কোরোনা পরিস্থিতিতে ভরসা বাড়ছে আয়ুর্বেদে ৷ তুলসি, গোলমরিচ, দারচিনি, এলাচ, এক টুকরো আদার মতো উপকরণে তৈরি পানীয় বাড়াতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ৷ তবে আয়ুর্বেদ হোক বা অন্য সাবেকি চিকিৎসা যে উপকরণটি ছাড়া সম্ভব না তা হল মধু ৷ কারণ, মধুর হাজারও গুণ ৷ এককালে ত্বকের রোগে, ক্ষত সারাতে দেওয়া হত মধুর প্রলেপ ৷ এমন ঔষধি গুণ তো আছেই ৷ আর এক কারণেও মধু অনন্য ৷
মধু কখনও নষ্ট হয় না ৷ যদি তাকে যত্ন করে উপযুক্ত পাত্রে রাখা যায় তবে তা অমর । হাজার বছরেও একইরকম গুণসম্পন্ন ৷ উপযুক্ত পাত্র বলতে বায়ুনিরোধক পাত্রে রাখলে ভালো থাকে মধু ৷ শুকনো জায়গায় সেই পাত্র রাখা উচিত ৷ মিশরে প্রত্নতাত্ত্বিকরা তিন হাজার বছরের পুরোনো মধু পেয়েছিলেন বলে জানা যায় ৷ সবচেয়ে বড় কথা, সেই মধু নষ্ট হয়নি । ভারতের মতোই প্রাচীন মিশরেও মধু ছিল চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ ৷ কিন্তু এই যে মধুর এক্সপায়ারি ডেট বলে কিছু হয় না তা কী করে সম্ভব?
এর পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ-
1) মধু আদতে এক ধরনের চিনি ৷ চিনির অণুর মধ্যে জলের পরিমাণ খুব কম থাকে ৷ ফলে তাকে যদি ঢাকনা দেওয়া পাত্রে রাখা হয় তবে তা দীর্ঘদিন একইরকম থাকবে ৷ অন্যদিকে যে কোনও খাদ্যবস্তুর মধ্যে জলের পরিমাণ বাড়া মানেই তা হল ব্যাকটেরিয়ার ঘর বাঁধার উপযুক্ত জায়গা ৷ জলীয় পদার্থের অভাব হলে যারা বাঁচে না ৷ এই কারণে মধুতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে না ৷
2) মধু অ্যাসিডিক পদার্থ ৷ কোনও অ্যাসিডিক পদার্থে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে না ৷
3) তৃতীয় কারণটির পিছনে রয়েছে স্বয়ং মধুর কারিগর ৷ মৌমাছি ৷ মৌচাকে মধু জমানোর সময় মৌমাছির ঝাঁকের পাখার ঝাপটায় জলীয় পদার্থ অনেকটাই শুকিয়ে যায় ৷
4) মধু তৈরির প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া তার দীর্ঘদিন ভালো থাকার অন্যতম কারণ ৷ জেনে রাখা ভালো, মধু আসলে মৌমাছির বমি ৷ ফুলের নির্যাস আর মৌমাছিদের পাকস্থলীর এনজাইম গ্লুকোজ় অক্সিডেজ় মিশেই তৈরি হয় গ্লুকোনিক অ্যাসিড ও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ৷ মধুতে এই দুই রাসনিক আছে বলেও বাসা বাঁধতে পারে না ব্যাকটেরিয়ার দল ৷