কল্যাণী, 7 ফেব্রুয়ারি: শতবর্ষের বছরে ইস্টবেঙ্গলের হাল বড়ই করুণ ৷ ইন্ডিয়ান অ্যারোজ়ের পর শুক্রবার কল্যাণীতে আইজ়ল FC-র কাছেও 1-0 গোলে হেরেছে লাল-হলুদ ৷ পড়শি ক্লাব যখন একের পর এক ম্যাচ জিতে খেতাব জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন ইস্টবেঙ্গল লাল-হলুদ শিবিরকে ঘিরে ধরেছে অবনমনের আশঙ্কা ৷
সাতদিনের পারফরম্যান্সের নিরিখে মার্তি ক্রেসপিকে দলে জায়গা দেননি কোচ মারিও রিবেরা । আজকের পর দলের বাকিদের পারফরম্যান্স গ্রাফ নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায় । ক্রোমাকে সামনে রেখে আক্রমণভাগ সাজিয়ে ছিলেন মারিও রিবেরা । একটু নিচ থেকে কোলাডোকে খেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু আইজ়ল FC-র দুই দীর্ঘদেহী বিদেশি ডিফেন্ডারের মাঝখানে বোতলবন্দী ছিলেন ক্রোমা । প্রথমার্ধে ব্রেন্ডনের পাস থেকে ক্রোমার পুশ পোস্টে লেগে প্রতিহত হওয়া ছাড়া লাল-হলুদ ফুটবলারদের দেখে মনে হয়নি তাঁরা গোল করতে পারেন । বিরতির আগে শেষ কুড়ি মিনিট ম্যাচের দখল ছিল ইস্টবেঙ্গলের পায়ে । সেই সময়টুকু ব্রেন্ডনের ছটফটানি দেখে মনে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ডানা মেলবে । স্কোরিং বুট হারিয়ে ফেলার পাশাপাশি গোল করার চেষ্টার ইচ্ছেটাও নেই কোলাডোর খেলায় । একই কথা বলা যায় জুয়ান মেরে গঞ্জালেস সম্বন্ধেও । ভারতীয় ফুটবলারদের খামতি ঢাকেন ভালোমানের বিদেশিরা । একইভাবে বিদেশি ফুটবলারদের খারাপ দিনে জ্বলে ওঠেন দেশীয় ফুটবলাররা । কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান দলের দুই পক্ষই খারাপ ফর্মের অন্ধকারে । 76 মিনিটে জাস্টিন মরগ্যানের পাস থেকে আর্জেন্টিনার ফুটবলার মাতিয়াস ভেরনের জয়সূচক গোলে আরও বেশি দিশেহারা হয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল । এই নিয়ে আই লিগের প্রথম পর্বের 10টি ম্যাচের মধ্যে 5টিতে হারল ইস্টবেঙ্গল । এই ইস্টবেঙ্গলকে দেখে বিস্মিত আইজ়ল FC কোচ রোজারিও । লাল-হলুদের পারফরম্যান্স গ্রাফ দিনের পর দিন কেন নিম্নমুখী, কারও কাছে সেই ব্যাখ্যা নেই ৷
তবে আশা ছাড়ছেন না মারিও রিবেরা। আইজ়ল FC-র বিরুদ্ধে হারের পরে সমর্থকরা ক্ষোভের আগুন উগরে দিলেও ইস্টবেঙ্গল কোচ অবশ্য বলছেন এই ম্যাচে তাঁরা জিততে পারতেন। তাঁর কথায়, "আমরা জেতার মতোই খেলেছি । প্রতিপক্ষ একটা সুযোগ কাজে লাগিয়ে জিতে গেল । আমি হতাশ কারণ জেতার মত খেলেও ম্যাচটা হাতছাড়া হল ৷" এই পরাজয়ের ফলের অবনমনের শঙ্কা জাঁকিয়ে বসছে ইস্টবেঙ্গলে। 10 ম্যাচে 11 পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের আট নম্বরে নেমে এসেছে লাল-হলুদ ব্রিগেড । ইস্টবেঙ্গলের আত্মবিশ্বাস যেখানে পৌঁছেছে তাতে জয়ে ফেরাটা মুশকিল বলে মনে করছে সমর্থকরা ৷ তাই হারতে হারতে টেবিলের শেষ প্রান্তে গিয়ে ঠেকলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই ৷
![Mario Rivera](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/5995502_mario.jpg)
মারিও সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর মতে,"আমি অবনমনের শঙ্কা নিয়ে চিন্তিত নই। আমি বিশ্বাস করি দল চ্যাম্পিয়ন হতে পারে । আমাদের হাতে তিরিশ পয়েন্টের খেলা বাকি রয়েছে । এই ধরনের পরিস্থিতি ফুটবলে স্বাভাবিক । কখনও গোল হবে কখনও হবে না ৷ একবার জিততে শুরু করলে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে।" অ্যারোজ় ম্যাচের মত এই ম্যাচেও বিরতির পর একটা সুযোগে ম্যাচ হাতছাড়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন মারিও রিবেরা।
সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে কল্যাণীতে হাজার পাঁচেক দর্শক খেলা দেখতে এসেছিলেন । ফাঁকা গ্যালারি দেখে এমন দাবি বিশ্বাস করা যেমন কঠিন তেমনই ইস্টবেঙ্গল যে জয়ে ফিরতে পারে তা আশা করাটাও খুব শক্ত । দু'মাস আগে পয়েন্ট টেবিলের একনম্বরে থাকা দলের উপর অবনমনের করাল ছায়া । চ্যাম্পিয়নশিপের আশা ছেড়ে এখন শতবর্ষে এই বড় লজ্জা কীভাবে এড়ানো যাবে, সেই দিকেই নজর ইস্টবেঙ্গলের ৷