কলকাতা, 5 মে: বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই ঘরে-বাইরে নানা সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ ৷ অভিনয় জগতের অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ৷ এ বার জনৈক যুবতি তাঁর বিরুদ্ধে এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন ৷ ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি বলেছেন, রুদ্রনীলের কুপ্রস্তাব না-মানায় তাঁর প্রোডাকশন হাউস থেকে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়েছিল ।
নীলাঞ্জনা পাণ্ডে নামে এক মহিলা ফেসবুকে লিখেছেন, "আমি যদি সত্যি কথা বলি, তাহলে বলব, আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি রুদ্রনীল ঘোষের হারে । কয়েক বছর আগে, রুদ্রনীলের কুপ্রস্তাব না-মানায় তাঁর প্রোডাকশন হাউস থেকে আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল । আমার প্রাপ্য টাকাও দেওয়া হয়নি । সে দিন ইন্ডাস্ট্রিতে নিউকামার ছিলাম । আজ প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন সে দিন বিচার চাইনি ? আসলে তখন ভয় পাইনি, কিন্তু বিচারের জন্য একজন নিউকামারকে কীভাবে এগোতে হবে জানতাম না । ঘৃণাবশতঃ রুদ্রর নোংরা মেসেজ মোবাইল থেকে ডিলিট করে দিয়েছিলাম । ফলে প্রমাণ ছিল না । আজও বিশ্বাস করি, ভগবানের মারে আওয়াজ হয় না । তাঁর বিচার খুব সুক্ষ্ম বিচার । সে দিন হয়তো রুদ্রনীল প্রভাব খাটিয়ে আদালতে আমাকে পরাজিত করত । কিন্তু আজ জনগণ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন । আজ রুদ্রনীল ঘোষ পরাজিত।"
এই পরাজয় দিয়েই বিজেপি নেতার পতনের শুরু বলে মত নীলাঞ্জনার ৷ তিনি লিখেছেন, "রুদ্রনীলের পতনের সবে শুরু হয়েছে । রুদ্রনীল যদি এই পোস্ট দেখে বা তাকে যদি আমার পরিচিত কেউ এই পোস্ট সম্পর্কে বলে, তাহলে আমিও শুনতে চাই রুদ্রনীল কীভাবে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সাফাই দেবে । এই পোস্টে আজ আমি কাউকে ট্যাগ করব না । শুধু জনগণ ও ঈশ্বরের উদ্দেশে ধন্যবাদ জানাব । তাঁরা ন্যায়বিচার করেছেন । রুদ্রনীল ঘোষ, তুমি হেরেছ বলে তোমার শহর হাওড়া গর্বিত, আনন্দিত । তোমার শহর হাওড়াও তোমাকে তার সন্তান বলতে ঘৃণা বোধ করে ।"
আরও পড়ুন: রুদ্রনীলকে ধান্দাবাজ বলে কটাক্ষ ভাস্বরের
রুদ্রনীল চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করতে পারেন, এ কথা বলে ওই যুবতি লিখেছেন, "একটি ছেলে কোনও মেয়েকে ধর্ষণ করে, কুপ্রস্তাব দিয়ে পুরুষ হয় না । তাঁকে নপুংসক বলা হয় । প্রকৃত পুরুষ সে, যে নারীত্বকে সম্মান প্রদর্শন করে । রুদ্রনীল, এই পোস্টের কথা জানার পর তুমি সাইবার ক্রাইম সেলে যাও, আমার বিরুদ্ধে মামলা করো, আমি সে সবের পরোয়া করি না । কিন্তু মনে রেখো, এই তোমার পতনের শুরু ।"
এ বিষয়ে রুদ্রনীলের প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি ৷ তবে রুদ্রনীলের ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, এই মেয়েটির সঙ্গে কোনদিনই অভিনেতা কোনও কাজ করেননি ৷ তৃণমূলই এ সব করাচ্ছে বলে অনুমান তাঁদের ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, রুদ্রনীল মনোকষ্টে ভুগছেন ৷ তাই এই বিষয়ে তিনি মাথা ঘামাতে চান না ৷
বাম ও তৃণমূল ঘুরে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা মহলে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রুদ্রনীল ঘোষকে ৷ সহ-অভিনেতা ছাড়াও অনেকের থেকেই তাঁকে পেতে হয়েছে ধান্দাবাজ ও সুবিধেবাদীর তকমা ৷ তবে এ বার তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠল তা অত্যন্ত গুরুতর ৷ তিনি এ বিষয়ে কী প্রতিক্রিয়া জানান, সেটাই এখন দেখার ৷