কলকাতা, 19 নভেম্বর : আই লিগে কোচ হিসেবে কিবু ভিকুনা সাফল্য পেলেও ISL ভিন্নমানের টুর্নামেন্ট । তাঁর কোচিং দক্ষতাকে সম্মান করলেও তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার কথাই মাথায় ঘুরছে সবুজ মেরুন শিবিরের । এভাবেই প্রতিপক্ষ শিবিরের হেড কোচের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন ATK-মোহনবাগান কোচ আন্তেনিও লোপেজ হাবাস । শুক্রবার গোয়ার মাটিতে ISL-এর বল গড়াচ্ছে । অন্যবারের তুলনায় এবছরের ISL ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আয়োজিত হচ্ছে । যেখানে কোভিড চ্যালেঞ্জ সামলে পারফরম্যান্স করার দায় রয়েছে। প্রথম ম্যাচে গতবছরের চ্যাম্পিয়ন এটিকে-মোহনবাগানের সামনে কেরালা ব্লাস্টার্স। চ্যাম্পিয়ন হলেও ঈশ্বরের আপন দেশের ক্লাব দলটির বিরুদ্ধে রয় কৃষ্ণরা জয়ের পতাকা তুলতে ব্যর্থ। তবে প্রথম ম্যাচে নামার আগে গতমরশুমের পরিসংখ্যানে ফুটবলারদের চোখ রাখতে না বলেছেন হাবাস। অতিমারি পরিবেশে প্রয়োজনীয় অনুশীলন সম্ভব হয়নি। এরপাশাপাশি সবুজ মেরুন ব্রিগেড একমাত্র দল যারা অনুশীলন ম্যাচে অংশ নেয়নি। অর্থাৎ নিজেদের দেখে নেওয়ার সুযোগ নেই হাবাসের সামনে। তবে তা নিয়ে আক্ষেপ এবং অজুহাত না খাড়া করে এটিকে-মোহনবাগানের হেডস্যার নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেলাকে যথেষ্ট মনে করছেন। কারণ তাঁর দলের খেলোয়াড়দের পারস্পরিক প্রস্তুতি ম্যাচ যথেষ্ট। যার তুলনা অন্য দলের থেকে যথেষ্ট ভালো। কোনও রাখঢাক না করে চ্যাম্পিয়ন দলের কোচের মুখে প্রস্তুতি নিয়ে সন্তোষ। তবে জৈব বলয়ে থাকতে হওয়া বিরক্তিকর মানছেন। কারণ এইসময় পরিবার এবং কাছে লোকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও নেই। এবছর ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলতে হবে। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই অনেক রকম মন্তব্য করেছেন। হাবাস বলছেন, তাঁর দলের ছেলেরা এই দর্শকশূন্য পরিবেশে গতবছরের ফাইনাল খেলেছে। তাই কিছুটা হলেও ধারণা রয়েছে।
ISL-র শুরুতেই দুটো কঠিন ম্যাচ। কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে খেলার পরেই ডার্বির চ্যালেঞ্জ। হাবাস বলছেন, "কেরালা ব্লাস্টার্স কিংবা অন্যদল খেলতে তো হতই। তাই কেরালা কিংবা ইস্টবেঙ্গল প্রতিপক্ষ নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। আমি প্রতিটি দলকেই সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। এই দুটো দলের সঙ্গে খেলা বলে বাড়তি গুরুত্ব, এরকম ভাবার কোনও কারণ নেই।"
বলা হচ্ছে এবছর আরও শক্তিশালী এটিকে-মোহনবাগান। রয় কৃষ্ণ ডেভিড উইলিয়ামস গতমরশুমের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রধান কারিগর। দুজনের নিয়মিত গোল করা কাজটি সহজ করে দিয়েছিল। নিজের দলের শক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সবুজ মেরুন চাণক্য বলছেন, "আমার দলে একাধিক ভালো ফুটবলার রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোটেশন করে খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আমার কাছে দল সবার আগে। প্রতিটি ফুটবলার সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই রয় কৃষ্ণ বাড়তি গুরুত্ব পাবে, এমন ভাবার কারণ নেই।"
প্রথম ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে শব্দ খরচ করতে রাজি নন। "ইস্টবেঙ্গল নিয়ে আগামী সপ্তাহে কথা বলব। এখন শুধু কেরালা ব্লাস্টার্স আমার চিন্তায়। " কড়া ট্যাকেল স্প্যানিশ হেডস্যারের।
চলতি বছরে মোহনবাগানের সঙ্গে গাঁটছড়া বেধেছে এটিকে। ফলে প্রত্যাশার পারদ চড়তে শুরু করেছে। হাবাস বলছেন, "সমর্থকরা প্রতি ম্যাচে তিন পয়েন্ট চায়। আমিও তা পছন্দ করি।"
কোচিং স্টাইল নিয়ে ছুঁতমার্গ নেই। স্প্যানিশ, জার্মান, ব্রাজ়িল যাই হোক না কেন একটা প্রতিযোগিতা মূলক মানসিকতা গড়ে তোলাই লক্ষ্য। যাতে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায়। আপাতত দলের প্রস্তুতিতে খুশি হাবাস।
প্রস্তুতি নিয়েছেন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে। ধাপে ধাপে এগোনোর কথা বলছেন। দলের ভারতীয় ফুটবলারদের পারফরম্যান্স এ খুশি। সন্দেশ ঝিঙ্গানের প্র্যাকটিস খুশি করলেও প্রথম একাদশ নিয়ে মুখ খোলেননি। তাই বলাই যায় আস্তিনে তাস লুকিয়ে রেখে ISL-এ যাত্রা শুরু করছেন আন্তেনিও লোপেজ হাবাস। কারণ জানেন জয় দিয়ে যাত্রা শুরু কাজটা সহজ করে দেয়। প্রতিপক্ষ কেরালা ব্লাস্টার্সের নতুন কোচ এবং দল নিয়ে শ্রদ্ধার সুর হাবাসের মুখে। তবে দিনের শেষে জয়ই পাখির চোখ তা বারবার বুঝিয়ে দিলেন।