নিউইয়র্ক : নাসার কিউরিওসিটি মার্স রোভার লালগ্রহ মঙ্গলের মাটিতে নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ৷ এবং একাধিক নিত্য-নতুন তথ্য সরবরাহ করছে ৷
লস অ্যালামাস ল্যাবরেটরির অন্যতম বিজ্ঞানী-গবেষক রজার উইনস জানিয়েছেন, মঙ্গল অভিযানের প্রধান লক্ষ্য ছিল এই গ্রহের শুষ্ক ও শীতল আবহাওয়ার অতীত নিয়ে গবেষণা এবং বর্তমান পরিবেশ কতটা বাসযোগ্যে তা খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করা ৷
প্রায় তিন বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গলে শুষ্ক এবং ভেজা যুগ ছিল ৷ একটি নতুন গবেষণায় জানা গিয়েছে, লালগ্রহটি একসঙ্গে শুকিয়ে যায়নি ৷
উইনস জানিয়েছেন, গ্রহের পাথরের স্তরগুলি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে ৷ এবং পরিবর্তন রেকর্ড করা হয়েছে ৷
চেমক্যাম লেজার কিউরিওসিটি রোভারের এমন একটি যন্ত্রাংশ, যার মাধ্যমে শিলা এবং জলীয় বাষ্পের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হয় ৷ পাশাপাশি শিলার রাসায়নিক গঠন নিয়েও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে ৷
প্রকাশিত ভূ-বিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণা পত্রের নেতৃত্বে রয়েছেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের গবেষক উইলিয়াম রাপিন ৷
আরও পড়ুন : মঙ্গলের প্রথম অডিয়ো প্রকাশ নাসার, ভিডিয়ো এল পার্সির অবতরণের
চেমক্যামের দূরপাল্লার ক্যামেরায় ধরা পড়েছে মঙ্গলের জলবায়ুর ছবিটা ৷ যেখানে দেখা গিয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলের মাটি এবং পাথরের জলের অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে ৷ আস্তে আস্তে শুষ্কতার দিকে এগিয়ে চলেছে ৷ একই সঙ্গে জানিয়েছে, জন্মের পর থেকে লালগ্রহের বিভিন্ন সময়ে তরল, বরফ ও বাষ্পীভূত অবস্থায় কী পরিমাণে জল ছিল তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হয়েছে গবেষণায় । মঙ্গলের পিঠ ও বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক উপাদান কী কী আর তার পরিমাণ কীভাবে বদলেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খতিয়ে দেখা হয়েছে তাও ।
চেমক্যাম লালগ্রহের পৃষ্ঠটি সফলভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং প্রতিটি অবস্থার খুঁটিনাটি তথ্য পরিবেশন করেছে ৷ চেমক্যামের মাধ্যমে ধরা পড়েছে মঙ্গল গ্রহের স্তরগুলির পরিবর্তনের ছবিটা ৷
একই সঙ্গে ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, মঙ্গলের মাটিতে বেলেপাথরের স্তর কাঠামোর অবস্থান ৷ যেখানে বায়ুর দ্বারা টিলা তৈরি হয়েছে ৷ গবেষকরা বলছেন, এই ছবিটা প্রমাণ করে এখানে বহু দিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তন হয়েছে ৷
ক্যামেরায় মঙ্গলের আরও কিছু ছবি ধরা পড়েছে । দেখা গিয়েছে সেখানকার ভূমি উচ্চ, পাতলা এবং ভঙ্গুর-প্রতিরোধক্ষম । যে ছবিগুলো সহজেই জলের অবস্থান নির্দেশ করে ।
এইসব ছবি দেখেই বৈজ্ঞেনিক এবং গবেষকরা সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, মঙ্গল গ্রহের আবহাওয়া ভেজা এবং শুকনো দুই সময়ের মধ্যে দিয়েই চলাচল করেছে । গবেষকরা মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে ডিউটেরিয়াম ও হাইড্রোজেনের যে অনুপাত পেয়েছেন তা বুঝিয়ে দিচ্ছে উবে যাওয়ার ফলে লাল গ্রহ যেমন তার জলের ভাণ্ডারের কিছুটা কয়েকশো কোটি বছরে খুইয়েছে, তেমনই সেই জলের অনেকটা পিঠের নিচে থাকা বরফ ও পিঠে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থের মধ্যে ধরেও রেখেছে ।