কলকাতা : বিকল্প থিয়েটার নিয়ে কাজ করায় কোনও বিকল্প নেই বর্ষীয়ান নাট্যব্যক্তিত্ব প্রবীর গুহর । এই লকডাউনের মধ্যেও লেখালেখি চলছে তাঁর । চলছে বাড়ির কাজ শেখাও । বিদেশে যাওয়ারও কথা ছিল তাঁর । ETV ভারত সিতারার সঙ্গে ফোনের ওপ্রান্ত থেকে জমিয়ে আড্ডা দিলেন প্রবীর গুহ ।
প্রবীরবাবু বলেন, "আমি তো ভালো আছি । বেশ আছি । এবার যদি আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়, আমি মুশকিলে পরে যাব । আমি বেরোতেই পারব না । আমি বাড়িতে বেশ ভালো আছি । সবটাই এখন গা সওয়া হয়ে গেছে। "
প্রবীরবাবু থাকেন মধ্যমগ্রামে । সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, "আমার বাড়ির সামনে যখন-তখন দেখি লোকজন চলছে । আমাদের এখনকার পুকুরপারে আড্ডা চলছে । আবার কিছু লোক আছে মুখোশ পরে ঘুরছে । লোকজন সতর্ক বলে মনে হয় না । তবে মেইন রোডের লোকজন অ্যালার্ট । সেখানে পুলিশ রয়েছে । কিন্তু এই ভিতরের রাস্তাগুলো একদম যাচ্ছেতাই অবস্থা । শিক্ষিত মানুষও ঘুরে বেড়াচ্ছে ।"
এই লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রবীরবাবুর বেশকিছু নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল । যাওয়ার কথা ছিল বিদেশেও । প্রবীরবাবু বলেন, "আর বলবেন না, আমার 5 টা নাটক ক্যান্সেল হয়ে গেল । রাজ্য, রাজ্যের বাইরে, আমার নিজের ওয়ার্কশপ ক্যান্সেল হয়েছে । একটা বিদেশযাত্রাও ছিল তার মধ্যে, মঙ্গোলিয়াতে যাওয়ার কথা ছিল । সেখানে ১০ দিনের ওয়ার্কশপ করানোর ছিল, আর ৭ দিনের একটা ফেস্টিভ্যালের জুরি হওয়ার কথা ছিল । সেটা খুব বড় কাজ ছিল । আমার খুবই মন খারাপ । কাজ গেলে কাজ আসবে, কিন্তু কী যে পরিস্থিতি হবে, সেটাই বলা যাচ্ছে না ।"
তবে যেকোনও শিল্পী অবসরেও শিল্প সৃষ্টি করেন । প্রবীরবাবুও এর ব্যতিক্রম নন । তাঁর বাড়িতে একটি লাইব্রেরি রয়েছে, সেখানেই কাটছে তাঁর সময় । বললেন, "প্রথমদিকে পড়তে বসতে চাইছিলাম না । একদম ইচ্ছে করছিল না । তারপর একটা অনুরোধের লেখা লিখতে গিয়ে মন বসে গেল । সাড়ে তিনদিনে বিকল্প থিয়েটার নিয়ে লেখাটা শেষ করলাম । তারপর থেকে আমার লাইব্রেরি থেকে বেরোতে ইচ্ছে করছে না ।" কয়েকদিন ধরে তিতাস রিভিসিটেড লিখছিলেন প্রবীরবাবু । সেটাও শেষ করলেন গতকাল । নামটা দেবেন হয়তো 'তিতাস একটি নদীর নাম - দ্বিতীয় পর্ব', জানালেন নিজেই ।
এছাড়াও, বাসন মাজার কাজে দক্ষতা অর্জন করেছেন প্রবীরবাবু । বললেন, "বাড়ির অনেক কাজ করছি এই সময় । আমরা বাড়িতে থাকি সাড়ে চারজন মানুষ । অর্থাৎ, আমি, আমার স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ এবং তাঁদের পুচকি সন্তান । সবাই মিলে আমরা বাড়ির কাজ করছি । এর মধ্যে বাসন মজাটা খুব সুন্দর শিখে গেছি । তারপর রাতে ডিনারের রান্নাটা আমি করি । কোনওদিন চিকেন, কোনওদিন পটল-পোস্ত, কোনওদিন ডিম কারি, সোয়াবিন, নানারকম।"
সুস্থ থাকুন প্রবীরবাবু, কামনা করে ETV ভারত সিতারা ।