কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি: বাংলার জয় গতকালই কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। আজ প্রত্যাশা মতোই রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে পৌঁছল বাংলা। শুক্রবার ইডেনে ঝাড়খণ্ডকে 9 উইকেটে হারিয়ে শেষচারে পৌঁছে গেলেন মনোজ তিওয়ারিরা। মনে হচ্ছিল ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) চতুর্থ দিন সকালের দিকেই খেলা শেষ করে দেবে বাংলা (Bengal)। তবে সেটা হল না। জয় পেতে লেগে পুরো প্রথম সেশন। রঞ্জি ট্রফিতে এই নিয়ে টানা তিনবার সেমিফাইনালে উঠল মনোজের দল। শেষ রঞ্জিতে ট্রফির লড়াইয়ে আর একটা জয় চাই মনোজদের।
এদিন সেমিফাইনালে প্রথম দিন থেকেই দাপট দেখায় বাংলা। ইডেনের চেনা মাঠে টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মনোজ। গত মরশুমেও মহেন্দ্র সিং ধোনির (Mahendra Singh Dhoni) রাজ্যদলকে হারিয়ে শেষ চারে গিয়েছিল বাংলা। এবারও যেন সেই ম্যাচের আবার পুনরাবৃত্তি ঘটল ৷ তবে গতবার কোয়ার্টারে বাংলার জয় সরাসরি আসেনি, ম্যাচ ড্র হওয়ায় প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে শেষ চারে উঠেছিলেন অভিমন্যু ঈশ্বরণরা। তবে এবার জয় এল সরাসরি। ফাইনালের আগে আর একটা মাত্র ম্যাচ।
67 রান করলে জয় আসবে, এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলার কাজী জুনেইদ সইফির উইকেট হারিয়ে প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন। অভিমন্যু ঈশ্বরণ 28 এবং সুদীপ ঘরামি 26 রানে অপরাজিত থাকলেন। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ বাংলার আকাশদীপ। দেড়ঘণ্টায় ঝাড়খণ্ডের বাকি তিন উইকেট তুলে নিয়ে সেমিফাইনালের পথ আরও সহজ করে নেয় বাংলা। সাত উইকেটে 162 রান নিয়ে খেলা শুরু করে 'বিরাট সিং'এর ঝাড়খণ্ড ৷ অল আউট হয়ে যায় 221 রানে। সুপ্রিয় চক্রবর্তীর অপরাজিত 83 বলে 81 রানই ঝাড়খণ্ডের লড়াইয়ের নির্যাস। বাংলার বোলারদের মধ্যে আকাশ ঘটক তিন উইকেট নিয়ে সেরা। আকাশদীপ, শাহবাজ আহমেদ দু'টো করে উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট মুকেশ কুমার, ঈশান পোড়েলের।
আরও পড়ুন: গতি-স্পিনের যুগলবন্দিতে সেমিফাইনালের দোরগোড়ায় বাংলা
এবার প্রশ্ন হল সেমি ফাইনালে বাংলার প্রতিপক্ষ কে? অর্থাৎ বাংলার বিপক্ষে কোন দল খেলবে? মধ্যপ্রদেশ না অন্ধ্রপ্রদেশ ? সেটাই এখন দেখার। প্রসঙ্গত, 8 ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে শেষ চারের ম্যাচ। চলবে 12 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে চলছে মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) ও অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhra Pradesh) মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল। সেই ম্যাচে জয়ী দলের বিরুদ্ধে সেমি ফাইনাল খেলবে বাংলা। যদি গতবারের চ্যাম্পিয়ন মধ্যপ্রদেশ এই ম্যাচ জিতে যায়, তাহলে বাংলাকে হোলকার স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলতে হবে। তবে হনুমা বিহারীর (Hanuma Vihari) দল ম্যাচটা জিতে গেলে, তাহলে বাংলা ফের একবার ইডেনে খেলার সুযোগ পাবে।
অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি জানান, তাঁরা দলের কোন জায়গাগুলো উন্নতি প্রয়োজন তা নিয়ে চিন্তা করতে চান। একবছর আগে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল। সেই ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই ফাইনালে যেতে চান তিনি। আপাতত দলের প্রতিটি ক্রিকেটার যেভাবে পারফরম্যান্স করেছে তাতে আশাবাদী অধিনায়ক। অধিনায়কের সুর কোচের গলাতেও ৷ তিনিও বর্তমানে দাঁড়িয়ে শেষ চারের লড়াইয়ের নীলছক সাজাতে চাইছেন। প্রতিষ্ঠা দিবসে জয়ের আনন্দ সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্য়ায় এবং অন্যান্য পদাধিকারীরা বাংলা দলকে অভিনন্দন জানান। সিএবি প্রেসিডেন্ট মিটিং করেন অধিনায়ক এবং কোচের সঙ্গে। স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, "মেসির আর্জেন্টিনা ছত্রিশ বছর পরে বিশ্বকাপ জিতেছে। এবছর আমাদের সুযোগ। আশা করছি আমরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। তবে এখন সেমিফাইনালের ভাবনা। তারপর ফাইনাল।"