ETV Bharat / sitara

লড়াইটা হেরে গেলেন ক্ষিদদা, স্মৃতিচারণায় 'কোনি'

author img

By

Published : Nov 15, 2020, 2:22 PM IST

কোনি ছবির জন্য নির্বাচনে শেষ কথা বলেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । এর জন্য শ্রীপর্ণার বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি ।

sriparna mukherjee in remembrance of late soumitra chatterjee
সৌমিত্রর স্মৃতিচারণায় শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা, 15 নভেম্বর : 40 দিনের লড়াই শেষ । তাঁর জীবনের শেষযুদ্ধ জিততে পারলেন না ক্ষিদদা । সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে এভাবেই স্মৃতির সরণিতে হাঁটলেন শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায় । "কোনি"-তে সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি ।

বেশ কয়েকদিন ধরেই সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় । 6 অক্টোবর থেকে তিনি দক্ষিণ কলকাতার হাসপাতালে ভরতি ছিলেন । গতকাল রাত থেকে অবস্থা আরও সংকটজনক হয় । "তবে মিরাকেলের আশায় ছিলাম । কিন্তু সব শেষ । লড়াইটা হেরে গেলেন ক্ষিদদা, ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি ।"এভাবেই প্রতিক্রিয়া দিলেন শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায় । এরপরই তিনি বলেন,"ফাইট কোনি ফাইট এই ডায়ালগটি বিখ্যাত । তবে বাস্তব জীবনে তিনি কতটা ফাইটার ছিলেন তা জানতাম না । কারণ সেই ঘনিষ্ঠতা ছিল না । দু'বছর আমাদের দেখা হয়েছিল । তার নিরিখে বলতে পারি নিজের কাজের জায়গায় সৌমিত্রবাবু ছিলেন ডিসিপ্লিন, আবেগপ্রবণ । সেই প্রেক্ষাপটে বলা যায়, ওনার মধ্যে শেখার অনেক কিছু ছিল ।"

নস্টালজিক শ্রীপর্ণা বলেন, "কাজ করার সময় নিজেকে সবকিছুর থেকে আলাদা করার মানসিকতা ছিল ওনার মধ্যে । আমি একজন বড় অভিনেতা । অন্যরা যা করুক, আমি নিজের গণ্ডির মধ্যে আটকে থাকব । এই ব্যাপারটি ওনার মধ্যে ছিল না । আমরা ওনাকে সেভাবে দেখিনি । কাজটা ভালো করার জন্য সবার সঙ্গে মিশতেন । ভালো কাজ করার জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে রাজি ছিলেন । সেটে সহকর্মীদের সহজ করে নেওয়ার একটা সহজাত ব্যাপার ছিল ওনার মধ্যে ।" অভিনেতার এই সহজ করে নেওয়ার প্রবণতা তাঁদের মতো মানুষদের জন্য সুবিধা করে দিয়েছিল বলে জানান শ্রীপর্ণা । বলেন, "আমাদের সুবিধা যাতে হয় সেই বিষয়টি অলক্ষ্যে মাথায় রাখতেন । উনি যে ধরনের পেশাদার অভিনেতা তার পক্ষে এই সব না করলেও হত। তবু তিনি তা করেছিলেন" ।

কোনি ছবির জন্য নির্বাচন করার শেষ সিলমোহরটা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় দিয়েছিলেন । স্মৃতিচারণায় শ্রীপর্ণা বলেন, "আমাদের বাড়িতে গেছিলেন তিনি । পরিচালক সরোজ দে, চিত্রনাট্য লিখেছিলেন জয়ন্ত ভট্টাচার্য । চিত্রনাট্যকারই আমাকে প্রথম পছন্দ করেছিলেন । পরিচালকের ভাবনার সঙ্গে আমার চেহারা মেলেনি । তারপর দেড় বছর অনেক খোঁজাখুজির পর ফের আমাদের বাড়ি আসেন তাঁরা । সঙ্গে ছিল ক্যামেরা । আমার বাড়ি থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করা হয়েছিল । দেখেছিলাম উনি ফোন পেয়ে চলে এসেছিলেন । একজন অপরিচিত মানুষের বাড়িতে চলে আসলেন । সেই সময় তিনি একনম্বর অভিনেতা । অথচ অভিনয়ের তাগিদ তাঁকে টেনে নিয়ে এসেছিল । যা আমার কাছে প্রথম শিক্ষনীয় ।" ছবিতে অভিনয় করার সময় বেশিরভাগ মহিলা চরিত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন । তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সময় গল্পের নির্যাস সম্পর্কে সহ অভিনেতার ধারণা বুঝতে চাইতেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ।

সেই সময় ইন্ডিয়ান লাইফ সেভিং সোসাইটিতে কোচ ছিলেন অনিল দাশগুপ্ত । তাঁর সঙ্গে ক্ষিদদা মিল ছিল । এটা শোনার প‍র ভোরবেলা ঢাকুরিয়া লেকে বসে থেকে অনিলবাবুর কোচিং পদ্ধতি দেখতেন । পরে ছবিতে সেই আদবকায়দা তুলে ধরেন । কোচিং করানোর সময় কোচের আত্মস্থ হয়ে পড়ার অভিব্যক্তি তুলে ধরেছিলেন । পরবর্তী সময়ে লেকের রোয়িং ক্লাবের অনুষ্ঠানে শ্রীপর্ণার সঙ্গে বহুবার দেখা হয়েছে সৌমিত্রর । প্রতিবার তাঁকে বহুদিনের পরিচিত বলে আপন করে নেওয়া আচরণ ক্ষিদদার । যা চির বিদায়ের খবরে বারবার মনে পড়ছে শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায়ের । অভিযান শেষ । বর্ষীয়ান অভিনেতার থেকে শিক্ষার পাঠ জীবনে কাজে লাগানোর কথা কোনির মুখে ।

কলকাতা, 15 নভেম্বর : 40 দিনের লড়াই শেষ । তাঁর জীবনের শেষযুদ্ধ জিততে পারলেন না ক্ষিদদা । সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে এভাবেই স্মৃতির সরণিতে হাঁটলেন শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায় । "কোনি"-তে সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি ।

বেশ কয়েকদিন ধরেই সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় । 6 অক্টোবর থেকে তিনি দক্ষিণ কলকাতার হাসপাতালে ভরতি ছিলেন । গতকাল রাত থেকে অবস্থা আরও সংকটজনক হয় । "তবে মিরাকেলের আশায় ছিলাম । কিন্তু সব শেষ । লড়াইটা হেরে গেলেন ক্ষিদদা, ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি ।"এভাবেই প্রতিক্রিয়া দিলেন শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায় । এরপরই তিনি বলেন,"ফাইট কোনি ফাইট এই ডায়ালগটি বিখ্যাত । তবে বাস্তব জীবনে তিনি কতটা ফাইটার ছিলেন তা জানতাম না । কারণ সেই ঘনিষ্ঠতা ছিল না । দু'বছর আমাদের দেখা হয়েছিল । তার নিরিখে বলতে পারি নিজের কাজের জায়গায় সৌমিত্রবাবু ছিলেন ডিসিপ্লিন, আবেগপ্রবণ । সেই প্রেক্ষাপটে বলা যায়, ওনার মধ্যে শেখার অনেক কিছু ছিল ।"

নস্টালজিক শ্রীপর্ণা বলেন, "কাজ করার সময় নিজেকে সবকিছুর থেকে আলাদা করার মানসিকতা ছিল ওনার মধ্যে । আমি একজন বড় অভিনেতা । অন্যরা যা করুক, আমি নিজের গণ্ডির মধ্যে আটকে থাকব । এই ব্যাপারটি ওনার মধ্যে ছিল না । আমরা ওনাকে সেভাবে দেখিনি । কাজটা ভালো করার জন্য সবার সঙ্গে মিশতেন । ভালো কাজ করার জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে রাজি ছিলেন । সেটে সহকর্মীদের সহজ করে নেওয়ার একটা সহজাত ব্যাপার ছিল ওনার মধ্যে ।" অভিনেতার এই সহজ করে নেওয়ার প্রবণতা তাঁদের মতো মানুষদের জন্য সুবিধা করে দিয়েছিল বলে জানান শ্রীপর্ণা । বলেন, "আমাদের সুবিধা যাতে হয় সেই বিষয়টি অলক্ষ্যে মাথায় রাখতেন । উনি যে ধরনের পেশাদার অভিনেতা তার পক্ষে এই সব না করলেও হত। তবু তিনি তা করেছিলেন" ।

কোনি ছবির জন্য নির্বাচন করার শেষ সিলমোহরটা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় দিয়েছিলেন । স্মৃতিচারণায় শ্রীপর্ণা বলেন, "আমাদের বাড়িতে গেছিলেন তিনি । পরিচালক সরোজ দে, চিত্রনাট্য লিখেছিলেন জয়ন্ত ভট্টাচার্য । চিত্রনাট্যকারই আমাকে প্রথম পছন্দ করেছিলেন । পরিচালকের ভাবনার সঙ্গে আমার চেহারা মেলেনি । তারপর দেড় বছর অনেক খোঁজাখুজির পর ফের আমাদের বাড়ি আসেন তাঁরা । সঙ্গে ছিল ক্যামেরা । আমার বাড়ি থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করা হয়েছিল । দেখেছিলাম উনি ফোন পেয়ে চলে এসেছিলেন । একজন অপরিচিত মানুষের বাড়িতে চলে আসলেন । সেই সময় তিনি একনম্বর অভিনেতা । অথচ অভিনয়ের তাগিদ তাঁকে টেনে নিয়ে এসেছিল । যা আমার কাছে প্রথম শিক্ষনীয় ।" ছবিতে অভিনয় করার সময় বেশিরভাগ মহিলা চরিত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন । তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সময় গল্পের নির্যাস সম্পর্কে সহ অভিনেতার ধারণা বুঝতে চাইতেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ।

সেই সময় ইন্ডিয়ান লাইফ সেভিং সোসাইটিতে কোচ ছিলেন অনিল দাশগুপ্ত । তাঁর সঙ্গে ক্ষিদদা মিল ছিল । এটা শোনার প‍র ভোরবেলা ঢাকুরিয়া লেকে বসে থেকে অনিলবাবুর কোচিং পদ্ধতি দেখতেন । পরে ছবিতে সেই আদবকায়দা তুলে ধরেন । কোচিং করানোর সময় কোচের আত্মস্থ হয়ে পড়ার অভিব্যক্তি তুলে ধরেছিলেন । পরবর্তী সময়ে লেকের রোয়িং ক্লাবের অনুষ্ঠানে শ্রীপর্ণার সঙ্গে বহুবার দেখা হয়েছে সৌমিত্রর । প্রতিবার তাঁকে বহুদিনের পরিচিত বলে আপন করে নেওয়া আচরণ ক্ষিদদার । যা চির বিদায়ের খবরে বারবার মনে পড়ছে শ্রীপর্ণা মুখোপাধ্যায়ের । অভিযান শেষ । বর্ষীয়ান অভিনেতার থেকে শিক্ষার পাঠ জীবনে কাজে লাগানোর কথা কোনির মুখে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.