কলকাতা : লকডাউনে কোনওরকমে ডাল-ভাত খেয়ে চলছিল জুনিয়র টেকনিশিয়নদের । সেই জুনিয়র টেশনিশিয়নদের, যাঁরা এই বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির স্তম্ভ । যাঁদের মেহনতে গড়ে ওঠে বিনোদনের এক একটি মুহূর্ত । আজ তাঁদের অনেকেই কর্মহীন হয়ে দিশা খুঁজে পাচ্ছেন না । কালার্স বাংলার চার চারটি ধারাবাহিক লকডাউনেই বন্ধ ঘোষিত হল । আর সেই কারণে বিপাকে পড়েছেন কলাকুশলী, জুনিয়র টেকনিশিয়নরা । ETV ভারত সিতারার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে হতাশা প্রকাশ করলেন হেয়ার ড্রেসার, মেকআপ আর্টিস্টরা ।
মেকআপ আর্টিস্ট সুখেন্দু আমাদের বলেন, "ধারাবাহিক বন্ধ হওয়াতে খুব খারাপ হয়েছে আমাদের । দু'মাস ধরে আমরা বসেই আছি । কোনও কাজকর্ম নেই, কোনও ইনকাম নেই । জমানো টাকা দিয়ে কতদিন চলবে ? বিষয়টা খুব খারাপ হল আমাদের জন্য । দেখা যাক কী হয় ।"
চারটে ধারাবাহিক বন্ধ হওয়ার মানে ৫০০-৬০০জন মানুষের কাজ হারানো । একটা মেগাসিরিয়াল করলে, অন্য মেগা সিরিয়ালে কাজ করা যায় না । তাই একটা মেগা বন্ধ হলে সকলেরই সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে । এব্যাপারে সুখেন্দু বাবু বললেন, "একটা মেগায় কাজ করার সময় অন্য মেগায় কাজ করা যায় না । 17 মার্চ পর্যন্ত কাজ হয়েছে । তারপর তো সব বন্ধ হয়ে যায় । আমরা আশাতেই ছিলাম, যে লকডাউন শেষ হলে হয়তো খুলবে । এখন হঠাৎ শুনলাম, যে ধারাবাহিকটাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । খুব দুশ্চিন্তায় আছি । নতুন করে লটারি খেলতে হবে আবার !"
অন্যদিকে কর্মসংস্থান হারিয়ে হেয়ার ড্রেসার ঝুমা আমাদের বলেন, "আমাদের পরিস্থিতি একেবারে খারাপ হয়ে গেছে । কোনও নোটিস ছাড়াই বন্ধ হয়ে গেল । এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতেই পারে না । আমাদের প্রত্যেকের আশা ছিল, লকডাউন উঠে গেলে আবার কাজে যোগ দেব । সবার হাত এখন শূন্য । পরে কী খাব সেটা জানি না । জুনিয়র টেকনিশিয়নদের জন্য তৈরি তহবিল থেকে আমরা কোনও টাকাও পাইনি । সেটা দেওয়া হয়েছিল তাঁদের, যাঁরা মেগা সিরিয়ালে কাজ করে না । আমরা যেমন মেগাতে কাজ করি, আমাদের বলা হয়েছি চ্যানেল থেকে আর্থিক সাহায্য করা হবে । সেটাও আমাদের শোনা কথাই ছিল । এখন জানতে পারছি, চ্যানেল আমাদের মেগাটাই বন্ধ করে দিচ্ছে । তবে চ্যানেল আমাদের পেমেন্ট মিটিয়ে দিয়েছিল ।"
প্রায় চোখের জল ফেলে ঝুমা বলেন, "আমাদের অবস্থা এখন খুব খারাপ । লকডাউন উঠে গেলেও আমাদের জন্য নতুন কাজ কি আর চট করে শুরু হবে ? না খেয়ে মরতে হবে ।"