কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর : মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধান । বিষোদগার বদলে গেল জয়ধ্বনিতে । আলে-স্যার জিন্দাবাদ ধ্বনি শুনতে শুনতে গাড়িতে উঠলেন আলেয়ান্দ্রো মেনেনদেস গার্সিয়া । কালীঘাট এম এসকে 4-2 গোলে হারিয়ে খেতাবি দৌড়ে টিকে রইল ইস্টবেঙ্গল । জোড়া গোল করে ম্যাচের সেরা হাইমে স্যান্টোস কোলাডো । বাকি দুটো গোল বিদ্যাসাগর সিং ও কালীঘাট এম এস এর বিদেশি ডিফেন্ডার কারামোকোর আত্মঘাতী । কালিঘাট এম এসের হয়ে গোল পরিবর্ত তুহিন শিকদার ও রাহুল পাসোয়ানের ।
পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে হারের আক্ষেপ এখনও ইস্টবেঙ্গলজুড়ে । ম্যাচের আগে দলের হতশ্রী ফুটবল নিয়ে গালমন্দ করা সদস্য সমর্থকরা ম্যাচ শেষে অঙ্ক কষতে বসলেন । কালীঘাটের বিরুদ্ধে জয় ইস্টবেঙ্গলকে 7 ম্যাচে 13 পয়েন্টে পৌছে দিল । শীর্ষে থাকা পিয়ারলেসের সঙ্গে পয়েন্টের দিক থেকে একবিন্দুতে লাল হলুদ । কিন্তু জহর দাসের দল কম ম্যাচ খেলার কারণে এগিয়ে । তাই পিয়ারলেসের হারে বড় দুই দলের খেতাব জয়ের আশা থাকবে । নচেৎ নয় । আলেয়ান্দ্রো অবশ্য অন্য দলের ওঠা পড়ায় নজর দেওয়ার বদলে নিজের দলের শক্তি দুর্বলতা নিয়ে মনসংযোগ করতে চান । লিগ হাতের বাইরে, সমালোচকদের এই মন্তব্যের উত্তরে লাল হলুদ চাণক্য বলছেন সবশেষে যাবতীয় উত্তর দেবেন তিনি ।
দলকে খেলার অযোগ্য মাঠে জয় পাওয়ার দৌড়ে নামতে হচ্ছে দেখে ফের সরব আলেয়ান্দ্রো । দলের গোল হজম করা প্রসঙ্গেও বেহাল মাঠকেই কাঠগড়ায় তুললেন । মাঠ যে খারাপ ছিল তা স্বীকার করলেন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা ।
বেহাল মাঠ, হারের ধাক্কার রেশ কাটিয়ে জয় জরুরি হলেও ইস্টবেঙ্গলের শুরুটা বৃহস্পতিবারেও ভালো হয়নি । 39 মিনিটে কালীঘাটের তুহিন শিকদারের গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল । এক মিনিট পরে প্রত্যাঘাত লাল হলুদের । জুয়ান গঞ্জালেসের কর্নার গোলে সরাসরি ঢোকার মুখে তা চাপড়ে বের করেন কালীঘাট গোলরক্ষক সোমনাথ দত্ত । কিন্তু ফিরতি বল জালে পাঠান বিদ্যাসাগর সিং ।
মার্তি, কোলাডো এবং জুয়ান গঞ্জালেসকে প্রথম একাদশে রেখে দল সাজিয়েছিলেন আলেয়ান্দ্রো । কাদা মাঠে প্রথম থেকে খেলতে নেমে বা পায়ের জাদুতে মাঠ মাতালেন । একই সঙ্গে শুকনো মাঠে ভালো খেলার জোরালো ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন । জোড়া গোল করলেও কোলাডো পরিচিত ছন্দে শুরু করতে ব্যর্থ । মনে করা হয়েছিল IFA-র সতর্কতার প্রভাব তাঁর ফুটবলে । 61 মিনিটে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যায় । পিন্টু মাহাতার জোরালো শট তুহিন দাস বিপন্মুক্ত করার সময় তা কারামোকোর মাথায় লেগে গোলে চলে যায় । আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার সঙ্গে খেলা থেকে হারিয়ে যেতে থাকে কালীঘাট । এসময় বেহাল মাঠেও পাসিং ফুটবলের ঝলক দেখা গেল লাল হলুদ ফুটবলারদের পায়ে । ফলস্বরূপ জুয়ানের পাস ধরে বিদ্যাসাগর সিংয়ের শট কালীঘাট ডিফেন্ডার বাঁচালেও ফিরতি বল জালে পাঠান কোলাডো ।
ছন্দহীন কোলাডো গোল পেতেই প্রত্যাশিত মানে খেলতে থাকেন । 81 মিনিটে রাহুল পাসোয়ানের গোলে ব্যবধান কমালেও ফের গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন কোলাডো । 67 মিনিটে কালীঘাটের বিদেশি স্ট্রাইকার কোয়াসি বিশ্রী ফাউল করায় রেফারি লাল কার্ড দেখান । বাকি সময় কালীঘাটকে দশজনে খেলতে হয় ।
এই ম্যাচে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বদল করলেন আলেয়ান্দ্রো । যা হয়তো সোমবারের ভবানীপুর ক্লাবের বিরুদ্ধে নামার আগের প্রস্তুতি । কল্যাণী স্টেডিয়ামে খেলা । ভালো মাঠে খেলার সুযোগকে আশীর্বাদ বলছেন লাল হলুদ হেডস্যার। কারণ তাঁর অঙ্কে পরবর্তী সব ম্যাচে সাফল্য ট্রফি এনে দিতে পারে । জয়ধ্বনিতে মাঠ ছাড়লেও অঙ্ক কষা শুরু লাল হলুদ হেডস্যারের ।