নয়াদিল্লি, 18 অক্টোবর: আমেদাবাদের দর্শকদের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইসিসি-র কাছে অভিযোগ করেছিল পাকিস্তান ৷ কিন্তু সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে আইসিসি-র তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে ৷ কারণ, বৈষম্যবিরোধী কোডের পরিধি নির্দিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ ৷ একসঙ্গে অনেকের বিরুদ্ধে এই কোড ব্যবহার করে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না ৷
গত শনিবার আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিশ্বকাপের ম্যাচ হয় ৷ গ্যালারিতে এক লক্ষের বেশি দর্শক ছিলেন ৷ কিন্তু পাকিস্তানের সমর্থনে হাজির হয়েছিলেন মাত্র তিনজন ৷ তাও তারা মার্কিন-পাকিস্তানি সমর্থক ৷ এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের খেলোয়াড় মহম্মদ রিজওয়ানকে লক্ষ্য করে দর্শকরা কিছু স্লোগান দেন, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয় ৷ সেই নিয়ে পিসিবি অভিযোগ জানিয়েছিল আইসিসি-র কাছে ৷
পাকিস্তানের ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট মিকি আর্থারও দর্শকদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ৷ মাঠের সাউন্ড সিস্টেমে 'দিল দিল পাকিস্তান' বাজেনি বলে অভিযোগ করেছিলেন মিকি আর্থার ৷ এই নিয়ে বিসিসিআইয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, "দিল দিল পাকিস্তান বাজাতে কোনও সমস্যা ছিল না ৷ তবে পুরো ম্যাচে এমন কোনও মুহূর্ত কি ছিল, যেখানে আপনি সেই গানটি বাজাতে পারতেন ?"
অন্যদিকে জানা গিয়েছে, আইসিসি-র পিসিবির অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে ৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৷ এই নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআই ও আইসিসি-র প্রাক্তন এক কর্তা সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে বলেছে, "আইসিসি প্রতিটি অভিযোগকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখে ৷ তবে কোডটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে । আমি জানি না পিসিবি ঠিক কী দেখছে ! তবে কোনও বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া খুব কঠিন হবে ।"
তিনি আরও বলেন, "বর্ণবৈষম্যমূলক মন্তব্যের অভিযোগ থাকলে আইসিসি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারে ৷ কিন্তু হাজার হাজার মানুষ যদি স্লোগান দেয়, তাহলে আপনি কী করতে পারেন ? গ্যালারি থেকে ছোড়া কোনও 'মিসাইল' দ্বারা কোনও খেলোয়াড় আহত হননি ? পক্ষপাতদুষ্ট জনতাই প্রত্যাশিত । এই এলিট খেলায় এটাই চাপ ।"
উল্লেখ্য, খেলাধূলায় সম্মিলিত বর্ণবৈষম্যের একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ হল ব্রাজিলের ফুটবলার ভিনিসিয়াস জুনিয়রের ঘটনা ৷ তিনি গত মরসুমে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ভ্যালেন্সিয়ার মধ্যে চলা লা লিগা ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বর্ণবৈষম্যমূলক স্লোগানের শিকার হন ৷ তখন তিনি মাঠ ছেড়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ৷
যেহেতু এটি সম্মিলিতভাবে বর্ণবৈষম্যমূলক স্লোগান দেওয়ার ঘটনা ছিল, তাই সংশ্লিষ্ট দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভ্যালেন্সিয়ার হোম গ্রাউন্ড মেস্টাল্লা স্টেডিয়ামে পাঁচটি খেলার জন্য একটি স্ট্যান্ড আংশিক বন্ধ করার নির্দেশ দেয় ৷ আর ক্লাবটিকে 45 হাজার ইউরো জরিমানা করে ।
ওই ক্লাব এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার পরে শাস্তি কমিয়ে তিনটি খেলায় গ্যালারি আংশিক বন্ধ করার এবং 27 হাজার ইউরো জরিমানা করা হয় । সাতজনকে স্প্যানিশ পুলিশ শনাক্ত ও আটক করেছে ৷ তাঁদের তিন বছরের জন্য স্পেনের যেকোনও স্টেডিয়ামে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক-অনুরাগীদের ভিসা নিয়ে ঢিলেমি, ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগে আইসিসি'র দ্বারস্থ পাকিস্তান