ইরফান খান আর ঋষি কাপুরের পরপর মৃত্যু এখনও মেনে নিতে পারেনি দেশের মানুষ । আর এরই মধ্যে এরও এক নক্ষত্রপতন । 1 জুন ভোর রাত্তিরে প্রয়াত জনপ্রিয় গায়ক-সুরকার ওয়াজিদ খান । সাজিদ-ওয়াজিদ, দুই ভাইয়ের এই জুটিকে চিরকালের জন্য ভেঙে চলে গেলেন ওয়াজিদ ।
উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে জন্মগ্রহণকারী ওয়াজিদ ছিলেন তবলাবাদক ওস্তাদ শরাফত হুসেন খানের ছেলে । বাবার সঙ্গে এক দারুণ সম্পর্ক ছিল ওয়াজিদের । বাবার মৃত্যুর পর অনেকদিন সেই শোক কাটাতে পারেননি তিনি । এমনকি সেই সময়ে সংগীতের দুনিয়া থেকে একটা ব্রেকও নিয়েছিলেন সাজিদ-ওয়াজিদ ।
![Wajid Khan latest news](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/97209247_110882327119603_7597603123816829460_n_0106newsroom_1590994509_39_0106newsroom_1590998376_527.jpg)
1998 সালে সলমন খানের 'পেয়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া' ছবিতে 'তেরি জওয়ানি মস্ত মস্ত হ্যায়' গানটি দিয়ে বলিউডে যাত্রা শুরু করেন । মাল্টি ট্যালেন্ডেড ওয়াজিদ যেমন তাক লাগানো সুর করতেন, ঠিক ততটাই আলাদা ছিল তাঁর কণ্ঠস্বর । গায়ক হিসেবে 'ডু ইউ ওয়ানা পার্টনার', 'সোনি দে নখরে', 'হুড় হুড় দবাং দবাং দবাং', বা 'চিন্তা তা চিতা'-র মতো একাধিক সুপারহিট গান দিয়েছেন ওয়াজিদ ।
ভালো মিউজ়িকের খোঁজে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াতেন ওয়াজিদ । তাঁকে বলতে শোনা যেত, "জীবনটা আনন্দের, উঠে পড় আর উপভোগ কর" । জীবন রসে পরিপূর্ণ মানুষটা আজ মুখ লুকিয়েছেন মৃত্যুর কোলে । তবে তাঁর গানগুলো আজও অমর । সেই সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে দিয়েই তিনি বেঁচে থাকবেন দর্শকের মধ্যে ।
এই লকডাউনের মধ্যেও থেমে থাকেনি সাজিদ-ওয়াজিদের সৃষ্টিশীলতা । সলমনের মিউজ়িক ভিডিয়ো 'পেয়ার করোনা' আর 'ভাই ভাই'-এই দুটোই কম্পোজ় করেছিলেন সুরকারদ্বয় ।
![Wajid Khan latest news](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/81566435_145029500263802_8379564380753735813_n_0106newsroom_1590994509_954_0106newsroom_1590998376_245.jpg)
মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রিতে বিশাল অবদানের সঙ্গে সঙ্গে ওয়াজিদ নাম লিখিয়েছিলেন পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করার তালিকাতে । সারেগামাপা 2012 আর সারেগামাপা সিঙ্গিং সুপারস্টার এই দুই রিয়েলিটি শোয়ে মেন্টর হিসেবে ছিলেন ওয়াজিদ ।
মিউজ়িক কম্পোজ়ার সেলিম মারচেন্ট PTI-কে জানিয়েছেন, "ওঁর অনেক সমস্যা ছিল । কিছুদিন আগে ওঁকে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে হয়েছিল । তারপরেও ওঁর কিডনিতে ইনফেকশন ধরা পড়ে । চারদিন ধরে ভেন্টিলেটরেই ছিল ও । তবে পরিস্থিতি ভালোর বদলে খারাপ হতে থাকে ।"
ওয়াজিদের এই আকস্মিক মৃত্যু ফিল্ম দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছে । বি-টাউনের একাধিক সদস্য সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছেন । প্রায় প্রত্যেকেই মেনে নিয়েছেন যে, ওয়াজিদের হাসিকে তাঁরা মনে রাখবেন ।
ETV ভারত সিতারাও ওয়াজিদ খানের আত্মার শান্তি কামনা করে ।