্থার কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর কলকাতায় রয়েছেন । এই রাজ্যে বিনিয়োগ করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করবেন । লগ্নিকারীর তরফে বলা হচ্ছে, পুরোটাই এখন ক্লাবের কোর্টে । ক্লাব কর্তারা অবস্থা সামাল দিতে পদত্যাগের রাস্তায় হেঁটে নির্বাচনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন বলে ময়দানে শোনা যাচ্ছে । নির্বাচন হলে কি পার্থসারথি সেনগুপ্ত ক্লাব প্রশাসনে ফের পা দেবেন ? বলছেন, "আমি ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক, সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে থাকব । কিন্তু আর কোনওভাবে প্রশাসনিক লড়াইয়ে যাব না ৷"
চুক্তি স্বাক্ষরে ঢিলেমি করে ক্লাবের ফুটবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি । চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলে ইস্টবেঙ্গলের মাঠে নামা হবে না । আইএসএল খেলা হবে না । সদস্য সমর্থকদের কাছে উত্তর কর্তাদের দিতে হবে ৷ জানিয়েছেন পার্থবাবু । চাপের খেলা অব্যাহত । এখন দেখার 'যত কাণ্ড ইস্টবেঙ্গলে'- এই পর্বের শেষ কোথায় ।