যেমন অদ্ভুত দর্শন প্রাণী, তেমনই তার অদ্ভুতুড়ে কাজ ৷ মাকড়সা ও তার জালের কথা হচ্ছে ৷ আট পায়ের প্রাণীটি বহু মানুষের ফোবিয়ার কারণ ৷ ঠিকই, তাকে দেখতে সুখকর নয় ৷ কিন্তু মাকড়সার জাল যে এ দুনিয়ার অন্যতম অনবদ্য কাণ্ড, তা অনুভব করতে বিজ্ঞানী হতে হয় না ৷ নানা আকৃতির সেই জটিল জাল কত না কাজে লাগে ! সকলের জানা স্পাইডার সিল্কের কথা ৷ প্রাচীনকাল থেকেই মাকড়সার জালের সুতোকে বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করে আসছে মানুষ ৷ তাই বলে মাকড়াসার সুতোর ব্যান্ডেজ ? চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা যার নাম রেখেছেন অ্যান্ডিবায়োটিক স্পাইডার সিল্ক ৷
এমনিতে গ্রিক ও রোমানদের যুদ্ধের ইতিহাসে মাকড়াসার জালের বিষহরি ক্ষমতার কথা রয়েছে ৷ সেকালে যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকত ৷ সৈন্যদের চোট আঘাত লাগাও ছিল নিয়মিত ঘটনা ৷ সেই ক্ষত যাতে দ্রুত শুকোয়, যাতে জলদি সেরে ওঠে সেনা, সে কথা ভেবেই মাকড়সার জালের তৈরি গজ ব্যবহার করা হত ৷ এতে না কি ওষুধের থেকেও তাড়াতাড়ি কাজ হত ৷ কিন্তু, কেন ?
সে কথা জানা ছিল না গ্রিক বা রোমানদের ৷ সাম্প্রতিক গবেষণায় যা স্পষ্ট হল ৷ জানা গিয়েছে, মাকড়সার জালে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন "কে" রয়েছে ৷ এই ভিটামিন দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধাতে সাহায্য করে ৷ এইসঙ্গে মাকড়সার জালে বেশ কিছু অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল গুণও রয়েছে ৷ চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, কেবল সাধারণ আঘাত সারিয়ে তোলাই নয়, লিগামেন্টের চোট সারিয়ে তুলতেও অব্যর্থ অ্যান্টিবায়োটিক মাকড়সা-ব্যান্ডেজ ! এমনকী অঙ্গ প্রতিস্থাপনেও কাজে আসতে পারে ৷ পরীক্ষামূলকভাবে চিকিৎসকরা যার ব্যবহার শুরু করে দিয়েছেন ৷ শুধু খেয়াল রাখতে হয় মাকড়সার জালটি যেন হয় পরিচ্ছন্ন ৷
বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি, মাকড়সার জালের কাছাকাছি যদি ব্ল্যাক উইডো পোকা থাকে তবে সেই জাল ব্যবহার করা বিপজ্জনক ৷ অন্যথা চোটের জায়গায় অ্যান্টিবায়োটিক স্পাইডার সিল্কের ব্যান্ডেজ বাঁধলে কাজ হবে দুর্দান্ত ৷ প্রাকৃতিক ব্যান্ডেজের পরেও থেমে নেই গবেষণা ৷ একদল গবেষকের মতে, মাকড়সার জাল ব্যবহার করে ভবিষ্যতে তৈরি হতে পারে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, জলনিরোধক (Water proof) জামা, প্যারাসুট, পরিবেশবান্ধব বোতল পর্যন্ত ৷