ETV Bharat / sitara

SD Burman Birthday: কিশোরের গানের রেকর্ডিং ছিল, তাই হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি শচীন কর্তা - কিশোর কুমার

আজ শচীন দেববর্মনের (SD Burman Birthday) 115তম জন্মবার্ষিকী ৷ তাঁর সারাটা জীবনজুড়ে ছিল গান ৷ শেষ সময়েও গানের জন্য নিজের শরীরেরও পরোয়া করেননি কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক ৷

SD Burman Birthday: Critically ill Sachin Dev Burman refused to go to hospital as Kishore Kumar was to record Badi Sooni Sooni Hai from Mili
রেকর্ড করাতে হত কিশোরের গান, তাই হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি এসডি বর্মন
author img

By

Published : Oct 1, 2021, 6:05 PM IST

কলকাতা, 1 অক্টোবর : তিনি সঙ্গীতের জগতে একটা প্রতিষ্ঠান ৷ কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক ৷ তাঁর সুরের জাদুতে মোহিত হয়ে যায় বর্তমান প্রজন্মও ৷ শচীন দেববর্মন (SD Burman Birthday) ৷ আজ তাঁর 115তম জন্মবার্ষিকী ৷ আজও তিনি সমান প্রাসঙ্গিক ৷ গানের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ও ভালোবাসার নানা নিদর্শন নানা সময়ে শ্রোতাদের সামনে এসেছে ৷ আজকের বিশেষ দিনে সে রকমই একটি তথ্য তুলে ধরব ৷

বাজি, সিআইডি, পেয়াসা, গাইড-সহ নানা ফিল্মে তাঁর তৈরি গান হিন্দি মুভির স্বর্ণযুগের সাক্ষী ৷ তাঁর সুরের সেই এভারগ্রিন গান আজও গুনগুন করেন সঙ্গীতপ্রেমীরা ৷ সঙ্গীতের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন শচীন দেববর্মন ৷ মৃত্যুপথযাত্রী হয়েও তিনি জড়িয়ে রেখেছিলেন গানকেই ৷ তাঁর জীবনের শেষ কম্পোজিসন মিলির সুর শুনতে শুনতেই চিরঘুমের দেশে চলে যান এসডি বর্মন ৷

1975 সালে হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ফিল্ম মিলির গান রেকর্ড করেন তিনি ৷ একদিন তিনি ওই ফিল্মেরই অত্যন্ত জনপ্রিয় গান কিশোর কুমারের (Kishore Kumar) 'বড়ি সুনি সুনি হ্যায়' (Badi Sooni Sooni Hai)-এর মহড়ায় ছিলেন ৷ তখনই তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তড়িঘড়ি এসডি বর্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় ৷ সেই দিনটির কথা স্মরণ করে একবার ঘটনার বিবরণী দিয়েছিলেন কিশোর কুমার ৷

এক রেডিয়ো অনুষ্ঠানে তিনি জানান, মহড়া চলাকালীনই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন শচীন দাদা ৷ গায়কের কথায়, "আমি মহড়া দিচ্ছিলাম ৷ কিন্তু তাঁর চোখটা কেমন খালি হয়ে আসছিল ৷ তিনি শান্তভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন এবং গানটা শুনে যাচ্ছিলেন ৷" মহড়া শেষ হওয়ার পর কিশোর এসডির বাড়ি থেকে চলে যান ৷ এর মিনিট 20-25 পরই মাটিতে পড়ে যান সঙ্গীত পরিচালক ৷ তড়িঘড়ি ডাক্তারকে ডাকা হয় ৷ তিনি এসডিকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন ৷ কিন্তু এসডি সাহেব নাকি তখন হাসপাতালে যেতে রাজি হননি ৷

আরও পড়ুন: Kolkata Chalantika : পাভেলের নতুন ছবি 'কলকাতা চলন্তিকা'

কিশোর কুমারের কথায়, "তিনি তখনও বলছেন, তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন না ৷ কারণ আগামিকাল কিশোরকে এই গানটি রেকর্ড করতে হবে ৷ তিনি ডাক্তারবাবুকে বলেন, 'একবার গানটার রেকর্ডিং হয়ে যাক, তারপর আপনি আমাকে যেখানে খুশি নিয়ে যেতে পারেন..'৷"

এই কথা শুনে এসডি বর্মনের ছেলে রাহুল দেববর্মন নাকি কিশোর কুমারের বাড়িতে ছুটে যান ৷ তাঁকে পঞ্চমদা বলেন, "কিশোর এখনই চল ৷ বাবাকে বোঝাও ৷ রেকর্ডিং পরেও হতে পারে ৷" এরপর শচীন দেববর্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য কিছুটা নাটক করতে হয় কিশোর কুমারকে ৷ তিনি ভাঙা ভাঙা গলায় বলেন, "দাদা, শুনুন আমার গলার অবস্থা এখন ঠিক নেই ৷ রেকর্ডিংটা কয়েকদিন পিছিয়ে দিন ৷ আপনি এখন হাসপাতালে যান ৷ আপনি ফিরতে ফিরতে আমার গলাও ঠিক হয়ে যাবে ৷ তখন আমরা রেকর্ড করব ৷" তখন পারফেকশনিস্ট এসডি তাঁকে বলেছিলেন, "কিশোর, গানটা ভাল হওয়া চাই ৷ যখন তোমার গলা ঠিক হবে, তখনই এই গানের রেকর্ড কর ৷ আর আমি যদি রেকর্ডিংয়ে আসতে না-পারি, তাহলে মনে করবে যে আমি তোমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছি ৷ আমি যে ভাবে তোমাকে গানটা গাওয়াতে চেয়েছিলাম, সে ভাবেই গাইবে ৷"

আরও পড়ুন : Prosenjit Chatterjee: বুম্বাদার জন্মদিনে বহরমপুরের বাড়িতে কেক কাটতেন ঐন্দ্রিলা

কিশোর দুঃখের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, "শচীন দাদা এরপর হাসপাতালে গেলেন ৷ আর যেটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল তাই হল ৷ তিনি আর রেকর্ডিংয়ে আসতে পারেননি ৷ তাঁর কথা মেনেই গানটি রেকর্ড করি, মনে মনে ভেবে নিই যে দাদা আমার সামনেই আছেন ৷" সেই রেকর্ডিং-এর টেপ পঞ্চমদা তাঁর বাবাকে শোনাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ গানটি শুনে চোখে জল চলে আসে এসডি সাহেবের ৷ তিনি নাকি বলেছিলেন, "পঞ্চম, আমি জানতাম ৷ কিশোর এ ভাবেই গানটা গাইবে ৷" সেই গান শোনার কিছু পরেই কোমায় চলে যান শচীন দেববর্মন ৷ এরপর সে বছরই 31 অক্টোবর 69 বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ৷

আরও পড়ুন : Raj Subhashree: মালদ্বীপে রাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিয়ো পোস্ট শুভশ্রীর

কলকাতা, 1 অক্টোবর : তিনি সঙ্গীতের জগতে একটা প্রতিষ্ঠান ৷ কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক ৷ তাঁর সুরের জাদুতে মোহিত হয়ে যায় বর্তমান প্রজন্মও ৷ শচীন দেববর্মন (SD Burman Birthday) ৷ আজ তাঁর 115তম জন্মবার্ষিকী ৷ আজও তিনি সমান প্রাসঙ্গিক ৷ গানের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ও ভালোবাসার নানা নিদর্শন নানা সময়ে শ্রোতাদের সামনে এসেছে ৷ আজকের বিশেষ দিনে সে রকমই একটি তথ্য তুলে ধরব ৷

বাজি, সিআইডি, পেয়াসা, গাইড-সহ নানা ফিল্মে তাঁর তৈরি গান হিন্দি মুভির স্বর্ণযুগের সাক্ষী ৷ তাঁর সুরের সেই এভারগ্রিন গান আজও গুনগুন করেন সঙ্গীতপ্রেমীরা ৷ সঙ্গীতের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন শচীন দেববর্মন ৷ মৃত্যুপথযাত্রী হয়েও তিনি জড়িয়ে রেখেছিলেন গানকেই ৷ তাঁর জীবনের শেষ কম্পোজিসন মিলির সুর শুনতে শুনতেই চিরঘুমের দেশে চলে যান এসডি বর্মন ৷

1975 সালে হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ফিল্ম মিলির গান রেকর্ড করেন তিনি ৷ একদিন তিনি ওই ফিল্মেরই অত্যন্ত জনপ্রিয় গান কিশোর কুমারের (Kishore Kumar) 'বড়ি সুনি সুনি হ্যায়' (Badi Sooni Sooni Hai)-এর মহড়ায় ছিলেন ৷ তখনই তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তড়িঘড়ি এসডি বর্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় ৷ সেই দিনটির কথা স্মরণ করে একবার ঘটনার বিবরণী দিয়েছিলেন কিশোর কুমার ৷

এক রেডিয়ো অনুষ্ঠানে তিনি জানান, মহড়া চলাকালীনই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন শচীন দাদা ৷ গায়কের কথায়, "আমি মহড়া দিচ্ছিলাম ৷ কিন্তু তাঁর চোখটা কেমন খালি হয়ে আসছিল ৷ তিনি শান্তভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন এবং গানটা শুনে যাচ্ছিলেন ৷" মহড়া শেষ হওয়ার পর কিশোর এসডির বাড়ি থেকে চলে যান ৷ এর মিনিট 20-25 পরই মাটিতে পড়ে যান সঙ্গীত পরিচালক ৷ তড়িঘড়ি ডাক্তারকে ডাকা হয় ৷ তিনি এসডিকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন ৷ কিন্তু এসডি সাহেব নাকি তখন হাসপাতালে যেতে রাজি হননি ৷

আরও পড়ুন: Kolkata Chalantika : পাভেলের নতুন ছবি 'কলকাতা চলন্তিকা'

কিশোর কুমারের কথায়, "তিনি তখনও বলছেন, তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন না ৷ কারণ আগামিকাল কিশোরকে এই গানটি রেকর্ড করতে হবে ৷ তিনি ডাক্তারবাবুকে বলেন, 'একবার গানটার রেকর্ডিং হয়ে যাক, তারপর আপনি আমাকে যেখানে খুশি নিয়ে যেতে পারেন..'৷"

এই কথা শুনে এসডি বর্মনের ছেলে রাহুল দেববর্মন নাকি কিশোর কুমারের বাড়িতে ছুটে যান ৷ তাঁকে পঞ্চমদা বলেন, "কিশোর এখনই চল ৷ বাবাকে বোঝাও ৷ রেকর্ডিং পরেও হতে পারে ৷" এরপর শচীন দেববর্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য কিছুটা নাটক করতে হয় কিশোর কুমারকে ৷ তিনি ভাঙা ভাঙা গলায় বলেন, "দাদা, শুনুন আমার গলার অবস্থা এখন ঠিক নেই ৷ রেকর্ডিংটা কয়েকদিন পিছিয়ে দিন ৷ আপনি এখন হাসপাতালে যান ৷ আপনি ফিরতে ফিরতে আমার গলাও ঠিক হয়ে যাবে ৷ তখন আমরা রেকর্ড করব ৷" তখন পারফেকশনিস্ট এসডি তাঁকে বলেছিলেন, "কিশোর, গানটা ভাল হওয়া চাই ৷ যখন তোমার গলা ঠিক হবে, তখনই এই গানের রেকর্ড কর ৷ আর আমি যদি রেকর্ডিংয়ে আসতে না-পারি, তাহলে মনে করবে যে আমি তোমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছি ৷ আমি যে ভাবে তোমাকে গানটা গাওয়াতে চেয়েছিলাম, সে ভাবেই গাইবে ৷"

আরও পড়ুন : Prosenjit Chatterjee: বুম্বাদার জন্মদিনে বহরমপুরের বাড়িতে কেক কাটতেন ঐন্দ্রিলা

কিশোর দুঃখের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, "শচীন দাদা এরপর হাসপাতালে গেলেন ৷ আর যেটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল তাই হল ৷ তিনি আর রেকর্ডিংয়ে আসতে পারেননি ৷ তাঁর কথা মেনেই গানটি রেকর্ড করি, মনে মনে ভেবে নিই যে দাদা আমার সামনেই আছেন ৷" সেই রেকর্ডিং-এর টেপ পঞ্চমদা তাঁর বাবাকে শোনাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ গানটি শুনে চোখে জল চলে আসে এসডি সাহেবের ৷ তিনি নাকি বলেছিলেন, "পঞ্চম, আমি জানতাম ৷ কিশোর এ ভাবেই গানটা গাইবে ৷" সেই গান শোনার কিছু পরেই কোমায় চলে যান শচীন দেববর্মন ৷ এরপর সে বছরই 31 অক্টোবর 69 বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ৷

আরও পড়ুন : Raj Subhashree: মালদ্বীপে রাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিয়ো পোস্ট শুভশ্রীর

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.