কলকাতা, 4 জুলাই: ট্রফির আলোর পেছনে লুকিয়ে থাকা আক্ষেপের নাম সন্দীপন দাস । দেশের হয়ে অনুর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ দলে থাকার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যাটিং-অলরাউন্ডার এখন ভবানীপুর ক্লাবের সাফল্যের সেনাপতি । জগদ্দলের ছেলে সন্দীপন গত তিনবছর ধরেই ক্লাবের নেতৃত্বের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন । কালীঘাটকে কার্যত ব্যাকফুটে ঠেলে কলকাতা লিগ ক্রিকেট জিতেছে ভবানীপুর । তাতে বড় ভূমিকা রয়েছে অধিনায়কের (Bhawanipore Club clinched Kolkata League Cricket) ।
ফাইনালে 44 রান এসেছে সন্দীপনের ব্যাট থেকে। বড় স্কোর না হলেও প্ররোজনীয় সময়ে সন্দীপনের 44 রান বড় ইনিংসের মতই গুরুত্বপূর্ণ । শেষ চার বছরে তিনবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হল ভবানীপুর । দলে সেই অর্থে বড় নাম নেই । তবে যারা আছেন, সকলেই পোড়খাওয়া । ফলে তারকার ঝলকানি নয়, 'দশে মিলে করি কাজ' মানসিকতা নিয়েই লিগ ক্রিকেটে সবার ওপরে ভবানীপুর ।

“ব্যক্তিগতভাবে দলের জয়ই আমার প্রাপ্তি । কারণ, যখনই খেলতে নামি তখন জয় তুলে নেওয়াই পাখির চোখ থাকে । ফাইনালে 44 রান করেছি । যা পরিস্থিতির বিচারে প্রয়োজনীয় । কোয়ার্টার ফাইনালে ডবল সেঞ্চুরি করে ছিলাম । আমাদের বোলাররা অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে । অলোকপ্রসাদ সিং, দূর্গেশ দুবে, আমির গনি, প্রদীপ্ত প্রামাণিক সবাই ভালো বল করেছে । বিশেষ করে অলোকপ্রসাদ, দূর্গেশ দুবে সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে দারুন বল করেছে । মোহনবাগান, কালীঘাটের মত অভিজ্ঞ দলকে কম রানে আটকে রাখার কৃতিত্ব তো দিতেই হবে ।” দল নিয়ে তৃপ্তি ঝরে পড়ছিল ভবানীপুর অধিনায়কের গলায়।
যদিও দলের পারফরম্যান্স তৃপ্তি দিলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি সেভাবে না মেলায় কোথাও একটা আক্ষেপ লুকিয়ে বাঙালি অলরাউন্ডারের গলায় । সন্দীপন বলেন, “দেখুন খেলোয়াড়দের জীবনে আক্ষেপ তো থাকবেই । বাংলা দলের জার্সি যতক্ষণ না ফের গায়ে চড়াতে পারছি, ততক্ষণ তো একটা আক্ষেপ থাকেই । তবে তার প্রভাব নিজের পারফরম্যান্সে পড়তে দিই না । মাঠে যখন নামি, তখন ভবানীপুরকে জিতিয়ে নিয়ে আসাই একমাত্র লক্ষ্য থাকে ।" বাংলা দলের হয়ে শেষবার প্রতিনিধিত্ব করেছেন 2016 সালে ।

আরও পড়ুন : ইস্টবেঙ্গলে ক্রিকেট পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে, তাই সবুজ-মেরুনে প্রণব
আমি বাংলার অনুর্ধ্ব-23 দলের অধিনায়কত্ব করেছেন । মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিও রয়েছে । শুধু তাই নয়, 2012 সালে উন্মুক্ত চাঁদের নেতৃত্বাধীন ভারতের অনুর্ধ্ব-19 বিশ্বকাপ দলেও ছিলেন । তবে প্রথম একাদশে সুযোগ হয়নি । বিশ্বকাপে না খেললেও এশিয়া কাপে খেলেছেন সন্দীপন । আরও বড় মঞ্চে নিজেকে দেখার স্বপ্ন ছিল । আপাতত বাংলা দলে প্রত্যাবর্তনের পাশাপাশি চাকরির খোঁজে রয়েছেন । সন্দীপন বলেন, “ক্রিকেটের পাশাপাশি ছোট একটা ব্যবসা রয়েছে । বাড়িতে বাবা-মা-স্ত্রী রয়েছেন । পরিবারের দায়িত্ব আমার ওপরে । ক্রিকেট খেলেই সব দায়িত্ব পালনের দায় ।” ট্রফির ঔজ্বল্যে জীবনের ক্রিকেটের বাইশ গজে নতুন করে স্ট্যান্স নিতে চান বঙ্গ ক্রিকেটের এই স্বপ্নসন্ধানী ।