কলকাতা : নাট্যকর্মী শুভঙ্কর দাশশর্মার উপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল সন্ধ্যায় একটি সভার আয়োজন করেছিলেন নাট্যকর্মীরা । এই প্রতিবাদ সভাটি হয় দমদম স্টেশন চত্বরে । নিজেদের বক্তব্য রেখে, গান গেয়ে হামলার প্রতিবাদ করেন নাট্যকর্মীরা ।
15 অগাস্ট অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস চত্বরে একটি পথনাটকের আয়োজন করা হয় । উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুভঙ্কর দাশশর্মা । তাঁকে এখনকার বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত করে নাট্যজগৎ । অভিযোগ, সেদিনের অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার সময় দমদম স্টেশনের কাছে তাঁর উপর হামলা চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী । চোখে বাম লাগিয়ে তাঁকে মারধর করা হয় । ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সভা করে নাট্যকর্মীরা ।
নাট্যব্যক্তিত্ব জয়রাজ ভট্টাচার্য বলেন, "শুভঙ্কর কিন্তু নাটক করতে গিয়ে মার খায়নি । ওকে চিহ্নিত করে পরে মারা হয়েছে । নাটকটা হয়েছে অ্যাকাডেমি চত্বরে । শুভঙ্কর সেদিন নাটকে পারফর্ম করেনি । ও অর্গানাইজার ছিল । শুভঙ্কর নিজে নাটক করে, নাটক লেখে । একজন নাট্যকারও । শুভঙ্কর সেদিন অ্যাকাডেমি থেকে নাটক করে বাড়ি ফিরছিল । প্রথমে মেট্রো করে দমদম যায় । ওর বাড়ি শ্যামনগরে । দমদম থেকে মেট্রো করে আবার শ্যামনগরে যাওয়ার কথা ছিল । দমদম স্টেশন চত্বরে পৌঁছয় । শুভঙ্করের সঙ্গে দলের আরও অনেকে ছিল । শুভঙ্করকে আলাদা করে চিহ্নিত করে নিয়ে যায় কিছু লোক । তারপর মারে ।"
তিনি আরও বলেন, "এটা অনেকদিন ধরে প্ল্যান করে করা হয়েছে । নাট্যজগতে শুভঙ্কর খুব চেনা মুখ । কলকাতা শহর এবং মফস্বলে থিয়েটার চর্চা এবং মূলত রাজনৈতিক থিয়েটার চর্চায় শুভঙ্কর অত্যন্ত পরিচিত । যখনই কোনও অন্যায় ঘটেছে, শুভঙ্কর কিন্তু রুখে দাঁড়িয়েছে । প্রতিবাদে সরব হয়েছে । ১৫ আগস্ট যে অনুষ্ঠানের জন্য শুভঙ্কর এসেছিল সেটা ছিল ভারতবর্ষের সাম্প্রদায়িক অবস্থার প্রশ্নে । সেখানে দাঁড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আবেদন এবং বাধার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়ে সেই অনুষ্ঠানটি ছিল । শুধু আর্টিস্ট হিসেবে নয়, এই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিল শুভঙ্কর । এটা আর্টিস্ট ইউনাইটের অনুষ্ঠান ছিল এবং সেই আর্টিস্টিক ইউনাইটের অন্যতম সদস্য শুভঙ্কর । ধারাবাহিকভাবে যেহেতু বিভিন্ন ঘটনার জন্য শুভঙ্কর প্রতিবাদ জানিয়েছে, তাই ওকে চিহ্নিত করে রেখেছিল । এবং চিহ্নিত করেই শুভঙ্করকে মেরেছে । এটা আশঙ্কার কারণ এই জন্যেই, যে শুভঙ্করকে যেভাবে মারা হচ্ছে, বোঝাই যাচ্ছে যে তারা আরও অনেককে নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করে রেখেছে । এটা শুধু একা শুভংকরের প্রশ্ন নয় ।"