কলকাতা : ঘটনাটা আসলে কী? বিস্তারে জেনে নেওয়া যাক...
পাপিয়া অধিকারী আমাদের জানান যে, পরিচালক সুব্রতরঞ্জন দত্ত বেশ কয়েকটি ছবিতে সহ-পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন একসময়। বানিয়েছিলেন দুটি ছবিও। কিন্তু অর্থাভাবে পরিচালনার কাজকে একপ্রকার ত্যাগ করেই তিনি সিকিউরিটি গার্ডের কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। খবরটি জনসমক্ষে আসার পর বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই এগিয়ে আসেন। তার মধ্যে অন্যতম একটি নতুন প্রযোজনা সংস্থা। আবার ছবি বানাতে শুরু করেন সুব্রতরঞ্জন। পছন্দের অভিনেতা ঋত্বিকের কাছে চলে যান ছবির প্রস্তাব নিয়ে। প্রথমে সেই কাজটি করতে রাজিও হয়ে যান ঋত্বিক। তবে সবটাই মৌখিক। ঋত্বিক বলেন নভেম্বরে তিনি ডেট দেবেন। ঋত্বিকের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েই একপ্রকার কাজটি নিয়ে এগোতে শুরু করেন সুব্রতরঞ্জন। প্রযোজকের থেকে আগাম টাকাও পেয়ে যান।
পাপিয়া আরও জানান যে, পরে যখন ঋত্বিকের সঙ্গে সুব্রতবাবু যোগাযোগ করতে যান, ঋত্বিক অসম্ভব দুর্ব্যবহার করেন তাঁর সঙ্গে। ঋত্বিক প্রথমে সুব্রতবাবুকে চিনতে অস্বীকার করেন। তারপর বলেন তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গেলে 2021 সাল পর্যন্ত নাকি অপেক্ষা করতে হবে সুব্রতবাবুকে। ঋত্বিকের নাকি অনেক নামী পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার কথা হয়ে রয়েছে। আর সেই কারণে তিনি এখনই কোনও অনামী পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে চান না।
সুব্রতবঞ্জনের সঙ্গে পাপিয়া ঋত্বিকের এই আচরণকে তীব্রভাবে নিন্দা করেছেন অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী। তিনি বলেছেন, "ঋত্বিক তো বুঝতে পারছে না, সবাই ছোটো থাকে। কৌশিকের সঙ্গে কাজ করছে। ওঁর প্রথম ছবির রিভিউ আমি করেছিলাম। সবাই একদিন ছোটো থাকে। তারপর বড় হয়। কে বড় পরিচালক, সেটা ঋত্বিক বিচার করবে ? কে বড় পরিচালক, সেটা তো দর্শকই বলবে। বড় পরিচালকের পরপর দুটো ছবি যদি ফ্লপ করে, সে কি আর বড় থাকবে? তাহলে ঋত্বিক যদি এই কথা বলে বলে থাকে, খুব ভুল করেছে। সবার উপরে কিন্তু ডিরেক্টর। তিনি ক্যাপ্টেন অফ দ্য শিপ। তাকে যদি আমি না মানি, জাহাজটা ডুবে যাবে!"ক্ষোভ উগরে দিয়ে পাপিয়া আরও বলেন, "ঋত্বিক যদি এই কথা বলে থাকে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ করছি। আমার সমস্ত সহানুভূতি সুব্রতদার জন্য রয়েছে। এই ধরনের কথা ঋত্বিক বলতে পারে না যে, আমি বড় নামী পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করছি এবং আপনার মতো ছোটো পরিচালকদের জন্য আমার সময় নেই। আজ যদি সন্দীপ রায় আসে ওঁর সময় থাকবে, এবং সুব্রতদা ডেকেছে বলে সময় থাকবে না, এই জিনিসটা বাংলা ছবিতে বলাই উচিত না। বাংলা অনেক সহানুভূতির জায়গা!"ঋত্বিকের এই আচরণ দেখে সুব্রতরঞ্জন যোগাযোগ করেছিলেন পাপিয়া অধিকারীর সঙ্গে। পাপিয়া বললেন, "সুব্রতদা কাঁদছিলেন ফোনে। বলছিলেন পাপিয়া আমি কি এতই ছোটো? আমি তো অনেকের সঙ্গে কাজ করেছি। এইটুকু ছেলে আমাকে কীভাবে অপমান করে?"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রসঙ্গ টেনে পাপিয়া বলেন, "আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো চা বিক্রি করতেন। তিনি আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী। সুব্রতদা প্রহরীর কাজ করেছেন বলে তিনি কমদামী পরিচালক? বলে দেবে আপনার কাজ আমি করতে পারব না? আমার জন্য ২০২১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন...! একজন ভালো মানুষ, অসহায়, বৃদ্ধ মানুষের সঙ্গে এই আচরণ আমি মেনে নিতে পারছি না! ঋত্বিককে ঈশ্বর ক্ষমা করবে না। এতদিন ঈশ্বর তাঁকে সহায়তা করেছে। আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, এই কথা যদি ঋত্বিক বলে থাকে, ওঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। না হলে ঈশ্বর ক্ষমা করবেন না। আর ওঁর সমস্ত ফ্যান ফলোয়ার কমে যাবে।"
ETV ভারত সিতারার পক্ষ থেকে ঋত্বিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।