হায়দরাবাদ, 20 এপ্রিল : করোনা প্রাণ কেড়েছে ভারতের কিংবদন্তী ফুটবলার আহমেদ হোসেন ওরফে লালার ৷ 89 বছর বয়সে গত 16 এপ্রিল বেঙ্গালুরুর বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ৷ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ভারতীয় ফুটবলের প্রাক্তন এই ডিফেন্ডার ৷ তবে, উচ্চমানের ফুটবলার হয়েও, কোনও দিনই সেভাবে দাম পেলেন না তিনি ৷ 1956 সালে মেলবোর্ন অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জয়ী ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন লালা ৷
1932 সালে হায়দরাবাদে জন্ম আহমেদ হোসেন ওরফে লালার ৷ নিজের ফুটবল কেরিয়ার শুরু করেছিলেন হায়দরাবাদ সিটি পুলিশের হয়ে ৷ যে দলের কোচ ছিলেন জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার রহিম ৷ হায়দরাবাদ সিটি পুলিশের হয়ে খেলার সময় 1951 সালে ভারতীয় দলের হয়ে প্রথম সুযোগ পান লালা ৷ আর সেই সুযোগটাই ছিল দিল্লিতে আয়োজিত এশিয়ান গেমসে ৷ সেই এশিয়ান গেমসে ভারত সোনা পেলেও, তারকা ফুটবলারদের উপস্থিতিতে তিনি প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি ৷
এর পর 1956 সালে হায়দরাবাদের হয়ে সন্তোষ ট্রফিতে অসাধারণ খেলার ফল হিসেবে সেই বছর মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে সুযোগ পান আহমেদ হোসেন ৷ সেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে 4-2 গোল জয়ে ভারতের হয়ে সেন্টার ডিফেন্ডারের ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে ৷ এর পরেই আহমেদ হোসেনের কাছে সুযোগ আসে কলকাতার ক্লাবে ফুটবল খেলার ৷ প্রসঙ্গত, হায়দরাবাদ সিটি পুলিশের কোচ রহিম কখনই চাননি নিজামের শহরের ফুটবলাররা কলকাতার নামী-দামি ক্লাবগুলোতে খেলুক ৷
আরও পড়ুন : এএফসি চ্যাম্পিয়ন লিগে কঠিন ম্য়াচ এফসি গোয়ার
কিন্তু, তৎকালীন বোম্বে এবং কলকাতার নামী ক্লাবগুলি মোটা টাকা ও গাড়ির প্রস্তাব নিয়ে হায়দরাবাদ থেকে ফুটবলারদের নিজেদের ক্লাবে নিয়ে যেতেন ৷ ঠিক তেমন ভাবেই আহমেদ হোসেনের কাছেও কলকাতার শতাব্দী প্রাচীন মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে খেলার প্রস্তাব আসে ৷ সেই প্রস্তাবে সারা দিয়ে তিনি মোহনবাগানের হয়ে খেলতে হায়দরাবাদ ছাড়েন ৷ এর পর মহামেডান স্পোর্টিংয়ের হয়েও খেলেন তিনি ৷
আহমেদ হোসেন পরবর্তীকালে তিনটি ডুরান্ড কাপ এবং ছ’টি রোভার্স কাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন ৷ তবে এত বড় মানের ফুটবলার হয়েও তাঁর যোগ্য সম্মান তিনি পাননি বলে তাঁর কাছের লোকজনের অভিযোগ ৷ অবসর নেওয়ার পর কোচিং করানো শুরু করেন তিনি ৷ 1982 সালে এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলের প্রধান কোচ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি ৷